ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা ক্লাবে বিয়ের অনুষ্ঠানে গণহারে মোবাইল চুরি, আটক ২, উদ্ধার ৫ সেট

সৌম্য সরকারের আজ বৌ-ভাত

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 সৌম্য সরকারের আজ বৌ-ভাত

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ ক্রিকেট মাঠের ২২ গজে অনেক ইনিংস খেলেছেন সাতক্ষীরার কৃতী সন্তান অলরাউন্ডার সৌম্য সরকার। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন বারবার। জাতীয় দলের কৃতী এ খেলোয়াড় এবার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন। বুধবার রাতে খুলনা ক্লাবে জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন। তার নতুন ইনিংসের জীবনসঙ্গী হলেন প্রিয়ন্তি দেবনাথ পূজা। বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নববধূকে নিয়ে তিনি ফিরে গেছেন সাতক্ষীরা শহরের মধ্যকাটিয়ার নিজ বাড়িতে। আজ শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরা শহরের মোজাফ্ফর গার্ডেনে বৌ-ভাত ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার রাতে বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে প্রায় পাঁচ শ’ বরযাত্রীর বহর নিয়ে সৌম্য সরকার খুলনা ক্লাবে আসেন। সেখানে কনেপক্ষ বরযাত্রীদের বরণ করে নেন রঙ-বেরঙের ফুল ও ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে। এর আগে বিকেলে সাতক্ষীরা থেকে কয়েকটি প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও বাসের বহরে বরযাত্রী নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। সনাতন ধর্মীয় রীতি-নীতি মেনে রাত ১০টার দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। রাত ১১টায় অগ্নিসাক্ষী রেখে বিয়ে ম-পে সাত পাক ঘোরেন বর-কনে দু’জন। এরপর একে অপরে মালা বদল করেন। এ সময় বাজনা আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে বিবাহ আসরসহ চারদিক। উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয় বিয়ে। দুই পরিবারের নিকট আত্মীয়রা আশীর্বাদ করেন নবদম্পতিকে। সৌম্য সরকারও সকলের উদ্দেশে তাদের নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা করেন। প্রিয়ন্তি দেবনাথের বাবা গোপাল দেবনাথ পেশায় ব্যবসায়ী ও মা মাধবী দেবনাথ গৃহিণী। তাদের বসবাস খুলনা মহানগরীর টুটপাড়া এলাকায়। পূজা বর্তমানে ও’ লেভেল পড়ছেন ঢাকার একটি কলেজে। তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। সৌম্য সরকারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরী মোহন সরকার। মা নমিতা রাণী সরকার গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে সৌম্য ছোট। এদিকে বিবাহ অনুষ্ঠান চলাকালে মোবাইল ফোন চুরিকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। সৌম্যর বাবা কিশোরী মোহন সরকার, বরযাত্রী শিল্পপতি দ্বীনবন্ধু মিত্র ও সৌম্যর বন্ধু অলিসহ তার স্বজনদের সাতটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। ধারণা করা হয় প্রচন্ড ভিড় ঠেলে গেট থেকে ঢোকার সময় এই ফোনগুলো চুরি হয়। এ ব্যাপারে সৌম্যর মেঝ ভাই ইনকাম ট্যাক্সের ডেপুটি কমিশনার প্রণব কুমার সরকার খুলনা ক্লাবের কর্মচারীদের মোবাইল ফোন চুরির বিষয়ে অবহিত করেন। এ সময় ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা। আধাঘণ্টা ধরে বাকবিতন্ডার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি বলেন, মোবাইল ফোন চুরি হওয়ার পর হারানো মোবাইল ফোনে কল দেন সৌম্যের স্বজনরা। তখন একজনের কাছে থাকা মোবাইল ফোন বেজে ওঠে। তাকে ধরলে তার কাছে ৫টি সেট পাওয়া যায়। এ নিয়ে গ-গোলোর সূত্রপাত হয়। এদিকে ঘটনার পর খুলনা ক্লাবে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের ঊর্ধতন লোকজন সৌম্যের অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল বলেন, মোবাইল ফোন চুরিকে কেন্দ্র করে খুলনা ক্লাবের স্টাফ ও বরপক্ষের লোকদের সঙ্গে উত্তেজনার সৃষ্টি হলেও সেখানে কাউকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তবে ভিড়ের মধ্যে কারও কারও গায়ে ধাক্কা লাগতে পারে। দুই চোরকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
×