ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাপিয়ার নীল সাম্রাজ্যের সব অজানা তথ্য ফাঁস

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  পাপিয়ার নীল সাম্রাজ্যের সব অজানা তথ্য ফাঁস

আজাদ সুলায়মান ॥ অবিশ্বাস্য সব কাহিনী বেরিয়ে আসছে পাপিয়ার অন্ধকার জীবনের। র‌্যাবের অভিযানে তছনছ হয়ে গেছে তার সাজানো রংমহল। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া টিনএজ তরুণীদের দিয়ে কিভাবে বিত্তবানের কানে হুক লাগিয়ে হাতিয়ে নিতেন কাক্সিক্ষত ধন সম্পদ সবই ফাঁস হচ্ছে। তার আস্তানায় নিত্যসঙ্গীদের সন্ধানে নেমে র‌্যাব পেয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। র‌্যাবের ভাষ্যমতে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কল্যাণে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে বিপাকে পড়েন তিনি। অবস্থা বেগতিক দেখে শনিবার দেশ ছেড়ে পালানোর সময় ধরা পড়েন বিমানবন্দরে। র‌্যাবের প্রাথমিক অনুসন্ধানেই ফুটে ওঠে পাপিয়ার নীল সাম্রাজের অজানা সব তথ্য। রবিবার তার বাসায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব উদ্ধার করে বিপুল বিদেশী মদ, টাকা, ডলার ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট। এদিকে পাপিয়ার অপরাধ কাহিনী সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই তাকে বহিষ্কার করা হয় যুব মহিলা লীগ থেকে। রবিবার যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নুর পাপিয়াকে গঠনতন্ত্রের ২২ (ক) উপধারা অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে। উল্লেখ্য, শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নুর পাপিয়াসহ চারজনকে আটক করে র‌্যাব। আটক বাকিরা হলেনÑ পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। পরদিন রবিবার তার ফার্মগেটের বাসা থেকে জব্দ করা হয় বিদেশী অস্ত্র-গুলি ও ম্যাগজিন। জব্দ করা হয়েছে বিদেশী মদ ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ। এ বিষয়ে র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম জানান, পাপিয়ার কানেকশনে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলছে। অভিযান চলছে তার অপরাপর সহযোগীদের ধরার। এ ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানিয়েছে, পুলিশের এসআই পদে ও বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন পদে সাধারণ মানুষকে চাকরি দেয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিতেন র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া শামিমা নুর পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী। শুধু তাই নয়, জমির দালালি, সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স দেয়া, গ্যাস লাইন সংযোগের নামেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন তারা। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ রেখেছেন পাপিয়া ও সুমন চৌধুরী। রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উলল্লাহ বুলবুল। তিনি বলেন, রবিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেট ইন্দিরা রোডে পাপিয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে ১টি বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশী মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশকিছু বিদেশী মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে ফার্মগেটে পাপিয়ার ২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নরসিংদী শহরে ২টি ফ্ল্যাট, ২ কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লট, চারটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং গাড়ি ব্যবসায় প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত থাকার কথা জানা গেছে। পাপিয়া ও তার স্বামী মতি সুমন রেলওয়ে ও পুলিশে চাকরির প্রলোভনে ১১ লাখ টাকা, একটি কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়ার কথা বলে ৩৫ লাখ টাকা, একটি সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স করে দেয়ার কথা বলে ২৯ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর বাইরে নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন তারা। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, পাপিয়ার আয়ের অন্যতম উৎস নারীদের দিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করানো। ঢাকার বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে কম বয়সী মেয়েদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করাতেন শামিমা। যাদের অধিকাংশকে নরসিংদী এলাকা থেকে চাকরির প্রলোভনে ঢাকায় আনা হয়েছিল। অনৈতিক কাজে বাধ্য না হলে তাদের নানভাবে নির্যাতন করা হতো। তারা রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে কম বয়সী মেয়েদের দিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করে। যাদের অধিকাংশই নরসিংদী এলাকা হতে চাকরি দেয়ার কথা বলে এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এসব অনৈতিক কাজে কেউ অস্বীকৃতি জানালে ধৃত আসামিরা তাদের বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এছাড়াও এই দম্পতির নরসিংদী এলাকায় ‘কিউ এন্ড সি’ নামক একটি ক্যাডার বাহিনী আছে। যাদের মাধ্যমে তারা নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজির মাসোহারা আদায়, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সব ধরনের অপকর্ম করত। পাপিয়ার সঙ্গে বিশিষ্টজনদের ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান যুগে যদি কেউ কারও সঙ্গে ছবি তুলতে চায় তাহলে বিষয়টি সাধারণত এড়ানো যায় না। তাই কারও সঙ্গে ছবি থাকা মানেই সখ্যতা নয়। জানা গেছে, সমাজসেবার আড়ালে অসহায় সুন্দরী নারীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক ব্যবসা করে আসছিলেন পাপিয়া। তিনি রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেল ও ফার্মগেটের নিজের বাসায় গড়ে তোলেন মধুকুঞ্জ। এছাড়াও তিনি নিজ জেলায় নরসিংদীতে গড়ে তোলেন টর্চার সেল। প্রতিমাসে কোটি কোটি ব্যয়ের হিসেব মিললেও নেই বৈধ আয়ের বড় কোন উৎস। বৈধ কাগজপত্রে দেখা যায় পাপিয়ার