ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ‘বোধ’ নাটকের ২৫তম প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ১২:০৫, ৫ মার্চ ২০২০

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ‘বোধ’ নাটকের ২৫তম প্রদর্শনী

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সংলাপ গ্রুপ থিয়েটারের অন্যতম প্রযোজনা ‘বোধ’ নাটকের ২৫তম প্রদর্শনী করতে যাচ্ছে। আগামীকাল ৬ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে নাটকটি প্রদর্শিত হবে। সমাজের বোধহীন শ্রেণীকে নিয়ে মুন্সী প্রেমচাঁদের গল্প অবলম্বনে ‘বোধ’-এর নাট্যরূপ দিয়েছেন স্বপন দাস। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন মোস্তফা হীরা। সংলাপের ২৬তম প্রযোজনা ‘বোধ’ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন হাবিবুর রহমান হাবিব, মোঃ মাইনুল ইসলাম, তামান্না মেহের পপি, ওয়ালিদ আহমাদ চৌধুরী, মাসুদ আলম বাবু প্রমুখ। নাটকের প্রযোজনা ব্যবস্থাপক শাকিল আহমেদ, মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনা পলাশ হেনড্রি সেন, পোশাক পরিকল্পনা চিঠি হাবীব ও সেলিনা আক্তার প্রিয়া, কোরিওগ্রাফি রবিন বসাক, আলোক প্রক্ষেপক ও আবহসঙ্গীত সেলিনা আক্তার প্রিয়া ও ওয়ালিদ আহমাদ চৌধুরী, মিলনায়তন ব্যবস্থাপনা মঈনুদ্দীন হাসান খোকন, আশিক উল-ইসলাম, আজমেরী সুলতানা লাকী, শহীদুল ইসলাম খোকন, শাকিলুজ্জামান রাজ, সাব্বির দেওয়ান ফাহিম প্রমুখ। ‘বোধ’ কাহিনীতে তুলে ধরা হয়েছে একটি বোধহীন সমাজ ব্যবস্থায় আমরা বসবার করছি। এ নাটকের ঘিসু ও মেধো এর বাইরে নয়। পিতা-পুত্র (ঘিসু ও মেধো) বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পর্যদুস্ত। ক্ষুধা তাদের করে তুলেছে অমানবিক, স্বার্থপর পশুসম। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সম্পর্কের বন্ধন কোন কার্যকর ভূমিকা রাখে না তাদের জীবনে। তাই নাটকে দেখা যায় সামান্য কয়েকটি সেদ্ধ আলু নিয়ে পিতা-পুত্রের লড়াই। নিজের সন্তানসম্ভবা পুত্রবধূর অতিসমান্য খাদ্য কেড়ে নিতে ঘিসু উদ্ভুদ্ধ করে পুত্র মেধোকে। মেধোও বোধহীন এক জন্তুর মতো কেড়ে নেয় বধূর সেই সামান্য খাবার। ক্ষুধা তাদের এমনভাবে তাড়িত করে যে- নিজের পুত্রবধূকে মৃত ঘোষণা দিয়ে কিছু পয়সা পাবার লোভ সামলাতে পারে না ঘিসু। পুত্র মেধোও তা সমর্থন করে। যে কোনভাবে বেঁচে থাকাটাই যেন তাদের একমাত্র লক্ষ্য। অথচ কেন তারা আজ দরিদ্র, কেন পাচ্ছে না দু’মুঠো খাবার। এরজন্য এ সমাজ কতটা দায়ী। কেন তারা বৈষম্যের শিকার। এ নিয়ে ভাবে না তারা। কোন দ্রোহ নেই। নিয়তির ওপর সব ছেড়ে দিয়েছে। এদের কি আর সম্পূর্ণ মানুষ বলা চলে? অবশ্য নাটকের শেষ দৃশ্যে স্বপ্নের ঘোরে ঘিসু-মেধোকে দ্রোহী হতে দেখা যায়। ঘেন্না করে এই সমাজ, সমাজপতিদের। মেধো তার সন্তানকে বোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। ‘বোধ’ নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক মোস্তফা হীরা বলেন, আজকের সমাজ বাস্তবতায় নাটকটি গুরুত্ব রাখে। মানুষ দিন দিন তার সামাজিক দায়বদ্ধতা, সংবেদনশীলতা, মননশীলতা হারিয়ে প্রকারান্তে নিজেকে আর দশটা সাধারণ প্রাণীর কাতারে নিয়ে যাচ্ছে। হারাচ্ছে তার শ্রেষ্ঠত্ব। কোন রকমে বেঁচে থাকাটাই যেন একমাত্র লক্ষ্য। সমাজবদ্ধ মানুষ নিজেকে নিজের খাঁচায় আবদ্ধ করছে। নিজেকে বোধহীন, বিবেকহীন যান্ত্রিক রোবটে পরিণত করছে। সমাজের অন্যায়-অবিচার শ্রেণী বৈষম্য, লুটপাট, দুর্নীতি মানবিক বিপর্যয়ে সে নির্বিকার। এই বোধহীন জীবন কি মানুষের? সত্যিকারের জীবনবোধের দিকে তাড়িত করে এই নাটক। তাই আমরা নাটকটি মঞ্চায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ‘সংলাপ’-এর বন্ধুরা নিজেদের শ্রম, মেধা দিয়ে চেষ্টা করেছে নাটকটির মনোজ্ঞ মঞ্চায়নের। নাটকটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের বন্ধুদের এই সুযোগে আমার ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নাটকটির ২৫তম মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। নাটকটি দর্শকদের ভাল লাগলে আমরা সার্থক হব।
×