ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বকেয়ার হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণফোন

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 বকেয়ার হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণফোন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আপীল বিভাগের নির্দেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নিরীক্ষা আপত্তির বকেয়ার মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণফোন। রবিবার বিকেলে বিটিআরসির চেয়ারম্যানের কাছে সংস্থার কার্যালয়ে গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি এ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাতসহ কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত পে-অর্ডার হস্তান্তর করেন। আদালতের নির্দেশের পর গত শুক্রবার রাতে বিটিআরসিকে হাজার কোটি টাকা দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় গ্রামীণফোন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির পাওনা এক হাজার কোটি টাকা ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেয়ার জন্য গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দেয় আপীল বিভাগ। এক হাজার কোটি টাকার পে-অর্ডার গ্রহণের পর বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, অনেক দিন ধরে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছিল। আজ সংবিধান রক্ষা হলো, সুপ্রীমকোর্টের আদেশ রক্ষা হলো। সরকার তার প্রাপ্য অর্থের কিছুটা হলেও পেলো, যা জনগণের টাকা। টাকা দেয়ার জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, দেরি হলেও ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন। গ্রামীণফোনকে আমরা কখনও প্রতিপক্ষ পার্টি মনে করিনি। অন্যান্য টেলিকমিউনিকেশন অপারেটরদের মতো তাদেরও শুধু অপারেটরই মনে করতাম। রেগুলেটর হিসেবে তাদের যা পাওনা তা সবসময় দিতে প্রস্তুত ছিলাম। কিছু কিছু কাজ বন্ধ রয়েছে আইনগত কারণে। নিজেদের কোন ইচ্ছা বা অভিপ্রায় ছিল না যে গ্রামীণফোনের কোনরকম ক্ষতি হোক। হয়তো কোন ব্যাপারে আন্ডারস্ট্যান্ডিং সমস্যা হয়েছিল, তারা মনে করেছিল কোর্টে গিয়ে হয়তো কিছু কম পাবে, অনেক পরিমাণ টাকা বিলম্ব করতে পারলে ব্যবসায়িক লাভ হবে। গ্রামীণফোন শেষে হলেও মিস-আন্ডারস্ট্যান্ডিং থেকে প্রোপার আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে এসেছে, এটি আমাদের জন্য খুব সুখের খবর। ভবিষ্যতে যেকোন বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, সমস্যা হলে রেগুলেটরকে জানাবেন, রেগুলেটরের সঙ্গে আলোচনা না করলে লাভ হয় না, সময় কিছু নষ্ট হয়। আমরা সব করি দেশ ও জাতির জন্য, আমাদের কোন ব্যক্তিগত চাওয়া পাওনা নেই। নিরীক্ষা আপত্তির টাকা বকেয়া থাকায় অপারেটরটির এনওসি বন্ধ রেখেছিল বিটিআরসি। এনওসি প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি প্রধান বলেন, আদালত যে নির্দেশ দেবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের বাইরে আমরা যাব না। গত ২৪ নবেম্বর আপীল বিভাগ প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে বিটিআরসিকে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশ রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন। এর পর আপীল বিভাগ এক হাজার কোটি টাকা দেয়ার নির্দেশ দেয়। বকেয়া টাকা পরিশোধ নিয়ে আজ আদালতে শুনানি রয়েছে। টাকা পরিশোধের বিষয়টি আদালতকে জানালে আদালতের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলো জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি এ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, দেশের আইনী ব্যবস্থার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আপীল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০০০ কোটি টাকা জমা দিলাম। অডিট নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আমরা বলে আসছি অডিটের বিষয়ে আমাদের একটু আপত্তি আছে, সেই পজিশনটা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আমরা মনে করি এই বিরোধটা রয়ে গেছে। আলোচনা ও আইনগত প্রক্রিয়ায় তা সমাধান হবে। আমরা সবসময় আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। আমরা মনে করি আলোচনা অব্যাহত রাখতে পারলে সবপক্ষ মিলে একটা সুন্দর সমাধানে আসতে পারব। চলমান কিছু সমস্যায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা দিতে পারব বলে আশা করি। পে-অর্ডার হস্তান্তর অনিষ্ঠানে বিটিআরসির উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×