ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ওয়ানডেতে ৪ হাজার রান রিয়াদের

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ২ মার্চ ২০২০

ওয়ানডেতে ৪ হাজার রান রিয়াদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দলের প্রয়োজনে যে কোন পজিশনে ব্যাট করার কথাটা প্রায়ই ক্রিকেটাররা বলে থাকেন। তবে তার জ্বলজ্বলে দৃষ্টান্ত মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ওয়ানডে ক্রিকেটে ওপেনিং ও ১০, ১১ নম্বর ছাড়া বাকি ৭টি পজিশনেই ব্যাট করতে দেখা গেছে তাকে দলের প্রয়োজনে। এভাবেই তিনি বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে চতুর্থ সর্বাধিক রানের মালিক। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রবিবার সফরকারী জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৫ নম্বরে নেমে ২৮ বলে ৩২ রানের একটি ইনিংস খেলেছেন। তাতেই চতুর্থ বাংলাদেশী হিসেবে ওয়ানডেতে ৪ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন তিনি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের তিন ব্যাটসম্যান অবশ্য তারচেয়ে অনেক এগিয়ে। শীর্ষে থাকা তামিম ইকবালের রান ৬৯১৬, সাকিব আল হাসানের ৬৩২৩ ও মুশফিকুর রহিমের রান ৬১১৯। তবে বারবার ব্যাটিং পজিশন বদলে যাওয়াতে সুযোগটা অন্যদের চেয়ে কমই পেয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ২০০৭ সালের জুলাইয়ে কলম্বোয় সেই ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ নেমেছিলেন ৭ নম্বরে, করেছিলেন ৩৬ রান। প্রায় ১ বছর পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৯ নম্বরে নেমে ৩ রানে অপরাজিত থাকেন। পুরো ক্যারিয়ারে সেই একবারই ৯ নম্বরে ব্যাট করেছেন রিয়াদ। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে তার ব্যাটিং পজিশন ৬ ও ৭ নম্বরে ঘোরাফেরা করেছে। তবে হঠাৎ হঠাৎ ৪, ৫ ও ৮ নম্বরেও ব্যাট করেছেন। ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বরে বেশ কয়েকবার দলের প্রয়োজনে ব্যাট করতে হয়েছে রিয়াদকে। অবশ্য গত সাড়ে ৩ বছরে আর কখনই রিয়াদের ব্যাটিং পজিশন ৫-এর ওপরে যায়নি। অধিকাংশ ম্যাচেই ৫ কিংবা ৬ নম্বরে ব্যাট করেছেন তিনি। এবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেছিলেন, ‘আমি তাকে সাদা বলের ক্রিকেটে অনেক বেশি দেখতে চাই। সে সাদা বলের ক্রিকেটে আমাদের অন্যতম মূল খেলোয়াড়।’ একমাত্র টেস্টের দল থেকে তাই বাদ রাখা হয়েছিল তাকে। সে জন্য রবিবার সিলেটে প্রথম ওয়ানডেতে তারদিকে নজর ছিল সবার। ইনিংসের ৩৫তম ওভারে ব্যাট হাতে নামেন তিনি তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিক সাজঘরে ফেরার পর। সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাসের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ২৪ রানের জুটি হওয়ার পর লিটন পায়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়েন। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ৬৮ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন রিয়াদ। ২৮ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ৩২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তবে এই ম্যাচে নামার আগে চতুর্থ বাংলাদেশী হিসেবে ওয়ানডেতে ৪ হাজার রান করতে মাত্র ৬ রান প্রয়োজন ছিল তার। সেই মাইলফলক পেরিয়েছেন এদিন রিয়াদ। রিয়াদ সফলতম ৪ নম্বর পজিশনে। ২০১১ সালের এপ্রিলে মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবার ৪ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেই ৬১ বলে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। কিন্তু সেই একটি ম্যাচের পরই আবার নির্ধারিত ৬ ও ৭ নম্বর পজিশনে চলে যান। ৪ নম্বরে আবার ফেরেন জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ২০১৪ সালে, মিরপুরে হওয়া টানা দুই ওয়ানডেতে যথাক্রমে অপরাজিত ৮২ ও অপরাজিত ৫১ রানের দুটি দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন। এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপে এই পজিশনে তো একেবারে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন শক্তিশালী ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচে ১০৩ ও অপরাজিত ১২৮ রানের ইনিংস খেলে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ নম্বরে প্রায় নিয়মিতই ছিলেন রিয়াদ (মাঝে দুয়েকবার ৫/৬ নম্বরেও নেমেছেন)। সবমিলিয়ে ১৯ ম্যাচের ১৮ ইনিংসে ৪ নম্বর পজিশনে তিনি ৫০.২১ গড় ও ৮০.৩৪ স্ট্রাইকরেটে ৭০৩ রান করেছেন ৬ ফিফটি ও ২ সেঞ্চুরিতে। আর ৫ নম্বর পজিশনে ১৯ ম্যাচের ১৭ ইনিংসে করেছেন ৩৩.১৩ গড়ে ৪৯৭ রান। আছে ৩ ফিফটি। ৬ নম্বরে ৫২ ম্যাচের ৪৫ ইনিংসে ২৯.৯৭ গড়ে ৩ ফিফটি, ১ সেঞ্চুরিতে ১০৯৭, ৭ নম্বরে সর্বাধিক ৮০ ম্যাচের ৭১ ইনিংসে ৩৪.৭১ গড়ে ১৫৯৭ রান ৮ ফিফটিতে এবং ৮ নম্বরে ৬ ম্যাচের ২ ইনিংসে ২০ রান করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে এখন তার ১৮৬ ওয়ানডেতে ১৬১ ইনিংস ব্যাট করে রান ৪০২৬। ৩ সেঞ্চুরি ও ২১ অর্ধশতকে ব্যাটিং গড় ৩৩.৮৩।
×