ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও দৃঢ় হবে

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও দৃঢ় হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনব্যাপী ইউএস ট্রেড শো-২০২০ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ট্রেড শো’তে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮টি কোম্পানি প্রায় ১০০ ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণ করছে। গতবারের চেয়ে এবারের শো’তে যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি নতুন কোম্পানি নতুনভাবে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। এই ট্রেড শো’র মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। মঙ্গলবার প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ইউএস ট্রেড শো-২০২০ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ও ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস যৌথভাবে এ শো আয়োজন করছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স মিস জোয়ানি ওয়াগনার। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (এ্যামচ্যাম) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিন দিনব্যাপী ইউএস ট্রেড শো অনুষ্ঠিত হবে ২৭-২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বাংলাদেশী ভোক্তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব উচ্চমানের সর্বাধুনিক আমেরিকান পণ্য ও সেবা সরবরাহ করতে পারে, এই ট্রেড শোতে সেগুলো তুলে ধরা হবে। এই শো বাংলাদেশের প্রশংসনীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের অবদান তুলে ধরে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর, প্রশস্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকার করে। এতে জ্বালানি, কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ এবং খাদ্য ও পানীয় খাতসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮টি কোম্পানি এখানে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে। এছাড়া ট্রেড শো চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস চারটি তথ্যবহুল সেমিনারের আয়োজন করবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও ওয়ার্ক ভিসাসহ বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে আলোচনা করবেন দূতাবাস কর্মকর্তারা। একইদিন বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়ন ও এডুকেশন ইউএসএ এ্যাডভাইসিং সেন্টারগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে দূতাবাসের দেয়া অধ্যয়ন বিষয়ক বিনামূল্যের পরামর্শ সেবা বিষয়ক একটি অধিবেশন। আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা (ইউএসএআইডি) ‘বাংলাদেশে বেসরকারী খাতের সুযোগসমূহ’ শিরোনামে একটি আলোচনার আয়োজন করবে। একই দিন বিকেল ৫টায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বেসরকারী খাতের প্রতিনিধিরা আমেরিকার ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক অভিলক্ষ্য বিষয়ে আলোচনা করবেন। ঢাকায় বার্ষিক ইউএস ট্রেড শোতে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এই অংশগ্রহণ বাংলাদেশের নিরন্তর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে বাজারভিত্তিক অর্থনীতি ও পারস্পরিক বাণিজ্যনীতির ওপর ভিত্তি করে একটি মুক্ত এবং ন্যায্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তুলতে জোরালো অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার তুলে ধরা হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে সৈয়দ এরশাদ হোসেন বলেন, নব্বই দশকে যখন এ্যামচ্যামের যাত্রা শুরু হয় তখন দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ছিল মাত্র ৫৭ মিলিয়ন ইউএস ডলার। কিন্তু তিন দশকের ব্যবধানে সেই বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সব সময় বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে। এখন দেশটি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য মুখিয়ে আছে। শুধু তাই নয়, আমেরিকার বড় কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদিত প্রায় ১০০ ব্র্যান্ডের সেরা পণ্য এবারের ট্রেড শো’তে নিয়ে আসছে। এখান থেকে প্রযুক্তি জ্ঞান আহরণসহ অনেক কিছু শেয়ারিং করা যাবে। তিনি বলেন, আমেরিকার ভিসা প্রাপ্তি একটি জটিল বিষয়। ব্যবসায়ীরা যাতে সহজে ভিসা পেতে পারেন সেই বিষয়েও খোলামেলা আলোচনা করা হবে। এছাড়া ব্যবসায়ী টু ব্যবসায়ী কয়েকটি বৈঠক হবে ট্রেড শোতে। মিস জোয়ানি ওয়াগনার বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া। একক দেশ হিসেবে আমেরিকা সবচেয়ে বেশি পোশাক নিচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। এছাড়া জ্বালানি, বিদ্যুৎ, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ বড় বড় প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর এদেশের গার্মেন্টসখাত ভাবমূর্তি সঙ্কটে পড়ে। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র পোশাকখাতের নিরাপত্তা, শ্রমমান উন্নয়নে অনেক সহযোগিতা করেছে। এখন আবার ভাল করছে পোশাকখাত। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। প্রতিদিন শো’ চলবে সকাল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এবার দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড প্রদর্শন কিংবা ইউনিফর্ম পরিহিত থাকলে তাদের কোন ফি লাগবে না।
×