ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চবি ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের তান্ডব ॥ আহত ৫০

প্রকাশিত: ০৯:২১, ৬ মার্চ ২০২০

 চবি ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের তান্ডব ॥ আহত ৫০

চবি সংবাদদাতা ॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাতের এ তান্ডবে ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে আহত হয়েছে ৫০ কর্মী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছুটে যাওয়া পুলিশ ৫৭ জনকে আটক করে তবে যাচাই বাছাই করে ৫০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। বুধবার রাত দেড়টার দিকে এফ রহমান ও আলাওল হলে এ ঘটনা ঘটে। চবিতে বিবাদমান দুটি পক্ষ হলো চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী কনকর্ড ও সিক্সটি নাইন এবং প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী বিজয়। এদের মধ্যে কনকর্ডের নেতৃত্বে রয়েছে সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল মালেক, সিক্সটি নাইনের নেতৃত্বে রয়েছে চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপু এবং বিজয় পক্ষের নেতা সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মাদ ইলিয়াস। জানা যায়, গত সোমবার রাতে আলাওল হলের ২৩৪ নম্বর কক্ষ নিয়ে বিজয়ের এক কর্মীর সঙ্গে কনকর্ডের কর্মী ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী বোরহানুল ইসলামের কথা কাটাকাটি হয়। এর মীমাংসা করতে গেলে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিজয়ের কর্মী আবীর হাসান বোরহানকে চড়-থাপ্পড় দেন। এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার রাতে জিরো পয়েন্ট এলাকায় আবীরকে মারধর করে বোরহান ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল কনকর্ড ও বিজয়ের মধ্যে। এরপর সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে বিজয় এবং শাহজালাল হলের সামনে কনকর্ড অবস্থান নেয়। পরে তাদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কনকর্ডের সঙ্গে যোগ দেয় সিক্সটি নাইন। এর কিছুক্ষণ পরে পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ এ সময় ধাওয়া দিয়ে ৪ জনকে আটক করে। সাময়িকভাবে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও রাত দেড়টার দিকে এফ রহমান ও আলাওল হলে ফের সংঘর্ষে জড়ায় উভয়পক্ষ। এ সময় ৬টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। একপর্যায়ে এফ রহমান ও আলাওল হলে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। দুই হলের লাইট নিভিয়ে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়। প্রায় আশিটির মতো কক্ষ ভাংচুরে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাদ যায়নি প্রতিবন্ধীদের কক্ষও। এতে দু’পক্ষে অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়। পরে রাত ৩টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ বিষয়ে বিজয়ের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, মধ্যরাতে শিবির স্টাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপুর নেতৃত্বে এ নৃশংস হামলা হয়েছে। আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, সন্ধ্যায় তিন হল থেকে বিজয়ের কর্মীরা আমাদের কর্মীদের বের করে দেয়। প্রশাসনকে বারবার অনুরোধ করলেও মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের হলে ওঠার কোন ব্যবস্থা করে দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসএম মনিরুল ইসলাম জানান, আমরা বারবার সতর্ক করারও পরও তারা সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। পরে পুলিশ পাঠিয়ে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এটি কোন আদর্শিক সংঘাত নয়, নিছক স্বার্থের দ্বন্দ্ব।
×