ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১০ বছরের সর্বনিম্ন

প্রকাশিত: ১০:০৬, ৪ মার্চ ২০২০

বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১০ বছরের সর্বনিম্ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রফতানি কমে যাওয়া, নতুন বিনিয়োগ না আসাসহ নানা কারণে ধারাবাহিকভাবে কমছে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি। গত জানুয়ারি শেষে বেসরকারী খাতের বার্ষিক ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমেছে ৯ দশমিক ২০ শতাংশে। এ প্রবৃদ্ধি ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ওই মাসে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এর পরের মাস থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ শতাংশের ওপরে। গত ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ব্যাংকাররা জানান, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন কারণে বেসরকারী খাতে ঋণ চাহিদা এমনিতেই কম রয়েছে। আবার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে বিপুল অঙ্কের ঋণ আটকে থাকায় নতুন ঋণ আদায় হচ্ছে খুব কম। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণ দেয়ার সক্ষমতা কমেছে। সব মিলিয়ে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে এ পর্যায়ে নেমেছে। চলতি অর্থবছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেসরকারী খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ ধরলেও শেষ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগের অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ বছরের জুন পর্যন্ত বেসরকারী খাতে গৃহীত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে অর্থাৎ বেসরকারী খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ থাকবে বলে আগেই জানানো হয়েছে। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধির জন্য বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। এজন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে বেসরকারী খাতে বিনিয়োগের পাশাপাশি ঋণের চাহিদাও বাড়বে। এদিকে গত মুদ্রানীতিতে সরকারী খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের অর্থবছরে ছিল ঋণাত্মক ২ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে আগামী ৬ মাসে অর্থাৎ জুন পর্যন্ত এটি আরও বাড়িয়ে নতুন করে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর অভ্যন্তরীণ ঋণ বিদ্যমান কর্মসূচী ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হয়েছে। গত মুদ্রানীতিতে ব্যাপক মুদ্রার সরবরাহ ধরা হয় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী ৬ মাসে অর্থাৎ জুন পর্যন্ত এটি আরও বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ১৩ শতাংশ। একইসঙ্গে রিজার্ভ মানির লক্ষ্য ১২ শতাংশ অপরিবর্তীত রাখা হয়েছে। এছাড়া নিট বৈদেশিক সম্পদ শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। তবে কিছুটা কমানো হয়েছে নিট অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রবৃদ্ধি। ১৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
×