ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মক্ষেত্রে নারীরা আজও অবহেলিত

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৮ মার্চ ২০২০

কর্মক্ষেত্রে নারীরা আজও অবহেলিত

শেখ আব্দুল আওয়াল, গফরগাঁও ॥ সমতার অঙ্গীকারে দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। কিন্তু এখনও বৈষম্যের শিকার এদেশের শ্রমজীবী নারীরা। জীবিকার তাগিদে কোন খারাপ কাজ বা অনৈতিক কাজে লিপ্ত না হয়ে কেউ কাজ করছেন ইটভাঁটিতে কেউ বা করছেন ইটভাঙ্গার কাজ আবার কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে অনেক কষ্টে সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। আবার কেউ মোটরবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এতে তাদের কাজের গ-ি যেমন বৃদ্ধি করছে তেমনি অন্য নারীকেও স্বাবলম্বী হওয়ার সাহস যোগাচ্ছে। তেমনি এক নারী ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভার রুমা আক্তার (৩৫) তিন ছেলে এক মেয়ে নিয়ে জীবন চালাচ্ছে দুঃখে কষ্টে। তার দাবি মানুষে এত কিছু পায় শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমরা পাই না কেন? রুমা আক্তারের মতো এ রকম দাবি গৃহহারা অনেক শ্রমজীবী নারীর। সমাজ সংসারে পুরুষের পাশাপাশি নারী। একজন পুরুষ যেমন তার পূর্ণতা পায় অর্ধাঙ্গিনীর মাধ্যমে ঠিক তেমনি একজন নারীও পূর্ণতা পায় তার জীবন সঙ্গীর মাধ্যমে। সমতার হিসাবে নারীরা সবসময় পিছিয়ে কর্মস্থলে। নারীরা সব সময় পুরুষের কাঁধে কাঁধ রেখে চলার যোগ্যতা রাখলেও তা যেন সব সময় অস্বীকার করা হয়। এই অপ্রাপ্তি নারীর ক্ষেত্রে আজ থেকে নয়। ১৮৫৭ খ্রীস্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা। ১৯০৮ খ্রীস্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ১৯১০ খ্রীস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। এর পর থেকেই প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ বিশ^ নারী দিবস পালন করা হয়। রুমা আক্তার বলেন, বারো বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে। সেই ছোটকাল থেকেই সংসারের বোঝা বইছি। তিন ছেলে এক মেয়ে নিয়ে কোন রকম জীবন চালিয়ে যাচ্ছি। অন্যের বাড়িতে ১৬০ টাকা রোজেজির (বুয়া) কাজ করে মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি তবু ‘সুখী’। মানুষের কাছে শুনি মুজিববর্ষে শেখ হাসিনা যাদের জমি আছে তাদের ঘর দিচ্ছে। কিন্তু আমার ভাগ্যে তা জোটেনি। রুমার মতো ঝর্ণা আক্তার, ময়মন নেছা ও নাজমা খাতুনসহ অনেকেরই দাবি জমি থাকা সত্ত্বেও আমরা কেন ঘর পাই না? আমরা কেন সরকারের সুযোগ-সুবিধা পাই না? তাহলে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সুযোগ-সুবিধা কারা নেয়? এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা আক্তার বলেন, আমরা নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে, ভাতা দিয়ে সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় এনে সমাজের অবহেলিত নারীদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সমাজের অবহেলিত দুস্থদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনা হবে।
×