ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দারুণ জয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ২ মার্চ ২০২০

দারুণ জয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রবিবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুইয়েকে ১৬৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। এটি ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। এর আগে শ্রীলঙ্কাকে ২০১৮ সালে মিরপুরে ১৬৩ রানে হারিয়ে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এবার নতুন রেকর্ড গড়ল টাইগাররা। আগে ব্যাট করে লিটন দাসের ক্যারিয়ার সেরা ১২৬ রানের সুবাদে ৬ উইকেটে ৩২১ রান তোলে বাংলাদেশ যা জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। জবাবে ৩৯.১ ওভারে ১৫২ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুইয়ের ইনিংস। টানা ৫ ওয়ানডে হারের পর অবশেষে জয় পেল বাংলাদেশ। টানা দুই ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ শেষ করে শ্রীলঙ্কা সফরে গত বছর জুলাইয়ে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৭ মাস পর ওয়ানডেতে ফিরেই জয়ের দেখা পেয়েছে আবার। সাউদাম্পটনে গত বছর ২৪ জুন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬২ রানে সর্বশেষ জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলা একাদশে এদিন ৫ পরিবর্তন। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ছাড়াও ফেরেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। বেশ দেখে শুনেই শুরু করেন তামিম ইকবাল। কিছুটা দ্রুত ছিলেন লিটন। উদ্বোধনী জুটিতে ৬০ রান তোলেন তারা। তামিম ৪৩ বলে ২ চারে ২৪ রান করে অফস্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরের বলে এলবিডব্লিউ হন। দেড় বছর পর খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দ্বিতীয় উইকেটে ৮০ রান তোলেন। তবে শান্তও (৩৮ বলে ২৯) দ্রুত ফিরে গেছেন। এরপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে আরও ৪২ রান যোগ করেন লিটন। ৩৪তম ওভারের প্রথম বলে তিনি ডোনাল্ড তিরিপানোকে চার হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি আদায় করে নেন। তাকে অভিনন্দন জানিয়ে ওই ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক (১৯)। শতক হাঁকিয়ে লিটন আরও ধ্বংসাত্মক হয়েছিলেন। কিন্তু হাঁটু গেড়ে ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস গড়েই ডান পায়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ১০৫ বলে ১৩ চার, ২ ছক্কায় ১২৬ রান করেন তিনি। তবে এরপর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২৮ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ৩২, মোহাম্মদ মিঠুন ৪১ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৫০ ও সাইফউদ্দিন মাত্র ১৫ বলে ৩ ছক্কায় অপরাজিত ২৮ রান করলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩২১ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। শেষ ওভারে সাইফউদ্দিন ৩ ছক্কায় ২১ রান তুলে নেন এমপোফুর বলে। ওয়ানডেতে এটি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওয়ানডে সংগ্রহ। ২০০৯ সালে বুলাওয়েতে ৮ উইকেটে ৩২০ রানের ইনিংস ছিল তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের সর্বাধিক। সার্বিকভাবে ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের অষ্টম সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক সংগ্রহ বাংলাদেশ দলের। বাংলাদেশের বিপক্ষে পরে ব্যাট করে সর্বাধিক ২৬১ রান তুলে জিতেছিল জিম্বাবুইয়ে ১৯৯৯ সালে। তাদের বিপক্ষে এবার সর্বাধিক সংগ্রহ পাওয়াতে অসম্ভব একটি চ্যালেঞ্জেই পড়ে যায় তারা। তাছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে সর্বশেষ ২০১০ সালে ওয়ানডে জিতেছিল তারা স্বাগতিকদের বিপক্ষে, হেরেছে টানা ১৬টি। এত বিরূপ অবস্থান নিয়ে শুরু থেকেই তাদের আরও বিপর্যস্ত করেন সাইফউদ্দিন। অসুস্থতার কারণে শন আরভিন এবং সময়মতো না পৌঁছানোর শন উইলিয়ামসকে ছাড়া খেলতে নেমে ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামে জিম্বাবুইয়ের। শুধু মাধেভেরে ৫ নম্বরে নেমে ৪৪ বলে ৫ চারে ৩৫ রানের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেছেন। এরপরও ৬৫ বল আগেই ১৫২ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সাইফউদ্দিন ৩টি, মাশরাফি ২টি ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি উইকেট নেন। ১৬৯ রানের সবচেয়ে বড় জয় পায় বাংলাদেশ দল।
×