বার্ষিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ রাজধানীর অভিজাত একটি হোটেলে শুধু গত তিন মাসে তিনি বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। নারী-সংক্রান্ত অপকর্ম ছাড়াও অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত পাপিয়া। র‌্যাব জানিয়েছে, রাজনীতির পাশাপাশি পাপিয়ার বৈধ একটি ব্যবসার খোঁজ পাওয়া গেছে। রাজধানীর তেজগাঁও এফডিসি গেট সংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি গাড়ির শোরুম এবং নরসিংদীতে একটি গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। মূলত এসব ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তিনি একদিকে অন্ধকার জগতের স¤্রাজ্ঞী, অন্যদিকে পাপিয়া সমাজসেবী। তিনি নিজ নামে নরসিংদী এলাকায় অসহায় নারীদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতেন। এজন্য অধিকাংশ সময় নরসিংদী ও রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ করে আসছিলেন। তিনি গত তিন মাসে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করেন। ওই হোটেলে প্রতিদিন শুধু বারের খরচ বাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করতেন পাপিয়া। সেখানে তার নিয়ন্ত্রণে ৭টি মেয়ের কথা জানা গেছে, যাদের তিনি প্রতিমাসে ৩০ হাজার করে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেন। এছাড়া নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য তার একটি ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। স্বামীর সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। এ সম্পর্কে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওয়েস্টিন হোটেলে পাপিয়ার জলসায় প্রতিরাতে কারা হাজির হতেন তার একটি তালিকাও সংগ্রহ করেছে র‌্যাব। বিশেষ করে একুশ তলায় বারের নিজস্ব ফুটেজও সংগ্রহে করেছে র‌্যাব। ওই ফুটেজ দেখে র‌্যাব এখন শনাক্ত করছে পাপিয়ার ফাদে পড়া ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রাজনীতিক ও বিত্তবান তরুণদের। পাশাপাশি কজন আলোচিত নারী ব্যবসায়ীরও সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। দুজন তরুণী গত বৃহস্পতিবার তার আস্তানায় গিয়ে ফাঁদে পড়ার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ক্ষুব্দ হয়ে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় হোটেলের নিরাপত্তাকর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর তরুণীদ্বয়কে নিরাপদে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। অভিযানে আটক বাকিদের সম্পর্কেও একই ধরনের তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। শনিবারের অভিযানে আটক মতি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। দেশে স্ত্রীর ব্যবসায় সহযোগিতার পাশাপাশি থাইল্যান্ডে তার বারের ব্যবসা রয়েছে। তিনি স্ত্রীর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় নারীদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করেন। অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত। পাপিয়ার অপর সহযোগী আটক সাব্বির খন্দকার পাপিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবং আটক তায়্যিবা মতি সুমনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। পাপিয়া ও মতি সুমনের ব্যক্তিগত সম্পত্তির হিসাব রক্ষণাবেক্ষণসহ সব অবৈধ ব্যবসায় এবং অর্থ পাচার ও রাজস্ব ফাঁকি দিতে তারা সহযোগিতা করে আসছিলেন বলে জানায় র‌্যাব। ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন ওরফে মতি সুমনকে নিয়ে নরসিংদীজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। রাজনীতির অন্তরালে অস্ত্র, মাদক ও দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার দায়ে গতকাল শনিবার র‌্যাব তাদের আটক করে। এদিকে নরসিংদী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, শনিবার পাপিয়া আটক হওয়ার খবর রাতেই শহরে চাউর হয়ে যায়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল বাইজি সর্দারনিবেশে পাপিয়ার ভিডিও। নারী নেত্রীর অন্তরালে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা বের হতে শুরু হয়েছে। মুখ খুলতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও পতিতাভিত্তিক ব্যবসার পাশাপাশি ব্ল্যাকমেইল করে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সা¤্রাজ্য। অনৈতিক কার্যকলাপের ভিডিও ধারণ করে ধণাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই তাদের প্রধান পেশা। এই দম্পতির নানা কীর্তি কাহিনী গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তা এখন ‘টপ অব দ্য টাউন’। এ দম্পতি সম্পর্কে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালের দিকে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমনের উত্থান শুরু। শৈশব থেকেই চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্ল্যাকমেইল ছিল সুমনের প্রধান পেশা। দূরদর্শী চতুর ও মাস্টারমাইন্ড সুমন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। ২০০১ সালে পৌরসভার কমিশনার মানিক মিয়াকে যাত্রা প্যান্ডেলে গিয়ে হত্যার পর তিনি আলোচনায় আসেন। এরই মধ্যে পাপিয়া চৌধুরীকে বিয়ে করেন সুমন। এরপর তার স্ত্রী পাপিয়াকে রাজনীতিতে কাজে লাগান। প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের পর দুর্বৃত্তায়ন রোধকল্পে বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সন্ত্রাসী সুমন ও তার স্ত্রী পাপিয়া চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে আসতে নিষেধ করেন। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বিভাজনকে কেন্দ্র করে পাপিয়া চৌধুরী ও তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর জেলা যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে তৌহিদা সরকার রুনা সভাপতি ও পাপিয়া চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রয়াত নেতা আসাদুজ্জামানের স্মরণসভায় বিশাল শোডাউন আর শত শত লোক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিটি মিছিল ও সভায় তারা যোগ দেন। এছাড়া স্থানীয় এমপির সভা-সমাবেশে তাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
×