ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সবার জন্য বাসগৃহ

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ১০ মার্চ ২০২০

সবার জন্য বাসগৃহ

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের যুগসন্ধিক্ষণে বিভিন্ন কর্মদ্যোতনা সারাদেশ ও সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার এবং উন্নয়ন পরিকল্পনার এক মহোৎসব। অকারণে, অপ্রয়োজনে মুজিববর্ষে অর্থ অপচয় থেকে বিরত থাকতে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আহ্বান জানান। পাশাপাশি সাধারণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের মূল স্রোতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তৈরির প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তেমন ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী গৃহহীনদের খুঁজে বের করে তাদের জন্য গৃহায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করাও মুজিববর্ষকে সাদরে বরণ করার মতোই হবে। দেশের বিত্তবান, সম্পদশালী, ধনাঢ্য ব্যক্তিদেরও এ ব্যাপারে যথেষ্ট দায়বদ্ধতা রয়েছে। ইতোমধ্যে বর্তমান সরকার গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আবাসন কর্মযোগকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারপরেও সবাইকে এর আওতায় আনা যায়নি। তাদের খুঁজে বের করে সেইসব গৃহহীনকে বাড়ি করে দেয়ার ব্যাপারে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রয়োজনে সরকার ও বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট থেকে এমন মহৎ কাজের জন্য অর্থায়ন করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ইউনেস্কো ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্বের ৭টি ঐতিহ্যিক দলিলের অনন্য একটি হিসেবে অভিষিক্ত করেছে। ইতিহাসের সত্যনিষ্ঠ ঘটনাপ্রবাহকে ইতিহাসই তার দায়বদ্ধতায় সুরক্ষা দেয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বেলায় যেমনটা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর অবিস্মরণীয় বার্তায় বলেছিলেনÑ বাঙালীকে কেউই দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সেটা যেমন একদিন পাকিস্তানী জঙ্গী সামরিক গোষ্ঠী বুঝতে পারে, সময়ের দুরন্ত মিছিলে তা আবার বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদেরও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। পঁচাত্তর পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের সম্মান ও মর্যাদাকে কলঙ্কিত করে ইতিহাসকে আবর্জনার অংশ করলেও মহাকালের অবধারিত যোগসাজশে তা আবার অভিশাপমুক্তও হয়ে যায়। কারণ চিরসত্য শাশ্বত কালের। সেটাকে সাময়িকভাবে লঙ্ঘন করা গেলেও শেষমেশ যথার্থ গন্তব্যে পৌঁছাতে ইতিহাসই তার দয়ভাগ সম্পন্ন করে। অসত্যের পুঞ্জীভূত বিদ্বেষ আর সত্যের অপলাপ ও স্খলন দীর্ঘায়িত হয় না। সঙ্গত কারণেই ২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস আর ৭ মার্চের ভাষণ এখন বিশ্ব ইতিহাসের ঐতিহ্য। দেশনেতা আর মহানায়করা এভাবেই তাদের কৃতিত্বকে সর্বমানুষের মাঝে সম্প্রসারিত করে চিরস্থায়ী আসন অলঙ্কৃত করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত আকাক্সক্ষা ছিল একটি আধুনিক বাংলাদেশ তৈরি করে বাসযোগ্য এক আলোকিত জগত তাঁর প্রিয় দেশবাসীকে উপহার দেবেন। বর্তমান সরকার সেই লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনে হরেক রকম কর্মপ্রকল্পকে সাজানো-গোছানো অবস্থায় জনগণের মাঝে নিয়ে যেতে দৃঢ় প্রত্যয়ী। একটি মানসম্মত, সুপরিকল্পিত, নিরাপদ বাংলাদেশ সর্বজনীনভাবে সকলের জন্য নির্মাণ করা হবে, যেখানে মূল নিয়ামকগোষ্ঠী হিসেবে সাধারণ মানুষকে বিবেচনায় আনা হয়েছে। মুজিববর্ষে ঘরে ঘরে আলো, সবার জন্য আবাসন ও কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।
×