ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিখা চিরন্তনে ১৪ দলের সমাবেশ

নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা দাবি

প্রকাশিত: ১০:৩১, ২ মার্চ ২০২০

 নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা দাবি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন প্রতিরোধে আইন সংশোধন করে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতারা। একইসঙ্গে এই সব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি নিশ্চিত করা এবং নারী-শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান জানান তারা। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে রবিবার নারী-শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আয়োজিত সমাবেশে ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা এসব দাবি জানান। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘শেখ হাসিনার নির্দেশ নারী ও শিশু নির্যাতনে, রুখে দাঁড়াবে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সমাবেশের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ১৪ দল। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নে, শিশু মৃত্যু রোধে আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হন- সেই দেশে নারী-শিশু নির্যাতন চলতে পারে না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি। তারা দেশের সকল অর্জন নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে। নারী-শিশু নির্যাতন একটি সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিকভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে প্রতিহত করতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে। সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিকা রেখে চলেছেন। নারীদের ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যারা নারী-শিশুর ওপর অত্যাচার নির্যাতন করে তাদের রুখতে হবে। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা কঠোর হস্তে জঙ্গীবাদ দমন করেছেন, সেই দেশে কোন নারী-শিশু নির্যাতনকারী ও ধর্ষকের স্থান হবে না। এদের বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার শপথ নিতে হবে। আমি আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব দ্রুত বিচার আইন আছে। কিন্তু এই বিচার আরও সংক্ষিপ্ত করে এদের মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। আইনমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান আইন সংশোধন করে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে এদের বিচার ও ফাঁসি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী, ভারতের কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান মিত্র। মুজিববর্ষে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা অবশ্যই মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আসবেন। কোন শক্তি তাদের আসা রুখতে পারবে না। দিল্লীর দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাউকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে দেয়া হবে না। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে কেক কেটে রাজনৈতিক বিভেদ উস্কে দেয়া বিএনপিকে অতীতের ভুল স্বীকার করে ‘মুজিববর্ষে’র কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে অশ্রদ্ধা করেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে যারা কেক কেটেছে- তাদের সঙ্গে কোনদিন আপোস হবে না, হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে বলতে চাই, যদি লজ্জা-শরম থাকে তবে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করুন। জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, নারী-শিশু নির্যাতনের কারণ রাজনৈতিক ও সামাজিক। যারা ভাষা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, ধর্মীয় ওয়াজের নামে নারী বিদ্বেষী বক্তৃতা দিচ্ছে- এদের দমন করতে হবে। জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিতে হবে ওয়াজে নারী বিদ্বেষী কোন কথা, নারীনীতিবিরোধী কোন কথা চলবে না। যারা নারী বিদ্বেষী ওয়াজ করবে তাদের দাঁড়াতে দেবেন না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, আইন করা হয়েছে, আইন বার বার সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু নারী শিশু-ধর্ষণ নির্যাতন বন্ধ হয়নি। ধর্ষণকারীদের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এদের বিরুদ্ধে সমাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
×