ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অমরেশ বিশ্বাস

ঐক্যবদ্ধ হবে নাকি পরস্পর লড়াই করবে ডেমোক্র্যাটরা

প্রকাশিত: ১২:১৯, ৪ মার্চ ২০২০

ঐক্যবদ্ধ হবে নাকি পরস্পর লড়াই করবে ডেমোক্র্যাটরা

২০২০ সালের নবেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড় সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের কোন পর্যায়ে কি হতে যাচ্ছে? ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য গত বছর থেকে দলের ভেতরে একে অপরকে টেক্কা দেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তাই ডেমোক্র্যাটরা ঐক্যবদ্ধ হবে নাকি পরস্পর লড়াই করবে এমনটাই প্রশ্ন জেগেছে বিশ্লেষকদের মনে। খবর বিবিস ও এপির যুক্তরাষ্ট্রে অনেক দেশের মতো বেশিসংখ্যক রাজনৈতিক দল নেই। দেশটিতে প্রধানত দুটি দলই বেশি ভোট পেয়ে থাকে। দল দুটি হলো ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান পার্টি। একজন গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্টের দৌড়ে বাম এবং মধ্যপন্থীদের মধ্যে লড়াই হিসেবে শুরু হওয়া প্রথম মনোনয়নের প্রতিযোগিতাটি যেহেতু সামনে এসেছে তাই ডেমোক্র্যাটরা লড়াই করবে নাকি ঐক্যবদ্ধ হবে সেটাই দেখার বিষয়। প্রায় এক বছরের এই লড়াইয়ে এলিজাবেথ ওয়ারেন দাবি করেছেন, ‘আমি লড়াই করছি কারন বার্নি স্যান্ডার্সের প্রচারণার মাধ্যমে কেবল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর লড়াইয়ে এবং পরবর্তী প্রেসিডেন্টের অপেক্ষায় থাকা চ্যালেঞ্জগুলোর সামনে কেবল আরও জোরালো হয়েছি।’ বিভাজনের অন্যদিকে, ট্রাম্প-পরবর্তী পরিস্থিতি কী হতে পারে সে বিষয়ে ঐকমত্যের আহ্বানে জো বাইডেন বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান আলোচনার বিষয়টি যেহতু জর্জরিত হয়েছে তাই পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই নিরাময়কারী হতে হবে। কারণ পিটি বুটিজেগ এই লড়াইয়ের জন্য বিরক্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সমালোচনা করেছেন। উভয়ই প্রতিদ্বন্দ্বীর শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রভাব যা আইওয়াতে ডেমোক্র্যাটিক ভোটারদের সামনে নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরেছে। ডেস মাইনস কাউন্টি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান টম কোর্টনি বলেছেন, ‘আমি জানি ট্রাম্প কতটা খারাপ। আমরা একসঙ্গে কী করতে পারি সেটা জানতে চাই। আমি কোন প্রার্থীর সমর্থন করছি না।’ আধুনিক উদারনীতিতে বিশ্বাস করে ডেমোক্র্যাট পার্টি যারা রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সাশ্রয়ী মূল্যের শিক্ষা, সামাজিক কর্মসূচী, পরিবেশ সংরক্ষণ নীতি এবং শ্রমিক ইউনিয়েনে বিশ্বাস করে। এই দলের সর্বশেষ প্রার্থী ছিলেন হিলারি ক্লিনটন, যিনি গত নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরেছেন। রিপাবলিকান পার্টি, যে দলটি গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি অথবা জিওপি নামেও পরিচিত- আমেরিকান রক্ষণশীলতার প্রচারণা করে। যেমন সীমিত সরকারী নিয়ন্ত্রণ, কম কর হার, মুক্তবাজার পুঁজিবাদ, বন্দুকের অধিকার, নিয়ন্ত্রণ মুক্ত শ্রমিক ইউনিয়ন এবং অভিবাসন ও গর্ভপাতের মতো ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করায় বিশ্বাসী দল। অন্যান্য ছোট রাজনৈতিক দলগুলো যেমন- লিবার্টারিয়ান, গ্রীন, ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টিও কখনো কখনো প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী মনোনয়ন ঘোষণা করে। এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দেশজুড়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাকে বলা হয় প্রাইমারিস। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে এই প্রাইমারি সম্পর্কে কিছুই বলা নেইÑ সুতরাং পুরো ব্যাপারটি নির্ধারিত হয় দল এবং রাজ্য আইন অনুযায়ী। যেভাবে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, ঠিক সেভাবেই। তবে দল নয়, বরং স্টেট সরকার প্রাইমারি নির্বাচনের আয়োজন করে থাকে। একজন প্রার্থী যদি প্রাইমারিতে বিজয়ী হন, তারা তখন স্টেটের সব প্রতিনিধির বা আংশিক প্রতিনিধিকে জয় করবেন, যা নির্ভর করে দলের আইনের ওপর। এই প্রতিনিধিরা দলের চূড়ান্ত সম্মেলনে তার পক্ষে ভোট দেবেন। এর পরে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। এই প্রাইমারি নির্বাচন পদ্ধতি পুরোপুরিই আমেরিকান একটা ব্যবস্থা। তবে অস্ট্রেলিয়া এবং ইসরাইলে অনেকটা একই ধাঁচে প্রার্থীদের পূর্ব-বাছাই প্রক্রিয়া রয়েছে। এর আগে টেক্সাসের হিউস্টনে স্বাস্থ্যসেবা বিতর্কে প্রথমবারের মতো তিনজন প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন প্রত্যাশী একসঙ্গে মঞ্চে এসেছিলেন। বাইডেন, স্যান্ডার্সের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনা, ‘মেডিকেয়ার ফর অল’-এর সম্ভাব্যতার ওপর আক্রমণ করেন। তবে ওয়ারেন এবং স্যান্ডার্স এই ব্যবস্থাটির পক্ষে ছিলেন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কেবল সর্বোচ্চ ভোট অর্জনকারী ১০ ডেমোক্র্যাট এই মনোনয়নের মাঠে লড়বেন।
×