ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেই কেপটাউনে স্মিথ-ওয়ার্নার

প্রকাশিত: ১২:১১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সেই কেপটাউনে স্মিথ-ওয়ার্নার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়ার চলতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যতটা না মাঠের ক্রিকেট, তারচেয়ে ঢের বেশি আলোচনায় স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ২০১৮ সালে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ে জড়িয়ে পড়েন দুই তারকা। সঙ্গে ক্যামেরন ব্যানক্রফটও। এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন সে সময়ের অধিনায়ক স্মিথ এবং সহ-অধিনায়ক ওয়ার্নার। তাতে অস্ট্রেলিয়া তো বটেই গোটা বিশ্ব ক্রিকেটই কেঁপে উঠেছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে ফিরে সমানে দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন দু’জনে। তবে এ্যারন ফিঞ্চের নেতৃত্বে ওই ঘটনার পর এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করছেন তারা। প্রথম টি২০তে দাপুটে জয় পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে হারতে হয় অসিদের। সেই কেপটাউনে আজ ফয়সালার শেষ লড়াই। দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রেখেই ওয়ার্নার জানিয়েছেন, প্রোটিয়াদের কাছ থেকে ‘একটু’ ভাল ব্যবহার চান। তবে দর্শক দুয়ো আর শ্রোতের বিপরীতে তুখোড় দুই ব্যাটসম্যান যে আরও বেশি ভয়ঙ্কর সেটি কিন্তু ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে এবং ঐতিহ্যের এ্যাশেজেই দেখা গেছে। ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি এসবের কিছুই মনে রাখিনি। রান করে দলকে জেতানোর চেষ্টা করব। নিজেদের ভাল অবস্থানে নিয়ে আসার চেষ্টা করব। পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা একটু সম্মান প্রত্যাশা করব। এর আগেও এখানে যখন ছিলাম তখন আমাদের দারুণ আপ্যায়ন করা হয়েছিল।’ দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রাখার ঠিক আগ মুহূর্তে বলছিলেন ওয়ার্নার। সফরে এরই মধ্যে দুটি টি২০ হয়ে গেছে, এখন পর্যন্ত বাজে কিছু ঘটেনি। স্টিভেন স্মিথ যেমন বলছেন, ‘কোন সন্দেহ নেই, কোন সন্দেহ নেই..., আমি মনে করেছিলাম তারা আমাদের প্রতি খুবই বাজে আচরণ করবে অন্তত এই সফরে। এটা আমাকে খুব বেশি বিরক্তও করবে না হয়তো; কিন্তু এ ধরনের কোন কিছুরই মুখোমুখি হইনি।’ জোহানেসবার্গে এ্যাস্টন এ্যাগারের হ্যাটট্রিক ও দুরন্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ১০৭ রানের বিশাল জয়ে সফর শুরু করেছিল ফিঞ্চের অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার ৪ রান করে ফিরলেও সেদিন ৪৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন স্মিথ। পোর্ট এলিজাবেথে ১২ রানে হেরে যাওয়া দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৬ বলে অপরাজিত ৬৭ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেও দলকে রক্ষা করতে পারেননি ওয়ার্নার। আলোচিত কেপটাউনে আজ দর্শক কেমন আচরণ করে সেই প্রশ্ন থাকছেই। প্রোটিয়াদের কাছ থেকে ‘একটু’ ভাল ব্যবহার প্রত্যাশা করলেও ওয়ার্নারের জন্য এটা তেমন কোন সমস্যা নয়। ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তনের বিশ্বকাপ এবং ঐতিহ্যের এ্যাশেজেও বিরূপ পরিবেশে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন তুখোড় এই অসি ওপেনার। সেটি স্মরণ করে তিনি আরও যোগ করেন, ‘ইংল্যান্ডে আমি মানিয়ে নিতে পেরেছিলাম। আসলে আমি তা (দর্শক-বৈরিতা) উপভোগই করেছি এবং সেসব সঙ্গে নিয়েই খেলেছি।’ ২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন স্মিথ ও ওয়ার্নার। এরপর থেকে বেশ কয়েকবার প্রতিপক্ষের দুয়োধ্বনির শিকার হন এই দুজন। সেসবের তোয়াক্কা না করেই অসাধারণ পারফর্মেন্স করেন ওয়ার্নার। বিশ্বকাপের পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের মাটিতে ঐতিহ্যের এ্যাশেজ সিরিজে (টেস্ট) একের পর এক নজরকাড়া ইনিংস খেলেন স্মিথ। বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের কাছে ৩-১ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হারলেও ওয়ানডে-টি২০তে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নতুন অধিনায়ক কুইন্টন ডি ককের দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম ম্যাচে বাজে হারের ধাক্কা তারা কাটিওয়ে ওঠে দ্বিতীয় ম্যাচেই। ফর্মের তুঙ্গে থাকা ডি কক ৪৭ বলে ৭০ রানের চমৎকার ইনিংস খেলে হন ম্যাচসেরা। এ বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি২০ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে দলে ফেরানো হয়েছে অভিজ্ঞ পেসার ডেল স্টেইন এবং নেতৃত্ব হারানো ফ্যাফ ডুপ্লেসিসকে। ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে আরেক তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্সেরও। আইসিসি টি২০ র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় আর দক্ষিণ আফ্রিকা আছে পঞ্চম স্থানে। শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার রেটিংয়ের ব্যবধান মাত্র ২।
×