ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে কুলিক নদী থেকে বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঠাকুরগাঁওয়ে কুলিক নদী থেকে বালু উত্তোলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৫ ফেব্রুয়ারি ॥ জেলার রাণীশংকৈলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) আওতাধীন সেতুর নিচ থেকে অবাধে অবিরাম বালু উত্তোলন করার কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে প্রধান সড়কের সেতু। থামছেই না সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন। নেকমরদ থেকে ঐতিহ্যবাহী কাতিহারহট সড়কের প্রয়াগপুর নামক এলাকায় কুলিক নদীর সেতুর নিচ থেকে অবাধে মাহিন্দ্র ট্রাক্টর বোঝাই করে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে বালু। অথচ বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ৪-এর খ ধারায় উল্লেখ আছে- সেতু, কালভার্ট, ড্যাম ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন রেললাইন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ও বেসরকারী স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে থেকে বালু তোলা যাবে না। প্রয়াগপুর সেতুতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুলিক নদীর ওপরে স্থাপিত পুরনো সেতুর মূল পিলারের বেজ (তলা) ঢালাই মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। সেতুর পিলারের বেজ ঢালাইগুলোর বেশিরভাগ অংশ মাটি থেকে সরে নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকার পরেও তার খুব কাছ থেকে কোদাল দিয়ে বালু কেটে ট্রাক্টরে তোলা হচ্ছে। এক সঙ্গে বেশ কিছু শ্রমিক কোদাল দিয়ে এ বালু উত্তোলনের কাজ করছেন। একাধারে ট্রাক্টরগুলো সারিবদ্ধ হয়ে ট্রাক্টর ভর্তি করে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পাশে দাঁড়িয়ে তদারকি করছেন সেতুর কাছ থেকে বালু তোলা জায়গার মালিক দাবিদার প্রয়াগপুর গ্রামের জিল্লুর রহমান। তিনি জানান, এখানে আমার এক একর জমি রয়েছে আমি এখানে কোন আবাদ করতে পারি না। বালু কেটে জায়গাটা সমান করছি চায়না ধান লাগাব। আর বালু তুলে ট্রাক্টর প্রতি আটশ’ টাকা বিক্রি করছি। এ সময় এভাবে বালু তোলার কারণে সেতুর ক্ষতি হতে পারে তাছাড়াও এভাবে বালু তোলা আইনত অপরাধ প্রশ্নে বলেন, তাহলে আপনি আমাকে একটা চাকরি দেন। আমার এত জমি বিনা আবাদে পড়ে থাকবে আমি আবাদ করতে পারব না তা কি করে হয়। একবার এসিল্যান্ড এসেছিলে (সাবেক এসিল্যান্ড সোহাগ চন্দ্র সাহা) তাকেও বলেছিলাম চাকরি দিতে তিনিও দিতে পারেননি। আমি বালু তুলবই আমার জমি থেকে। এতে সেতুর কোন ক্ষতি হবে না বলে তিনি দাবি করেন। স্থানীয়রা জানান, নদীর পানি কমলেই জিল্লুর সেতুর নিচ থেকে এভাবে বালু তুলে ধারাবাহিকভাবে বিক্রি করে আসছেন। কেউ তাকে থামাতে পারছে না। স্থানীয়দের ধারণা এভাবে বালু তুললে কখনও সেতুর পিলারে সঙ্গে মাটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ভারি যানবাহনের অতি মাত্রার ওজনের কারণে সেতুটি দেবে বা ধসে যেতে পারে। তাই দ্রুত ধারাবাহিক এ বালু উত্তোলন বন্ধ করা উচিত। এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম জানান, ১৯৯০ সালে আর ডিপি-১৩ প্রকল্পে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ ফুট প্রস্থ ও ১৫০ফিট দৈর্ঘ্যরে আর সিসি গার্ডার সেতটিু নির্মাণ করা হয়। নেকমরদ থেকে কাতিহার হাট সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ জন বহুল সড়ক। সে সড়কে সংযোগ সেতুর পিলারের তলা থেকে মাটি কাটলে পিলারের বেজের সঙ্গে মাটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পিলারগুলো ঝুলন্ত অবস্থায় পড়লে এবং সেতু দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল করলে সেতু ধসে যেতে পারে। এতে দুই এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। তিনি আরও জানান, এভাবে বালু উত্তোলন করলে সেতুর ক্ষতি হবে। সেতুর নিচ থেকে বালু কাটা বন্ধ করতে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়দের সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
×