ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা বার নির্বাচন

আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিএনপির

প্রকাশিত: ১১:১৯, ১ মার্চ ২০২০

আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিএনপির

সৈয়দা ইয়াসমিন জেসি ॥ ঢাকা আইনজীবী সমিতির (ঢাকা বার) ২০২০-২১ কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেল। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা। মূলত দুর্বল প্রার্থিতার কারণেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল প্রধান দুইটি পদ খুইয়েছে-এমনটাই বলছেন বিশ্লেষক মহল। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৮ হাজার ১৫০ জন আইনজীবী ভোটারের মধ্যে নয় হাজার ২৯৯ জন ভোটার ভোট দেন। গত শুক্রবার ভোগগণনা শুরু হয়। শনিবার ভোররাত পর্যন্ত গণনা শেষে সকালে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ২৩টি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সাদা প্যানেল নিয়ে এবং বিএনপি সমর্থিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ঐক্য প্যানেল নীল প্যানেল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সাদা প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মোঃ মোশাররফ হোসেনকে হারিয়ে নীল প্যানেলের মোঃ ইকবাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলের মোঃ আহসান তারিককে হারিয়ে নীল প্যানেলের মোঃ হোসেন আলী খান (হাসান) জয়লাভ করেন। কোষাধ্যক্ষ পদে নীল প্যানেলের আবদুল আল মামুন ও দফতর সম্পাদক পদে এইচ এম মাসুম নির্বাচিত হয়েছেন। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, দফতর সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী কমিটির ছয়টি অর্থাৎ ২৩টি পদের দশটিতে নির্বাচিত হন বিএনপি সমর্থিত নীল দলের প্রার্থীরা। ১৩ পদে জয় পায় আ’লীগ সমর্থিত প্যানেল। ২০১৯-২০২০ কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে ২৭টি পদের মধ্যে সাদা প্যানেল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮টি পদে এবং নীল প্যানেল ৩টি সম্পাদকীয় পদসহ ৯টি পদে জয় লাভ করে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির গতবছরের নির্বাচন কমিশনার এ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান বলেন, এবারের নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের মূল কারণ হচ্ছে প্রার্থিতা। মোঃ হোসেন আলী খান হাসান এ নিয়ে মোট পাঁচবার নির্বাচন করেছেন। ফলে সাধারণ আইনজীবীদের মধ্যে তিনি অতি পরিচিত মুখ। এর মধ্যে তিনি তিনবার বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে এবং দুইবার প্যানেল থেকে সমর্থন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। বারবার নির্বাচন করেও জিততে না পারার কারণেও তার প্রতি কারও কারোর সহানুভূতি ছিল। এ্যাডভোকেট মোঃ ইকবাল হোসেনও পরিচিত মুখ। এ নিয়ে দুইবার তিনি বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচন করেছেন। এ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০০৩ সালের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯ সালের সভাপতি। এছাড়াও তিনি বার কাউন্সিলের নেতা। জনকণ্ঠকে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সভাপতি প্রার্থী আরেকটু শক্তিশালী হওয়ার প্রয়োজন ছিল। আমরা তা দিতে পারিনি নানা রকম হিসাব-নিকাশ থেকে। এছাড়া আমাদের সেক্রেটারি প্রার্থী বরিশালের আঞ্চলিক সমিতির ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে কিছু ভোটে পিছিয়ে পড়েন। মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘মাথা দুর্বল হয়ে গেলে পুরো প্যানেলটা আসা কঠিন। স্বীকার করতেই হবে আমাদের সভাপতি প্রার্থী অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছিল। মূলত প্রার্থী দুর্বলতার কারণেই আমরা সভাপতি-সেক্রেটারি এবং ট্রেজারার পদ পাইনি। যেমন আমি ২০০৩ সালে যখন সাধারণ সম্পাদক হই তখন পুরো প্যানেল জিতেছিল।’ নীল প্যানেলের মোঃ ইকবাল হোসেন সভাপতি পদে ৪ হাজার ৯৫২ ভোট পেয়ে সাদা প্যানেলের মোঃ মোশারফ হোসেনকে ৭৩৭ ভোটে পরাজিত করেছেন। নীল প্যানেলের মোঃ হোসেন আলী খান হাসান সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ হাজার ৭২৫ ভোট পেয়ে সাদা প্যানেলের মোঃ আহসান তারিরকে ৩০২ ভোটে পরাজিত করেন। নীল প্যানেলের অন্যান্য পদে বিজয়ীরা হলেন, কোষাধ্যক্ষ পদে আব্দুল আল মামুন ও অফিস সম্পাদক পদে এইচএম মাসুম, সদস্য পদে ইয়াছিন মিয়া, কাজী আফরোজা সুলতানা (ইভা), মোঃ আব্দুল বাসেত রাখী, আজহার উদ্দিন রিপন, মোঃ তানভীর হাসান সোহেল ও সাদেকুল ইসলাম ভূইয়া (জাদু)। সাদা প্যানেলের বিজয়ীরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মোঃ আবদুল কাদের, সহ-সভাপতি পদে মোঃ ইমাম হোসেন মঞ্জু, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে একেএম হাবিবুর রহমান চুন্নু, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সিকদার মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান হিমেল, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মোঃ আতাউর রহমান খান (রুকু), সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে তাসলিমা আক্তার রীতা, ক্রীড়া সম্পাদক পদে সাইফুল ইসলাম সুমন ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে মোহাম্মাদ খালেদুর রহমান, সদস্য পদে এএইচএম শফিকুল ইসলাম সোহাগ, মোঃ সাব্বির হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মোঃ মেহেদী হাসান মেরিন এবং মোঃ রমজান আলী সরদার রানা।
×