ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণের ঘটনা

আইএস দাবি করলেও নেপথ্যে নব্য জেএমবি নাকি অন্য কিছু?

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ২ মার্চ ২০২০

 আইএস দাবি করলেও নেপথ্যে নব্য জেএমবি  নাকি অন্য কিছু?

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মহানগরীর পুলিশ বক্সে শুক্রবার রাতে সংঘটিত বিস্ফোরণ ঘটনার কোন কিনারা হয়নি। এটা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত জঙ্গী গ্রুপের হামলা, নাকি নব্য জেএমবি সদস্যরা এটি ঘটিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। বিস্ফোরণের পর বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত বলে পুলিশের বিভিন্ন সূত্রে ধারণা দেয়া হলেও ইতোমধ্যে এ হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গী সংগঠন ইসলামী স্টেট (আইএস)। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জঙ্গী নজরদারি সংস্থা ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ শনিবার রাতে এক টুইট বার্তায় এমন তথ্য জানালেও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোন সূত্র থেকে আইএসের এমন বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে রবিবার পর্যন্ত কোন মন্তব্য করা হয়নি। তবে পুলিশবক্সে বিস্ফোরণের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের দায়ী করে পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেছে। ঘটনার পর পুলিশের একাধিক বিভাগ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। ঢাকা থেকে পুলিশের এন্টিটেররিজম ইউনিটের ১১ সদস্য চট্টগ্রাম আসার পর প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করে রবিবার ঢাকা ফিরে গেছে। তারা এ ঘটনায় কোন বক্তব্য দেননি। তবে সিএমপি সূত্রে জানানো হয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে লিখিত আকারে একটি রিপোর্ট জমা দেয়া হবে। দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এ বিস্ফোরণ ঘটানোর নেপথ্যে নব্য জেএমবির সম্পৃক্ততাই বেশি। আবার জেএমবির সন্ধিগ্ধ গ্রুপটি আইএস মতাদর্শী। যদিও বাংলাদেশে আইএসের সক্রিয় সন্ত্রাসী তৎপরতা নেই বলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। সরকারের সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পর এসব অপকর্মে জড়িতদের সমূলে দমন এবং উৎখাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট কাজ করে চলেছে। বিভিন্ন স্থানে জেএমবিসহ জঙ্গী মতাদর্শীদের আস্তানা উদঘাটিত হওয়ার পর গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার পাশাপাশি প্রাণও হারিয়েছে অনেকে। উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ৮টার পর নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় একটি পুলিশবক্সে আচমকা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ ৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ট্রাফিক সার্জেন্ট আরাফাত হোসেন ভূইয়া ও এএসআই আতা উদ্দিন দগ্ধ হওয়ার পর তাদের চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে স্থানীয় দুই যুবক জাহিদ বিন জাহাঙ্গীর ও মোঃ সুমন। এছাড়া আপন নামের ১০ বছর বয়সী এক শিশু। শুক্রবার সন্ধ্যার পর পুলিশবক্সে বিস্ফোরণ ঘটনার নেপথ্যে প্রথমে জল্পনা কল্পনা চললেও পরে একে নাশকতামূলক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এরপর আইএসের পক্ষে এ ঘটনার দায় দায়িত্ব স্বীকার করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জঙ্গী নজরদারি সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ তথ্য দেয়ার পর বিষয়টি এখন বড় একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, সিএমপির কর্মকর্তারা আইএসের বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। তারা বিষয়টি সামাজিকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অবহিত হয়েছেন বলে স্বীকার করেন। যদি বিষয়টি সত্য বলে চিহ্নিত হয় তবে ঘটনার নেপথ্যের হোতাদের যত জরুরী ভিত্তিতে সম্ভব আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। কোনভাবেই এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেয়ার কোন অবকাশ নেই বলে সংশ্লিষ্ট মহলগুলোর পক্ষ থেকে মত ব্যক্ত করা হচ্ছে।
×