ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

গাফফার চৌধুরীর ‘একুশের গীতিকার’ তথ্যচিত্রের প্রিমিয়ার

প্রকাশিত: ১০:২৩, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

গাফফার চৌধুরীর ‘একুশের গীতিকার’  তথ্যচিত্রের প্রিমিয়ার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙালী চেতনার অন্যতম বাতিঘর ভাষা সংগ্রামী ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা সাংবাদিক-কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তিনি ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের উলানিয়ার চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সাহিত্যচর্চা করেন। তিনি বাংলা একাডেমি, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক (২০০৯), ইউনেস্কোসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর জীবন ও কর্মভিত্তিক তথ্যচিত্র ‘একুশের গীতিকার’ নির্মাণ করেছেন নির্মাতা মাসুদ করিম। রাজধানীর পান্থপথের লাজ কনভেনশন হলে ‘একুশের গীতিকার’ তথ্যচিত্রটির প্রিমিয়ার হয় সোমবার বিকেলে। এতে উপস্থিত ছিলেন কবি নাসির আহমেদ, কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন, আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, লাজ গ্রুপের এমডি কথাসাহিত্যিক রহমান মোহাম্মদ লুৎফর, বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম, ড. একেএম মোয়াজ্জেম হোসেন, গীতিকার শাহীনূর বেবী, লাজ গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দা মাহমুদা রহমান প্রমুখ। তথ্যচিত্রটি প্রদর্শনের পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনানুষ্ঠান হয়। ‘একুশের গীতিকার’ তথ্যচিত্রটির নির্মাতা মাসুদ করিমের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হয় আলোচনাপর্ব। তিনি বলেন, শ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী আমাদের দেশের একজন আলোকিত মানুষ। অনেক পরিশ্রমের ফসল তাকে নিয়ে আমার নির্মিত ‘একুশের গীতিকার’ তথ্যচিত্রটি। গত বছর দুই দফায় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর লন্ডনের এজওয়ারের বাসভবনে এর চিত্রগ্রহণ সম্পন্ন হয়। বাংলাদেশেও কয়েক দফায় এর চিত্রগ্রহণ হয়, যাতে অংশ নেন কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, ভারতের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও কবি আসাদ চৌধুরী। এর শেষ পর্যায়ের চিত্রগ্রহণ হয় গত বছরের জুনের মাঝামাঝি আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর জন্মস্থান বরিশালের উলানিয়া গ্রামে। এতে ধারা বর্ণনায় কণ্ঠ দিয়েছেন কবি আসাদ চৌধুরী। স্বচক্ষে ভাষা আন্দোলন দেখা এবং এতে নিজেকে সম্পৃক্ত করাসহ কোন প্রেক্ষাপটে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ভাষা শহীদদের নিয়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ কবিতাটি রচনা করেছেন তা তিনি এই তথ্যচিত্রে অকপটে বলেন। তিনি জীবনের নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও কিভাবে ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনীতির দিকনির্দেশনা তার কলমের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন সেসবের বিশদ বর্ণনা রয়েছে ‘একুশের গীতিকার’ তথ্যচিত্রটিতে। আলোচনায় অতিথিরা বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ তাকে খ্যাতি এনে দিয়েছে। এটি প্রথমে আবদুল লতিফের সুরে এবং পরে আলতাফ মাহমুদের সুরে গীত হয়। তার ছোটগল্প সঙ্কলন ‘সম্রাটের ছবি’ এবং উপন্যাস ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘শেষ রজনীর চাঁদ’ প্রভৃতি তাকে কথাসাহিত্যিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ নির্মাণ করে দেশের মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে আছেন। আলোচনার পর সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফরিদা পারভীন। প্রথমে বাঁশিতে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি বাজিয়ে শোনান শিল্পী গাজী আবদুল হাকিম। এরপর শিল্পী ফরিদা পারভীন দেশের গান দিয়ে শুরু করেন তার পরিবেশা। শুরুতে ‘কত আনন্দ বেদনায় মিলন বিরহ সঙ্কটে’ গানটি পরিবেশন করেন। এরপর একে একে লালনের ‘মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার’, ‘যেখানে সাঁইর বারাম খানা’, ‘মিলন হবে কত দিনে’সহ বেশ কিছু গান পরিবেশন করেন। সব শেষে পর্দায় দেখানো হয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর জীবন ও কর্মভিত্তিক তথ্যচিত্র ‘একুশের গীতিকার’।
×