ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে শুক্রবার পালিত হয়েছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। দিবসটি উপলক্ষে পালিত কর্মসূচীগুলোর মধ্যে ছিল র‌্যালি, সচেতনতামূলক পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ, আলোচনা সভা ও বিনামূল্যে ডায়াবেটিস নির্ণয়। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ডায়াবেটিস এমন এক রোগ, স্বাস্থ্যশিক্ষাই যার প্রধান চিকিৎসা। যথাযথ স্বাস্থ্যশিক্ষা পেলে একজন ডায়াবেটিক রোগী চিকিৎসকের ওপর নির্ভর না হয়ে এ রোগ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। শতকরা ৭০ ভাগ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। ইচ্ছে থাকলেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে মহামারি আকারে ডায়াবেটিস ছড়িয়ে পড়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ‘ ইনসুলিন যার দরকার ইনসুলিন তার অধিকার ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস পালন করে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। কর্মসূচির মধ্যে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় বারডেম কার পার্কিং থেকে রমনা পার্কের গেট পর্যন্ত পদযাত্রা, সাড়ে ১০টায় বারডেম অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এছাড়াও সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত রমনা পার্ক, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরসহ এনএইচএন ও বিআইএইচএস-এর বিভিন্ন কেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়। ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ,এমপি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমিতিরি সহসভাপতি এ আর খান, মহাসচিব মো. সাইফউদ্দিন প্রমুখ। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির উপর জোর দিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবার অনেক উন্নতি হয়েছে। দেশের মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিসের ওপর সচেতনতা বাড়াতে হবে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সরকারি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে জীবন-যাপন পদ্ধতি ও খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে ডায়াবেটিস মহামারী আকার ধারণ করছে। ডায়াবেটিস যে হারে বাড়ছে তাদে আমাদেরকে এখনই এ রোগ প্রতিরোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। আর যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের সচেতন করে তুলতে হবে, যাতে তারা ডায়াবেটিসকে সুনিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ, স্বাভাবিক ও কর্মঠ জীবন নিশ্চিত করতে পারে। ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান বলেন, বর্তমানে যেসব রোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডায়াবেটিস একটি ভয়াবহ রোগ। কায়িক পরিশ্রমের অভাব, মুটিয়ে যাওয়া, ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্যের অভ্যাস ইত্যাদি কারণে দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিসের কারণগুলো মানুষকে জানাতে হবে, সচেতন করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস ও শ্রম অভ্যাস সম্পর্কে ব্যাপক সচেতন থাকতে হবে। সমিতির মহাসচিব মো. সাইফউদ্দিন ডায়াবেটিস সম্পর্কে পাঠ্যপুস্তকে একটি অধ্যায় সংযোজনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এতে ছাত্রছাত্রীরা সুস্থ জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারবে। ডায়াবেটিসের ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। কোন রোগীর ডায়াবেটিস থাকলে তাঁর চিকিৎসা ডায়াবেটিসমুক্ত রোগীর তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি ব্যয় বহুল হয়ে থাকে। শতকরা ৭০ ভাগ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। ইচ্ছে থাকলেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস এবং শহরাঞ্চলে খেলাধুলার সুযোগ কমে যাওয়ায় শিশু-কিশোরেরাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি ডায়াবেটিস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার প্রক্রিয়ায় তরুণদের সম্পৃক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন।
×