নীতিশ চন্দ্র বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ ॥ সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর স্মৃতিবিজড়িত দু’টি লঞ্চঘাট (ঘাটলা) আধুনিক, সৌন্দর্য্যম-িত ও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এর একটি হলো, মধুমতি নদীর তীরে পাটগাতী লঞ্চঘাট এবং অপরটি, টুঙ্গিপাড়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঘিয়া নদীর তীরে। গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ কাজ বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।
গোপালগঞ্জের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মধুমতি নদীর তীর ঘেঁষা ছায়া ঘেরা সবুজ শ্যামল গ্রাম টুঙ্গিপাড়া। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতী ইউনিয়নের অন্তর্গত এ গ্রামটি। এ গ্রামেই ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সে সময় টুঙ্গিপাড়ায় যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল নদীপথেই। লঞ্চ আর রকেট-স্টিমারে চড়েই মানুষ দূরবর্তী স্থানে যাতায়াত করত। আর এ দু’টি ঘাটলাই (লঞ্চঘাট) ছিল টুঙ্গিপাড়ার সেই যাতায়াত ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। স্বাভাবিক কারণেই এ দু’টি ঘাটলায় জড়িয়ে রয়েছে শেখ মুজিবের বহু স্মৃতি। এ ঘাটলা দিয়েই তিনি টুঙ্গিপাড়া থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দৌড়ে বেড়িয়েছেন। তাই টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার স্মৃতি সংরক্ষণে এ দু’টি লঞ্চঘাট অনেক গুরুত্ব বহন করে।
প্রকল্পের স্কিমে মধুমতি নদীর তীরে পাটগাতী লঞ্চঘাটের নামকরণ করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল বোট-ল্যান্ডিং র্যাম (ঘাটলা)। প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে এ বোট-ল্যান্ডিং র্যামের নির্মাণ ও বিউটিফিকেশনের কাজ শুরু হয়েছে গত বছরের শুরুতে। কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে এ বছর মে মাসে। এছাড়া বাঘিয়ার নদীর কূলের ঘাটলাটিও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেখানে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। সেখানকার সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে এলজিইডি আরও ২ কোটি ৩২ লাখ টাকার চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে। ইতোমধ্যে এ দু’টি স্থানে টুঙ্গিপাড়াসহ আশপাশ এলাকার মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে। বিনোদনপ্রিয় মানুষ বিকেল হলেই সেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন, আর উপভোগ করছেন নদীর পাড়ের মনোরম পরিবেশ। টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামা শেখ আহম্মেদ হোসেন মীর্জা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন সময় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি রকেট-স্টিমার বা লঞ্চে চড়ে এসেছেন তাঁর প্রিয় জন্মভূমিতে।