ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রংপুরের শ্যামাসুন্দরী খাল দখল, দূষণে মৃতপ্রায়

প্রকাশিত: ১০:০৮, ৩ মার্চ ২০২০

রংপুরের শ্যামাসুন্দরী খাল দখল, দূষণে মৃতপ্রায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ২ মার্চ ॥ রংপুর নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত দখল আর দূষণের শিকার ১২৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খালটি সংস্কারের কাজ শুরু হচ্ছে মার্চ মাসে। সংস্কারের ব্যয় ধরা হয়েছে একশ কোটি টাকা। এর মধ্যে রংপুর সেনানিবাসের ঘাঘট নদের শ্যামাসুন্দরীর উৎস মুখ থেকে মাহিগঞ্জ পাটবাড়ি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার খালের দুই পাশের ১৭০ জন অবৈধ দখলদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী মার্চ মাস থেকে খালটির সংস্কার কাজ শুরু করার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে, ফেব্রুয়ারি মাসে অবৈধভাবে দখল করা খালের জায়গা খালি করার নির্দেশ সম্বলিত চিঠি দখলদারদের দিয়েছে রংপুর জেলা প্রশাসন। কিন্তু, ফেব্রুয়ারি মাস পেরিয়ে গেলেও দখল ছাড়তে তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে । এর আগে, ২০১২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ১২ কিলোমিটার শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কার, খালের ওপর সেতু নির্মাণ ও খননের জন্য তৎকালীন রংপুর পৌরসভা ২৫ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করে। ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের কাজ ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়। ওই সময়ে খালের কিছু অংশের দুই পাশে বোল্ডার বসানো, খালের দুই পাশে ফুটপাথ নির্মাণ এবং খাল খনন ছাড়াই তিনটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে। সেই সময় তৎকালীন সিটি মেয়রের বিরুদ্ধে খালটি সংস্কারে অনিয়ম ও দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান জানান, রংপুর বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নগরীর শোভা বর্ধনের জন্য ১৬ কিলোমিটার খালের ১০ কিলোমিটার সার্ভে কাজ শেষে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ১৭০ দখলকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। রংপুর জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে রংপুর নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত খোকসা ঘাঘটের ডান তীর থেকে পাঁচটি বহুতল ভবন উচ্ছেদ করা হয়েছে। এছাড়া ২০ কোটি মূল্যের প্রায় দেড় একর সরকারী জমি উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি বাম তীরের পাঁচ মিটার সার্ভের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ১৩টি অবৈধ স্থাপনা পাওয়া গেছে। এ মাসের মধ্যে এসব অবধৈ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে না নিলে শীঘ্রই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে তাদের উচ্ছেদ করা হবে। তিনি আরও জানান, শ্যামাসুন্দরী খাল খনন ও প্রটেকটিভ ওয়াল নির্মাণের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। খালের দুই ধারে পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখলে এর ব্যয় শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এর জন্য আমরা যৌথ কমিটিকে পরামর্শক নিয়োগের কথা বলেছি।
×