ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ে ওয়ানডে দল সিলেটে

নাঈম শেখ ও আফিফের বড় স্বপ্ন

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  নাঈম শেখ ও আফিফের  বড় স্বপ্ন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছেন নাঈম শেখ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। টি২০তে নিজেদের মেলে ধরলেও ওয়ানডে ও টেস্ট খেলা হচ্ছিল না ওপেনার নাঈম ও স্পিন অলরাউন্ডার আফিফের। টেস্টে এখনও সুযোগ মিলেনি। তবে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে রবিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দলে ডাক পেয়েছেন এ দুই তরুণ ক্রিকেটার। রবিবার প্রথম, ৩ মার্চ মঙ্গলবার দ্বিতীয় ও ৬ মার্চ শুক্রবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে লড়াই করবে দুই দল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচগুলো হবে। এ জন্য দুই দলই বৃহস্পতিবার সিলেট চলে গেছে। দুপুরে জিম্বাবুইয়ে দল ও সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দল সিলেটে গেছে। আজ থেকে দুই দলের ক্রিকেটাররা ওয়ানডে সিরিজের জন্য অনুশীলনেও নামবেন। প্রথম দুই ওয়ানডের জন্য দলে আছেন নাঈম ও আফিফ। তাদের চোখে বড় স্বপ্নই আছে। সিলেট যাওয়ার আগে নাঈম শেখ যেমন বলেছেন, ‘ভাল লাগছে, ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছি। স্যারদের সঙ্গে কথা হয়েছিল, যখন জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে বিসিবি একাদশের খেলা হচ্ছিল, তখন বলেছিল সাদা বলে অনুশীলন করতে সামনে খেলা আছে। কথা হয়েছে আগেই। সাদা বলের খেলা খুব উপভোগ করি। লাল বল সম্প্রতি খুব একটা ভাল সময় যায়নি। বাড়িতে গিয়ে সাদা বলে কাজ করেছি। কিছু জিনিস আমাকে বলে দেয়া হয়েছে কাজ করার জন্য। এসব নিয়েই কাজ করছি। প্রস্তুতি সবমিলিয়ে ভাল। মূল একাদশে যদি সুযোগ পাই, আমার শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করব।’ আফিফও নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘অনেকদিন থেকেই রোমাঞ্চিত অনুভব করছিলাম, টি২০ খেলছি, ওয়ানডেতে কবে ডাক পাব। আশাটা পূরণ হয়েছে। চেষ্টা করব দলের জন্য ভাল কিছু করার। সুযোগ হলে সেরা পারফর্মেন্স করার। দল যে পরিকল্পনা করবে, যে দায়িত্ব আমাকে দেবে, সেই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব।’ নাঈম চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলাটা উপভোগ করেন। টি২০তে সুযোগ পেয়েই নিজেকে ধীরে ধীরে মেলে ধরেন। ভারতের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে তো ৮১ রানের ইনিংসও উপহার দেন। এবার ওয়ানডেতে নিজের যোগ্যতা দেখানোর পালা। নাঈম জানান, ‘চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলার ব্যাপারটা মজা লাগে আমার কাছে। সব সহজে হয়ে গেলে ভাল লাগে না। চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলাটা উপভোগ করি। সিনিয়র ভাইদের সঙ্গে খারাপ-ভাল এসব নিয়ে আলোচনা হয়। চাপের মুহূর্তগুলো কিভাবে সামলাতে হয় এসব নিয়ে কথা হয়।’ নিজেকে ভাগ্যবানও মনে করছেন নাঈম। মাশরাফি বিন মর্তুজার অধীনে যে খেলতে পারবেন। সঙ্গে অতীত নিয়ে পরে থাকতে তিনি রাজি নন। বর্তমান নিয়েই থাকতে চান। তিনি বলেছেন, ‘ভাগ্যবান আমি। মাশরাফি ভাইয়ের অধীনে খেলতে পারছি। এখন সামনে যা আছে এসব নিয়ে ভাবছি। যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি সেটা কাজে লাগানোর চিন্তা করব। এতকিছু তো স্বপ্ন দেখতাম না। জাতীয় দলে খেলব, এতো কিছু চিন্তা করতাম না। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই ধাপে ধাপে চিন্তা করেছি, কিভাবে খেলা উচিত।’ সাদা বলের ক্রিকেটে নাঈম ভালভাবেই নিজেকে জুড়ে নিয়েছেন। কিন্তু লাল বলের ক্রিকেটে এ মুহূর্তে নিজেই খেলার জন্য প্রস্তুত নন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি যখন অনুর্ধ-১৯ খেলে এসেছি, তার আগে লাল বলে খেলে এসেছি। মাঝে অনেক বড় একটা বিরতি ছিল। লাল বল নিয়ে কাজ করা হয়নি। অনুশীলন করলে ঠিক হয়ে যাবে। ছোট ছোট ভুল হচ্ছে, এজন্য আমি লাল বলে সফল না। আমার লাল বলে আরও বেশি অনুশীলন করা দরকার। এগুলো (টেস্ট দলে খেলা) নিয়ে এখনও চিন্তা করিনি। যা আছে সামনে সেসব নিয়ে ভাবছি।’ আফিফ তো শুধু নিজের নৈপুণ্যের দিক নিয়েই ভাবছেন না, জিম্বাবুইয়েকে ধবলধোলাই করার দিকেই মনোযোগী তিনি। আফিফ বলেছেন, ‘আমার মনে হয় সমস্যা হওয়ার কথা না। কারণ সবাই অনুশীলনের মধ্যে আছে, খেলার মধ্যে আছে। আশাকরি ভাল করতে পারবে। আমাদের সেরা ক্রিকেট খেললে অবশ্যই ধবলধোলাই সম্ভব।’ টি২০তে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সেপ্টেম্বরে নিজেকে চেনান আফিফ। ৫২ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতান। এরপর অবশ্য এমন নৈপুণ্য দেখা মিলেনি। এবার ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়েছেন। দেখা যাক কেমন করেন। টি২০তে নিচের দিকেই ব্যাটিং করার সুযোগ হয় আফিফের। ওয়ানডেতে একাদশে থাকলে তাই নিশ্চয়ই হবে। আফিফ ব্যাটিং পজিশন নিয়ে ভাবছেন না। তিনি নৈপুণ্য নিয়েই ভাবতে রাজি, ‘সেটা নির্ভর করে ব্যাটিং অর্ডারের ওপর। যদি ওপরে ব্যাট করি তাহলে অবশ্যই সময় নিয়ে খেলা যাবে। নিচে খেললে দল যখন যেটা চাইবে সেই অনুযায়ী খেলব। সুযোগ পেলে প্রতি ম্যাচ ধরে ধরে মনোযোগ দিয়ে খেলার চেষ্টা করব। বাড়তি চাপ কাজ করে না। আমাদের দল ভাল দল। মাশরাফি ভাইও ফিরছে। সবমিলিয়ে আমাদের খেলা খেলতে পারলে ভালই হবে।’ টি২০’র পর যখন ওয়ানডেতেও সুযোগ পেয়েছেন, এই সুযোগে জায়গা ধরে রাখার চেষ্টাই করবেন আফিফ। তাই বলেছেন, ‘অবশ্যই ভাল, আমরা অনেক জুনিয়ররা সুযোগ পাচ্ছি। এখানে ভাল কিছু করে জায়গা ধরে রাখতে পারলে ভাল হবে।’ নাঈম শেখ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব খেলার সুযোগ পেলেই নিজেদের আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে চান। বড় স্বপ্ন নিয়েই খেলতে নামবেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবও করতে চান।
×