স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সমবায় কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে সুপ্রীমকোর্টের চেম্বার আদালতে আপীল করে আদেশ গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেতকা গ্রামের আমির হোসেনের পুত্র আশরাফ হোসেন বাদলের নামে একটি ভুয়া প্রত্যয়ন ইস্যু দেখানো হয়। টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সমবায় অফিসের গত ৫ জানুয়ারির ৩৭ নম্বর স্মারকে এই প্রত্যয়নপত্র ইস্যু দেখানো হয়। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পত্রটি যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় এটি ভুয়া। জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতে প্রত্যয়নপত্রটি জমা করা হয়। টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সমবায় কর্মকর্তা নাজমা আক্তার লিখিতভাবে এই বিষয়টি টঙ্গীবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছেন। এই কর্মকর্তা তার অফিসের ২৪ ফেব্রুয়ারির ৬২ নম্বর স্মারকে এই পত্রের মাধ্যমে তিনি উল্লেখ করেছেন গত ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট থেকে অদ্যাবধি এই দায়িত্বে রয়েছেন। কিন্তু তিনি বা তার অফিস এমন কোন প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করেনি। সমবায় অফিস সূত্রে জানা যায়, উক্ত ৩৭ নম্বর স্মারকে অন্যপত্র ইস্যু করা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট স্থানীয় পল্লী উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মামুদাতপুর কৃষক সমবায় সমিতির লিমিটেডের ম্যানেজার হিসেবে প্রত্যয়নপত্রে আশরাফ হোসেন বাদলকে দেখালেও তা সঠিক নয়। বিগত প্রায় ২৫ বছর ধরে উক্ত সমিতির কোন ব্যবস্থাপনা কমিটি নেই। কিন্তু এই মিথ্যা তথ্য সম্পৃক্ত করে ভুয়া প্রত্যয়ন ইস্যু দেখিয়ে একটি রিটের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রীমকোর্টের চেম্বার আদালতে আপীল করে পক্ষে একটি আদেশ গ্রহণ করেছে।
টঙ্গীবাড়ি ইউসিসিএ লিমিটেডের মেয়াদ বৃদ্ধি জন্য আবেদন করলে হাইকোর্টের বিচারক বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর দ্বৈত বেঞ্চ ছয় মাসের জন্য স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নিদের্শ দিয়ে আদেশ জারি করে। রিট পিটিশন নাম্বার ১১২৬২/১৯
এদিকে আশরাফ হোসেন বাদল এই ভুয়া প্রত্যয়ন দিয়ে নিজে বাদী হয়ে গত ২১ জানুয়ারি আপীল দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে সুপ্রীমকোর্টের চেম্বার আদালতে বিচারক বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এই স্থিতি অবস্থার ওপর ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত আদেশ প্রদান করেন। সিভিল মিসিলমিয়াস পিটিশন নং ২৫/২০। এই আদেশ নিয়ে তরিঘরি করে টঙ্গীবাড়ি ইউসিসিএ লিমিটেডে একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়। যে কমিটিতে প্রতারণা করে প্রত্যয়ন ইস্যু দেখিয়ে আদালতে আপীলকারী আশরাফ হোসেন বাদলও রয়েছেন। বিষয়টি সোমবার জানাজানির পর এখানে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এই বিষয়ে টঙ্গীবাড়ি উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নাজমা আক্তার বলেন, ‘যার নাম এই প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ রয়েছে তিনি ছাড়া আর কে এটি করবেন? আমার ধারণা তিনিই (আশরাফ হোসেন বাদল) এই জালিয়াতি আশ্রয় নিয়েছেন। আমি মনে করি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। কারণ এই জালিয়াতি করে প্রশ্রয় পেয়ে গেলে আরও বড় ধরনের জালিয়াতি ঘটাবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: