ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অংশ নিচ্ছে বিশ্বখ্যাত ৪৮ মার্কিন কোম্পানি, চলবে কাল পর্যন্ত

ঢাকায় এক ছাদের নিচে বসেছে ইউএস ট্রেড শো

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 ঢাকায় এক ছাদের নিচে বসেছে ইউএস ট্রেড শো

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোমলপানীয় কোকাকোলা থেকে শুরু করে মাইক্রোসফটের মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানিকে একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে ইউএস ট্রেডশোতে। যুক্তরাষ্ট্রের সব বড় বড় মার্কিন কোম্পানি ঢাকার সোনারগাঁ হোটেলের এক ছাদের তলায় বসে সেবা দিচ্ছে। রাজধানী ঢাকার দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন থরে থরে সাজানো আমেরিকার তৈরি কসমেটিক্স জর্দানা, কালারম্যাক্স কসমেটিক্স, জনসন এ্যান্ড জনসনের মতো পণ্যসামগ্রী। আরও আছে এক্সন মবিল কর্পোরেশন, মাস্টার কার্ড, আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি (মেটলাইফ), বিশ্বখ্যাত ফাস্টফুড কোম্পানি ইয়াম! রেস্টুরেন্ট ইন্টারন্যাশনালসহ ৪৮ কোম্পানি। এছাড়া ভিসা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড পিটিই লিমিটেড, ট্রান্সফাস্ট, পেপসিকো ইন্টারন্যাশনালসহ ইউএস সরকারী প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে এই ট্রেডশোতে। ঘুরে দেখার পাশাপাশি দর্শনার্থীরা পছন্দমতো পণ্য কিনতে কিংবা অর্ডার দিতে পারছেন। সব মার্কিন পণ্য একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে বলে উদ্বোধনের পরই জমে উঠেছে ট্রেডশো। তিনদিনের এই ট্রেডশো চলবে আগামীকাল ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এদিকে বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (এ্যামচেম) ও বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে এই ২৭তম ইউএস ট্রেডশো হচ্ছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স জোনি ওয়ানগার, এ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, বিডার নির্বাহী পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ইউএস ট্রেডশোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ এদেশে আরও বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয়, মার্কিন পণ্যসামগ্রী সম্পর্কেও এদেশের মানুষ একটি ধারণা পাবে ট্রেডশোয়। এবারের ট্রেডশোতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, জনসন হপিং ইউনিভার্সিটি, নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, পেনিসেলভানিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস প্রভৃতি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা বলছেন, বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তাদের আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এসব বিশ্ববিদ্যালয় বেশি বেশি ছাত্রছাত্রী প্রত্যাশা করছে। টিউশন ফিসহ নানা ধরনের সুযোগ সুবিধার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে। বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাণিজ্য ব্যবস্থার উদারীকরণ করা হয়েছে এবং নন শুল্ক বিধিনিষেধকে উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিল্পনীতি ২০১৬-এ দেশের সর্বত্র বিশেষত রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসমূহে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিশেষ ইনসেন্টিভ ও সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। নীতিতে জ্বালানি, অবকাঠামো, যোগাযোগ, কৃষি ব্যবসা, আইসিটি, শিক্ষা, পর্যটন, রিয়েল এস্টেটসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রচুর সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ৫২তম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। ’১৯ সালে মোট বাণিজ্য ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি ধীরে ধীরে কমে আসছে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বৈচিত্র্যময় শিল্প খাতে বিদ্যমান বিশাল সম্ভাবনা অনুসন্ধানে সরকার একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। সেই সঙ্গে রাসায়নিক, প্লাস্টিক, চামড়া, সিরামিক, অটোমোবাইল, খাদ্য ও অন্যান্য অনেক শিল্প স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। শিল্পমন্ত্রী দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে দুদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্য পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান। ইউএস ট্রেডশো দুদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রতিদিন ট্রেডশো সকাল দশটা থেকে শুরু হয়ে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে। এবার দর্শনার্থীদের জন্য ত্রিশ টাকার প্রবেশ টিকেট করা হয়েছে। তবে ছাত্রছাত্রী শিক্ষার্থীদের টিকেট লাগবে না।
×