ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন কে?

প্রকাশিত: ১১:৪০, ১ মার্চ ২০২০

রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন কে?

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ আজ ১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর সম্মেলন। এজন্য আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও শীর্ষ সারির নেতারা আসছেন রাজশাহীতে। এদিকে সম্মেলনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ। সম্মেলন ঘিরে পদপ্রত্যাশী নেতাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। নতুন কমিটিতে পদ পেতে ছোটাছুটি শুরু করেছেন তারা। শেষদিন (শনিবার) পর্যন্ত কেউ ছুটছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চালাচ্ছেন নিজের প্রচার। আবার ফেসবুকেই কেউ কৌশলে অন্য নেতার বিরুদ্ধে চালাচ্ছেন অপপ্রচার। এদিকে সম্মেলন উপলক্ষে এখন নগরীর মোড়ে মোড়ে ঝুলছে রঙিন পোস্টার। প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেছে মাদ্রাসা ময়দান। সম্মেলনকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা সমীকরণও। সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ছাড়া এতদিন অন্য কোন প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। এবারও তিনি সভাপতি হচ্ছে এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন বর্তমান সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ এক ডজনেরও বেশি নেতা। তবে নগরজুড়ে আলোচনা লিটন আর ডাবলুকে ঘিরেই। তৃণমূল চাইছে, তারাই আবার আসুক। এরই মধ্যে প্রচারে আছেন বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুও। সবমিলিয়ে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে শেষ সময়ে এখন ঘরোয়া রাজনীতি তুঙ্গে। সভাপতি পদে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে এবারও অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন নেতাকর্মীরা। কিন্তু সবার চোখ এখন আটকে আছে সাধারণ সম্পাদকের দিকেই। এ পদে কার ভাগ্য খুলছেÑ ঘুরে ফিরে এমন প্রশ্নই নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। তবে রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে অতীতে যারা দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেনÑ এমন কাউকেই এ পদে রাখা উচিত। তবে এবার সাধারণ সম্পাদক পদটি যাচ্ছে কার দখলে- তা নিয়ে সরগরম দলীয় রাজনীতি। কারণ এই শীর্ষ পদটি পেতে চান অন্তত এক ডজন নেতা। তবে এদের মধ্যে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারকে ঘিরেই তৃণমূলে আলোচনা বেশি। কারণ ২০১৪ সালের সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন ডাবলু সরকার। এই ভোটে আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতাও তার কাছে পরাজিত হন। যা মহানগর আওয়ামী লীগের স্মরণকালের রাজনীতিতে রেকর্ড। তার অনুসারীরা বলছেন, ডাবলুর সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে রাজশাহীতে তৃণমূলে আওয়ামী লীগ চাঙ্গা হয়েছে। তিনি প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে শক্তিশালী সাংগঠনিকভিত্তি গড়ে তুলেছেন। নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত সুখে-দুঃখেই পাশে আছেন। ফলে ডাবলুকে ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ ও উদ্দীপনা বেশি। ডাবলু সরকার বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের কাজ শুধু মিটিং-মিছিল করাই নয়। প্রধান কাজ হলো আদর্শভিত্তিক কর্মী তৈরি করা। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের কাজ হলো সরকারের ভাল ভাল কাজগুলো জনগণের সামনে প্রচার করা। দলের পক্ষে জনমত তৈরি করা। সম্প্রতি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে প্রধানমন্ত্রী তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। যা দিয়ে বদলে যাবে রাজশাহী নগরীর চেহারা। এসব সুফলের কথা সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে। তাদের পাশে যেতে হবে। সময় দিতে হবে। বিগত সময়ে এই কাজটিই আমি করেছি। আগামীতেও করব। সাধারণ সম্পাদকের পদে এবার আলোচনায় আছেন ডাবলুর পাশাপাশি বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর নাম। নগরজুড়ে শোভা পাচ্ছে তার রঙিন পোস্টার-ফেস্টুন ও ব্যানার। নেতাকর্মীরা বলছেন, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর পারিবারিক ঐতিহ্য ও রাজনৈতিক কর্মকা-ের সুবাদে মহানগর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তার প্রতি ব্যাপক সমর্থন রয়েছেনগর আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার পিছনে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আজিজুল আলম বেন্টুর বড় অবদান রয়েছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আহসানুল হক পিন্টুর নামও এসেছে। তরুণ নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় আছেন। এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে এবারও থাকতে চান সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। তবে রানিংমেট হিসেবে সাধারণ সম্পাদক পদে কাকে চানÑ তা নিয়ে এখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। তবে ব্যক্তিগতভাবে গভীর সম্পর্ক আছেÑ এমন কাউকেই এ পদে দেখতে তিনি আগ্রহী বলে জানাচ্ছেন লিটনের ঘনিষ্ঠরা। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটন জানান, ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে দলে যারা অনুপ্রবেশ করেছিল, তাদের আর ঠাঁই হবে না এবারের কমিটিতে। এদিকে রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. শাহ্ আজম শান্তনু বলেন, এদেশের একটা বিরাট অংশই তরুণ। এই তরুণ প্রজন্মকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আকৃষ্ট করতে হলে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও তৃণমূলে জনপ্রিয় ব্যক্তিকেই নেতৃত্বে রাখা জরুরী। কারণ প্রযুক্তিনির্ভর এই প্রজন্ম নতুন কিছু চায়।
×