ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নির্যাতনের অভিযোগ করে কপাল পুড়ল গৃহবধূর

প্রকাশিত: ১২:১৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 নির্যাতনের অভিযোগ করে কপাল পুড়ল গৃহবধূর

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শ্রীনগরে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে এক গৃহবধূর কপালে জুটেছে তালাকের নোটিস। থানায় অভিযোগের পর পুলিশ মামলা না নিয়ে এলাকার সালিশদার রূপী টাউট বাটপাড়দের মীমাংসার দায়িত্ব দেয়। পরে সালিশদাররা মীমাংসার জন্য ওই গৃহবধূর কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে। এই সময়ের মধ্যে গৃহবধূর স্বামী তাকে তালাকের নোটিস পাঠিয়ে পাড়ি দিয়েছে ইতালি। ওই গৃহবধূ অভিযোগ করেন, শ্রীনগর থানার এসআই আপন দাস থানায় ডেকে এনে এক সালিশদারকে মীমাংসা করার জন্য সময় দিয়ে স্বামীর কূটকৌশল বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার কোলাপাড়া গ্রামের ইতালি প্রবাসী হুমায়ূন মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৩৫) তার স্বামী ও স্বামীর পরিবারের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৩ ফেব্রুয়ারি হারপিক পান করে আত্মহননের চেষ্টা করে। হারপিক পানের পর তাকে প্রথমে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকার মিডফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে তার স্বামী ও স্বামীর পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার এসআই আপন দাস কোন ব্যবস্থা না নিয়ে ওই এলাকার সালিশদার গোলাম রসুলকে দায়িত্ব দেন। তিনি মীমাংসার জন্য ২ লাখ টাকা দাবি করেন বলে রোকেয়া বেগম অভিযোগ করেন। এই সুযোগে রোকেয়া বেগমের স্বামী তালাকের নোটিস দিয়ে ইতালি চলে যায়। রোকেয়া বেগম জানান, তার বাবার বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জে। ১৩ বছর আগে হুমায়ূন মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে রিয়ামনি নামে নয় বছরের একটি প্রতিবন্ধী কন্যা সন্তান রয়েছে। হুমায়ূন চার বছর আগে রোকেয়ার বাবার টাকায় ইতালি যায়। প্রথমে ভাল আচরণ করলেও গত এক বছর ধরে সে রোকেয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। প্রায় এক মাস আগে রোকেয়া খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তার স্বামী দেশে অবস্থান করছে। এ নিয়ে সে তার শ্বশুরের ওপর চাপ তৈরি করলে হুমায়ূন বাড়িতে এসে রোকেয়ার সঙ্গে সংসার করবে না বলে জানিয়ে দেয়। এতে রোকেয়ার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। পরে হুমায়ূন ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে রোকেয়ার কলহ শুরু হয়। এ ব্যাপারে গোলাম রসুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি থানা থেকে মীমাংসার দায়িত্ব দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, টাকা দাবির বিষয়টি সঠিক নয়। শ্রীনগর থানার এসআই আপন দাস বলেন, এই বিষয়ে বাদীর সঙ্গে শনিবার কথা হয়েছে। মীমাংসার জন্য যে সময় দেয়া হয়েছে তার আরও দুই তিনদিন বাকি আছে।
×