ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজার উন্নয়নের পূর্বশর্ত আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পুঁজিবাজার উন্নয়নের পূর্বশর্ত আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোম্পানির আর্থিক বিবরণীর তথ্যে যদি গলদ থাকে, তাহলে কোনদিন এপিসিয়েন্ট (কার্যকর) মার্কেট গড়ে উঠবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের এরিয়া অব কাভারেজ (পরিসর) বাংলাদেশ ব্যাংকের চেয়েও অনেক বড়। তারা শুধু ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন নিয়ে কাজ করে। তাদের সেখানে ৭ থেকে ৮ হাজার লোকবল রয়েছে। অথচ আমাদের মাত্র ৮৪ অফিসার। আর পিয়ন ও দারোয়ান নিয়ে আমরা ১৬০ জন কাজ করি।’ বুধবার বিএসইসির কনফারেন্স কক্ষে ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টস এ্যানালাইসিস এ্যান্ড ডিটেকশন অব ফ্রড’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা একদিকে শক্তিশালী, অন্যদিকে অসহায়। একটা রেগুলেটরে মাত্র ৮৪ অফিসার। আর পিয়ন ও দারোয়ান নিয়ে আমরা ১৬০ জন কাজ করি। আমাদের এরিয়া অব কাভারেজ বাংলাদেশ ব্যাংকের চেয়েও অনেক বড়। তারা শুধু ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন নিয়ে কাজ করে। তাদের সেখানে ৭ থেকে ৮ হাজার লোকবল রয়েছে। আমরা ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, স্টক এক্সচেঞ্জ, এসেট ম্যানেজমেন্ট, ফার্ম ম্যানেজার এবং ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি থেকে শুরু করে আন-লিস্টেড কোম্পানির সবাইকে কাভার করতে হয়। অথচ আমাদের লোকবল মাত্র ৮৪ জন। অর্গনোগ্রাম হচ্ছে, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে। কিন্তু এখনও লোকবল নিয়োগ করার পর্যায়ে আমরা পৌঁছাইনি।’ তিনি বলেন, ‘কোম্পানির মধ্যে অডিট কমিটির প্রধান হবেন একজন স্বাধীন পরিচালক, সিএফওয়ের দায়িত্ব কী, এমডির দায়িত্ব কী, চেয়ারম্যানের দায়িত্ব কী, অডিটরের দায়িত্ব কী- এসব কিছু নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এরপরে ডিসক্লোজার ভিত্তিতে আইপিও দেয়ার পরেও সমস্ত দোষ পড়ে কমিশনের ওপর। সেকেন্ডারি মার্কেট পড়ে গেলেও কমিশনকে দোষারোপ করা হয়। অথচ আমাদের কোন বিনিয়োগ নেই। আমরা কারসাজি হলে ধরি, ডিমান্ড-সাপ্লাই ঠিক রাখি এবং এখানে যদি কেউ রিউমার (গুজব) ছড়ায় তাদের আইনের আওতায় আনি। তারপর মার্কেট ওঠানামা করার জন্য আমাদের সমস্ত দোষ দেয়া হয়। রেগুলেটের হিসেবে এখানে অসহাত্ববোধ আমাদের।’ বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যখন আমার আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) আনি, যে বার্নিং ইস্যুটা সবার সামনে চলে আসে। এখানে অনেক জাটলারি হয়, সেগুলো যাতে তারা আইপিও আসার আগেই ধরতে পারে, তাতে করে রেগুলেটররা অর্থাৎ আমরা অনেক শক্তিশালী হবো, বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে এবং পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার দিকে যাবে, শক্তিশালী হবে। আল্টিমেটলি এপিসিয়েন্ট একটা মার্কেট গড়ে তুলতে আমার অনেকটা সমর্থন হবে। কারণ ইনফরমেশনে যদি গলদ থাকে কোনদিন এপিসিয়েন্ট মার্কেট গড়ে উঠবে না।’ ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট এ্যানালাইসিসের ওপর গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবাদিকদের প্রাধান্য দিয়ে আজকে এই মিটিংটি (সভা) আয়োজন করেছি। আমি বার বার বলি- সমাজে, ক্যাপিটাল মার্কেটে (পুঁজিবাজার) এবং অর্থনীতিতে কী ঘটছে এগুলোকে জনগণের সামনে তুলে ধরার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো সাংবাদিকরা।’ সাংবাদিকদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং ক্লিয়ার করার জন্যই আজকের এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
×