ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় কক্ষ সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ৩ মার্চ ২০২০

নওগাঁয় কক্ষ সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ, ১ মার্চ ॥ সদর উপজেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ চকউজির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে বিদ্যাপীঠে শ্রেণীকক্ষ সঙ্কটের কারণে একই কক্ষে ৭২ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে প্রতিদিন পাঠগ্রহণ করছে। এছাড়াও নেই কোন খেলার উপকরণ। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেকটাই বিনোদনবঞ্চিত পরিবেশে প্রতিদিন এসে পাঠ গ্রহণ করছে। তাই নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শ্রেণীকক্ষের সঙ্কট, বসার পর্যাপ্ত ব্রেঞ্চের অভাবসহ নানা সমস্যার ভারে রুগ্ন হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী চ-িপুর ইউনিয়নের চকউজির গ্রামে অবস্থিত চকউজির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৮৮০ সালে চকউজির গ্রামের মণ্ডল পরিবারের কিছু শিক্ষা-অনুরাগী ব্যক্তিরা এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত উদ্যোগে জমিদান করে প্রথমে ছনের বেড়া ও পরবর্তীতে মাটির দুটি কক্ষ তৈরি করে শিক্ষা প্রদানের কার্যক্রম শুরু করেন। দীর্ঘ সময় মাটি আর বেড়ার ঘরে পাঠদান চললেও ১৯৯৩ সালে তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি অনেক পুরনো হওয়ায় ছাদের সিমেন্ট ও বালু খুলে শিক্ষার্থীদের মাথায় পড়ছে। পরবর্তীতে বছর দুয়েক আগে আরেকটি দুই কক্ষবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এই বিদ্যালয়ে প্রতিদিন দুই শিফটে প্রায় ৩০৪ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করে। দীর্ঘ বছর পার হলেও এখনও দূর করা হয়নি কক্ষ সঙ্কটসহ নানা সমস্যার। আশপাশে আর কোন বিদ্যালয় না থাকায় কয়েকটি গ্রামের কোমলমতি শিশুরা একই কক্ষে গাদাগাদি করে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম দুলাল রবিদাশ বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছি। নতুন পুরনো ভবন মিলে বিদ্যালয়ে মোট কক্ষ রয়েছে ৬টি। এর মধ্যে ১টি কক্ষে সহকারী শিক্ষকদের কমন ও স্টোর রুম আর ১টি কক্ষ প্রধান শিক্ষক ও কম্পিউটার কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ৪টি কক্ষে দুই শিফটে গাদাগাদি করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়টির সামনে আরেকটি মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ থাকায় জায়গা নেই বললেই চলে। তবে নতুন ভবনের ওপর যদি আরেক তলা নির্মাণ করা হয় তাহলে কক্ষ সঙ্কট অনেকটাই হ্রাস পাবে। এছাড়াও রয়েছে শিক্ষক সঙ্কট। অতি দ্রুত পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক মানের একটি ভবন, ব্রেঞ্চসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সরবরাহ করা খুবই জরুরী। তা না হলে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাবে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম মিলন বলেন, স্কুলের এই সকল সমস্যার কথা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। জরুরী ভিত্তিতে সঙ্কট দূর করা প্রয়োজন। এছাড়াও বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য একটি মনোরম ও আনন্দদায়ক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাইয়ার সুলতানা বলেন, ওই বিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত কি কি সমস্যা আছে তা আমার জানা নেই। তবে আমি অতি দ্রুত ওই বিদ্যালয়ের সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সমস্যাগুলো লিপিবদ্ধ করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিতভাবে জানাব।
×