ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চসিক নির্বাচন

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বিদ্রোহীদের রাজি করানো যায়নি

প্রকাশিত: ১০:১৩, ৬ মার্চ ২০২০

 মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে  বিদ্রোহীদের  রাজি করানো যায়নি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহ থামাতে হিমশিম খাচ্ছেন নেতারা। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের উপস্থিতিতে প্রায় তিনঘণ্টা ধরে চলা এ বৈঠকে বিদ্রোহীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে রাজি করানো যায়নি। তারা হয় দলীয় মনোনয়ন, নয়তো কাউন্সিলর পদ উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানান। তাদের অনড় অবস্থানের মুখে আগামী ৮ মার্চ দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ^াস দিয়েছেন নেতারা। এদিকে, একেবারে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠ ছাড়বেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, যত বাধাই আসুক আমরা নির্বাচনে থাকব। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের উদ্যোগে থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শুরু হয় এ সভা। এতে ডাকা হয় মনোনয়নবঞ্চিত ক্ষুব্ধ প্রার্থীদের। এ সভায় তাদের সমর্থকরাও উপস্থিত হন। প্রার্থীদের উদ্দেশে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ড যে মনোনয়ন দিয়েছে তা আমাদের ফলো করতে হবে। সেখানে উপস্থিত মহানগর নেতৃবৃন্দ বিদ্রোহী প্রার্থীদের বোঝাবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন ও মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেও যথাযথ মূল্যায়ন পাননি। বিতর্কিত কিছু ব্যক্তিকে দলের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। দল মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে স্লোগানও শোনা যায়। গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য এমএ লতিফ, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, নঈমউদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাছিনা মহিউদ্দিনসহ নেতারা। মূলত মনোনয়ন প্রত্যাহারে বিদ্রোহীদের রাজি করানোর জন্য এ বৈঠক ডাকা হয়। নেতারাও সাধ্যমত চেষ্টা করেন তাদের বোঝাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্তও কাউন্সিলর প্রার্থীরা অনড় থাকেন। মনোনয়ন বঞ্চিত সাবের আহমেদ, এনামুল হক মুনিরী, জয়নাল আবেদিন, আঞ্জুমান আরা বেগমসহ ৮ থেকে ১০ জন প্রার্থীকে উচ্চস্বরে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। বৈঠক হলেও সেখানে তাদের কথা বলতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ বিদ্রোহীদের। কোনভাবেই তারা নির্বাচন থেকে সরে আসবেন না বলে জানিয়ে দেন। ফলে বৃহস্পতিবারের এ সভা কার্যত ফলপ্রসূ হয়নি। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এ প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, এমন প্রার্থীকেও দলীয় সমর্থন দেয়া হয়েছে যারা কখনই আওয়ামী লীগ করেননি। বিএনপি ও জামায়াত পরিবারের সদস্যও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। কেন্দ্রের কাছে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে বলেও অভিমত তাদের। ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা বলেন, আমরা সেখানে বক্তব্য রাখতে পারিনি। নেতারা বলেছেন আগামী ৮ মার্চ দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল- আলম হানিফ এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন চট্টগ্রামে আসবেন। সেদিনও কাউন্সিলর মনোনয়নের বিষয়ে আলোচনা হবে। অতঃপর সে আশ^াসে ভরসা করে সভা শেষ করে বেরিয়েছেন ক্ষুব্ধরা। আগামী ৮ মার্চ অর্থাৎ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন পর্যন্ত তারা আশা ছাড়ছেন না। এদিকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বিএনপি যে সম্মান দেখিয়ে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে সে সম্মান আমি রাখব। যত বাধা আসুক আমরা নির্বাচনের মাঠে থাকব। প্রয়োজনে রক্ত দেব, তারপরও মাঠ ছাড়ব না। সকল অন্যায় প্রতিহত করে বিজয় ছিনিয়ে আনব। বৃহস্পতিবার মহানগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে আয়োজিত বিএনপির বর্ধিত সভায় ডাঃ শাহাদাত কথাগুলো বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও নগর বিএনপির সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করসহ নেতৃবৃন্দ। নেতারা বলেন, জনমত বিএনপির সঙ্গেই আছে। তারাই আমাদের শক্তি। চসিক নির্বাচনে যারা জীবন বাজি রেখে ডাঃ শাহাদাতকে বিজয়ী করে আনবে তাদের মূল্যায়ন করা হবে।
×