ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতকে উড়িয়ে দিল নিউজিল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 ভারতকে উড়িয়ে দিল নিউজিল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বেসিন রিজার্ভে পা রেখেই ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে, টি২০’র পর টেস্টÑ প্রতিটি ভার্সনে ১০০টি করে ম্যাচ খেলার অনন্য কীর্তিতে নাম লিখিয়েছেন রস টেইলর। ১০ উইকেটের জয়ের পথে নাম্বার ওয়ান ভারতকে উড়িয়ে উপলক্ষটা স্মরণীয় করে রাখল কেন উইলিয়ামসনের দল। শুধু তাই নয়, নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে কিউইদের এটি ১০০তম জয়। প্রতিপক্ষকে ১৬৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৪৮ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ১৮৩ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ব্যর্থ কোহলিদের সংগ্রহ থামে ১৯১-এ। সোমবার চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য ৯ রানের লক্ষ্যে নিউজিল্যান্ড পৌঁছে যায় ১ ওভার ৪ বলে, কোন উইকেট না হারিয়ে। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটের পর দ্বিতীয় ৫টিসহ মোট ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন অভিজ্ঞ পেসার টিম সাউদি। বিশ্বকাপের পর নতুন প্রবর্তিত আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেই কেবল নয়, গত দুই বছরে বছরে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে মোড়ল ভারতের এটি প্রথম হার! ক্রাইস্টচার্চে শনিবার শুরু সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের পার্থ টেস্টে হারের পর থেকেই টেস্টে অপরাজিত ছিল ভারত। ওয়েলিংটন এই টেস্টের আগে খেলা সর্বশেষ নয় টেস্টের আটটিতেই জয় পায় সুপার কোহলির দল। এর সর্বশেষ তিনটি আবার ইনিংস ব্যবধানে। কিন্তু সেই সব সুখস্মৃতি নিউজিল্যান্ডে এসে এক ফুৎকারেই উড়ে গেল। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম হারের স্বাদ পাওয়া ভারত সর্বশেষ ২০১৩ সালের ডারবান টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এত বড় ব্যবধানে (১০ উইকেটে) হেরেছিল। ওই টেস্টের পর অবশ্য তিন টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল দলটি। অন্যদিকে ওয়েলিংটনের জয়টি নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে নিউজিল্যান্ডের শততম জয়। ১০০ টেস্ট জিততে ৪৪১ ম্যাচ ও ৯০ বছর সময় লাগল কিউইদের। সর্বোপরি সপ্তম দল হিসেবে টেস্টে ১০০ ম্যাচ জিতল কিউইরা। সবচেয়ে বেশি টেস্ট জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের নিকটতম প্রতিবেশীরা সাফল্যের হাসি হেসেছে মোট ৩৯৩ বার। গত বছর বিশ্বকাপের পর থেকে র?্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল ভারত ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে টানা সাত জয়ের পর প্রথম হারের তেতো স্বাদ পেল। নিউজিল্যান্ড টানা তিন হারের পর পেল জয়ের দেখা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এটি তাদের দ্বিতীয় জয়। ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে সেমাবার চতুর্থ দিনে ৩৯ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত, উইকেট ছিল ৬টি। কোহলিরা টিকতে পারে মাত্র ৭৯ মিনিট। কিউইদের আগুনে বোলিংয়ে যোগ করতে পারে আর কেবল ৪৭ রান। আগের দিন পঞ্চম উইকেট জুটিতে এক ঘণ্টার বেশি সময় কাটিয়ে আশা দেখানো অজিঙ্কা রাহানে ও হনুমা বিহারি এদিন সাজঘরে ফেরেন প্রথম চার ওভারের মধ্যে। দারুণ এক ডেলিভারিতে রাহানেকে কট বিহাইন্ড করেন বোল্ট। বিহারিকে পরপর দুই আউট-সুইঙ্গারের পর ইন-সুইঙ্গারে বোল্ড করেন সাউদি। একটু পর তার শিকার হয়ে ফেরেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনও। ইনিংস হারের শঙ্কায় থাকা ভারত লিড পায় রিশব পন্থ ও ইশান্ত শর্মার কল্যাণে। অষ্টম উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ২৭ রান। ২ রানের মধ্যে ভারত হারায় শেষ ৩ উইকেট। আরেকবার সাউদির হাতে জীবন পাওয়া ইশান্তকে ফেরান কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। দ্বিতীয় নতুন বলে পন্থ ও জাসপ্রিত বুমরাহকে ফিরিয়ে সাউদি পূরণ করেন ৫ উইকেট। টেস্টে এই স্বাদ পেলেন দশমবার মতো। বোল্ট নেন ৪টি। দুর্দান্ত জয়ে দারুণ খুশি কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন, আর ভারত অধিনায়ক বলেছেন, এক হারে সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। স্কোর ॥ ভারত প্রথম ইনিংস ১৬৫/১০ (৬৮.১ ওভার; পৃথ্বী ১৬, মায়াঙ্ক ৩৪, পূজারা ১১, কোহলি ২, রাহানে ৪৬, বিহারি ৭, পন্থ ১৯, অশ্বিন ০, ইশান্ত ৫, শামি ২১, বুমরাহ ০*; সাউদি ৪/৪৯, বোল্ট ১/৫৭, জেমিসন ৪/৩৯) ও দ্বিতীয় ইনিংস ১৯১/১০ (৮১ ওভার; পৃথ্বী ১৪, মায়াঙ্ক ৫৮, পূজারা ১১, কোহলি ১৯, রাহানে ২৯, বিহারি ১৫, পন্থ ২৫, অশ্বিন ৪, ইশান্ত ১২, শামি ২*, বুমরাহ ০; সাউদি ৫/৬১, বোল্ট ৪/৩৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ১/২৮) নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ৩৪৮/১০ (১০২.২ ওভার; লাথাম ১১, ব্লান্ডেল ৩০, উইলিয়ামসন ৮৯, টেইলর ৪৪, নিকোলস ১৭, ওয়াটলিং ১৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪৩, সাউদি ৬, জেমিসন ৪৪, এজাজ ৪*, বোল্ট ৩৮ ; বুমরাহ ১/৮৮, ইশান্ত ৫/৬৮, অশ্বিন ৩/৯৯)
×