ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বরিশাল-খুলনা

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ১ মার্চ ২০২০

বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বরিশাল-খুলনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনুর্ধ-১৭) এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনুর্ধ-১৭) বিভাগের চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা শেষ হয়েছে শনিবার। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বালক ও বালিকা বিভাগের খেলা শেষে উভয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বালক বিভাগে বরিশাল ও বালিকা বিভাগে খুলনা। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় খুলনা বিভাগ। বিকেলে অনুষ্ঠিত ফাইনালে খুলনা টাইব্রেকারে ৪-৩ (২-২) গোলে হারায় ঢাকা বিভাগকে। খেলার নির্ধারিত সময়ে রওশন আরার গোলে এগিয়ে যায় ঢাকা বিভাগ। অনিকা খাতুনের গোলে সমতায় ফেরে খুলনা। প্রথমবারের মতো খুলনাকে এগিয়ে দেন উন্নতি খাতুন। যখনই মনে হচ্ছিল খুলনাই জিততে যাচ্ছে কিন্তু তখনই খেলার একদম শেষ পর্যায়ে গোল করে ম্যাচটাকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যান ঢাকার সাদিয়া। টাইব্রেকারের শেষ শটটি নেন ঢাকা বিভাগের রওশন জাহান। গোল করতে পারলে সমান হতো দুই দলের স্কোর, কিন্তু তার শট খুলনার গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেন। এবং শিরোপা জয়ের আনন্দে ফেটে পড়েন। তখন অঝোর ধারায় কান্নায় বুক ভাসায় ঢাকার মেয়েরা। এর আগে সকালে অনুষ্ঠিত বালক বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয় বরিশাল বিভাগ। ফাইনালে তারা ২-১ গোলে হারায় চট্টগ্রামকে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে শেষ হলে ছেলেদের ফাইনাল গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ওই সময়ে গোল করে বরিশালের ছেলেরা জিতে নেয় টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে তৌহিদুলের গোলে চট্টগ্রাম এগিয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর পরপরই। রাশেদুল ইসলামের গোলে বরিশাল সমতায় ফেরে ৬৬ মিনিটে। বাকি সময় কোন দল গোল করতে না পারলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের ১১ মিনিটে বরিশালের গোলাম রাব্বী জয়সূচক গোল করেন। এই আসরের জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধন হয় গত সোমবার। এরপর টুর্নামেন্ট দুটির সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার। বঙ্গবন্ধু অনুর্ধ-১৭ গোল্ডকাপে প্রথম সেমিফাইনালে ময়মনসিংহকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারায় চট্টগ্রাম। আর দিনের দ্বিতীয় সেমিতে খুলনা বিভাগকে ২-০ গোলে হারিয়ে বরিশাল বিভাগ ফাইনাল নিশ্চিত করে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে চট্টগ্রাম বিভাগকে ৪-১ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠে খুলনার মেয়েরা। অন্য সেমিফাইনালে ঢাকা বিভাগ ১-০ গোলে হারায় রংপুর বিভাগকে। ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট টুর্নামেন্টের লোগা এবং ট্রফি উন্মোচন করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলা স্টেডিয়ামে বালক ও বালিকা আসরের উদ্বোধন করা হয়। বালক বিভাগে উপজেলা পর্যায়ে ৪৮২৮টি, জেলা পর্যায়ে ৫৮১টি, বিভাগীয় পর্যায়ে ৬৮টি ও জাতীয় পর্যায়ে ৮টি দলের সর্বমোট ৯৮,৭৩০ খেলোয়াড় এবং বালিকা বিভাগে জেলা পর্যায়ে ৫৮১টি, বিভাগীয় পর্যায়ে ৬৮টি ও জাতীয় পর্যায়ে ৮টি দলে মোট ১১,৮২৬ খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি পর্যায়ে বাছাইকৃত সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করা হয়। ২০১৮ সালে বালক বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রংপুর বিভাগ এবং রানার্সআপ হয়েছিল রাজশাহী বিভাগ। টুর্নামেন্ট থেকে বাছাইকৃত ৪০ প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে বিকেএসপিতে তিন মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখান থেকে ৪ খেলোয়াড়কে ব্রাজিলের গামা ক্লাবে এক মাসের উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া এই ৪০ জনের মধ্যে বাকি ২২ জন বিভিন্ন জাতীয় বয়সভিত্তিক দল, সাইফ পাওয়ার ফুটবল একাডেমি, আবাহনী লিমিটেড, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, পিডব্লিউডি (প্রথম বিভাগ), যাত্রাবাড়ী ক্রীড়া চক্র (প্রথম বিভাগ) এবং শেখ জামাল অনুর্ধ-১৮ দল, বসুন্ধরা অনুর্ধ-১৮ দল, রহমতগঞ্জ অনুর্ধ-১৮ দল, শেখ রাসেল অনুর্ধ-১৮ দল, ব্রাদার্স অনুর্ধ-১৮ দল, মোহামেডান অনুর্ধ-১৮ দল, সিলেট বিকেএসপি, দিলকুশা (দ্বিতীয় বিভাগ) এবং উত্তরা আজমপুর (দ্বিতীয় বিভাগ) ক্লাবে খেলার সুযোগ পেয়েছিল। টুর্নামেন্টের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সহযোগিতায় ক্রীড়া পরিদফতর। প্রতিভাবান বাছাইয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে এবং ওই টুর্নামেন্ট থেকে উঠে আসা ফুটবলারদের খেলার সুযোগ অব্যাহত রাখতে সরকারের দ্বিতীয় প্রকল্প যুবাদের নিয়ে টুর্নামেন্ট। গতবারের মতো এবারও উঠে আসা প্রতিভাবান ফুটবলারদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পাশাপাশি ইউরোপের কোন দেশে পাঠাতে চায় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। পুরস্কারসমূহ বালক বিভাগ * চ্যাম্পিয়ন : বরিশাল (২ লাখ টাকা, ট্রফি ও মেডেল) * রানার্সআপ : চট্টগ্রাম (১ লাখ টাকা, ট্রফি ও মেডেল) * ফাইনাল সেরা খেলোয়াড় : গোলাম রাব্বী (বরিশাল) * সর্বোচ্চ গোলদাতা : গোলাম রাব্বী (বরিশাল) * সেরা গোলরক্ষক : আজগর হোসেন শাহিন (চট্টগ্রাম) * টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় : সাইফুল ইসলাম (বরিশাল) বালিকা বিভাগ * চ্যাম্পিয়ন : খুলনা (২ লাখ টাকা, ট্রফি ও মেডেল) * রানার্সআপ : ঢাকা (১ লাখ টাকা, ট্রফি ও মেডেল) * ফাইনাল সেরা খেলোয়াড় : স্বপ্না রাণী ম-ল (খুলনা) * সর্বোচ্চ গোলদাতা : উন্নতি খাতুন (খুলনা) * সেরা গোলরক্ষক : সুস্মিতা বর্মণ (ঢাকা) * টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় : উন্নতি খাতুন (খুলনা)
×