অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ব্যবসায়ী মহলে। এরই মধ্যে আমদানির ক্ষেত্রে বিকল্প বাজার খুঁজতে শুরু করেছেন কেউ কেউ। তবে দুশ্চিন্তা বাড়ছে ন্যায্য দামে মানসম্মত পণ্যের নিশ্চয়তা নিয়ে। ফলে, এই প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী হলে সার্বিক বাণিজ্যে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরাও। তবে বিদেশী ঋণ কিংবা কারিগরি সহায়তায় প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে এখনই চিন্তিত নয় সরকার।
দেশের বস্ত্র ও পোশাক খাতের বড় প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সনস গ্রুপ। দেড় দশক ধরে যারা আমদানি-রফতানিসহ কর্মসংস্থান বাড়াতে ভূমিকা রাখছে ধারাবাহিকভাবে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাব এখন কমিয়ে দিচ্ছে সার্বিক কর্মকান্ড। কারণ আমদানিতে বড় নির্ভরতা চীন। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকনের মতে, এই সঙ্কট শীঘ্রই না কাটলে, নতুন সমস্যায় পড়তে হবে পোশাক খাতকে।
বিটিএমএর সভাপতি বলেন, আমাদের চাহিদার ১৭ বিলিয়ন ডলারের কাপড়ের মধ্যে ৭-৮ বিলিয়ন ডলারের কাপড়ই আসে চায়না থেকে। তো এখানে একটা বিশাল মার খেতে পারে। এদিকে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি বলেন, যখন আমার আমদানিতে আঘাত হানছে তাহলে আমাদের রফতানিতেও আঘাত হানবে। দুর্ভাগ্যবশত এটাই হতে যাচ্ছে। চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিত বাণিজ্য এখন প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে সবশেষ অর্থবছরে কেবল আমদানিই হয়েছে সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। যা মোট আমদানির চার ভাগের একভাগ। তাই এই কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হলে, দুরবস্থায় থাকা রফতানি খাতে নেমে আসতে পারে আরও বড় বিপর্যয়।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যের ১৩ শতাংশই চীনের সঙ্গে কোন না কোনভাবে সংযুক্ত। রফতানি খাতে যেখানের কাঁচামাল বেশিরভাগই আসে চীন থেকে সেসব জায়গাতেই এই প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে।
আমদানি রফতানির বাইরে, দেশের উন্নয়ন কাজের বড় সহযোগী দেশ এখন চীন। টাকার যোগান থেকে শুরু করে কারিগরি সহায়তা- সবই আসে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি থেকে। ফলে, সেখানকার প্রভাব বাংলাদেশের জন্যও হয়ে উঠতে পারে বিপদের কারণ।
যদিও এখনই এ নিয়ে চিন্তিত নয় সরকার। সদ্য বিদায় নেয়া ইআরডি সচিব বলেন, পুরো বিশ্ব যদি প্রভাবিত তবে বাংলাদেশ তো বিশ্বের বাইরে নয়। যেহেতু আমাদের সব কাজে চীনারা জড়িত আছে সেক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবায়ন ব্যহত হবে। এরই মধ্যে করোনার প্রভাবে, বাংলাদেশ থেকে রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি পণ্যের।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: