ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছড়িয়েছে করোনা, দাবি জাপানী টিভির

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

যুক্তরাষ্ট্র থেকে  ছড়িয়েছে  করোনা, দাবি জাপানী টিভির

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জাপানী একটি টেলিভিশনের প্রতিবেদন নিয়ে মেতে উঠেছে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সিনা ওয়েইবো। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মাধ্যমটির বহু ব্যবহারকারী কভিড-১৯ এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই ‘মূলহোতা’ হিসেবে দেখছেন। এ নিয়ে করছেন নানা মন্তব্যও। খবর ওয়েবসাইটের। জাপানী টেলিভিশনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ইনফ্লুয়েঞ্জায় ১৪ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই করোনাভাইরাসেও আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পরেই চীনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটিতে ভাইরাল হয়ে যায় সংবাদটি। সেখানে ব্যবহারকারীরা বলছেন, ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল মূলত যুক্তরাষ্ট্র। জাপানের টিভি আসাহি টিভির ওই প্রতিবেদনে ইঙ্গিত করা হয় যে, হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বুঝতেই পারেনি কিভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে ওই টেলিভিশনের প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে যে, যারা ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা গেছেন তারা আসলে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত নয়। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খুঁজে বের করতে জাপানী টিভির প্রতিবেদনে যে সন্দেহ পোষণ করা হয়েছে তাই যথেষ্ট ছিল! ইতোমধ্যে চীনা সাইবার জগতে চর্চা হচ্ছে বিষয়টি নিয়েই। সিনা ওয়েইবোর এক ব্যবহারকারী তো একেবারে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন কিভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে করোনাভাইরাসে চীনে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অক্টোবরে হুবেই প্রদেশের উহানে অনুষ্ঠিত হয়েছে মিলিটারি ওয়ার্ল্ড গেমস। সেদিকে নির্দেশ করে ওই ব্যবহারকারী লেখেন, ‘সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে উহানে আসে। পরে এর কিছুটা রূপান্তর ঘটেছে। পরে এ ভাইরাস আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।’ সাংহাইভিত্তিক ফুদান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের অধ্যাপক সেন ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উৎসাহী ব্যবহারীদের মন্তব্যের সঙ্গে গা ভাসিয়ে দেননি। তিনি বলেন, এ ভাইরাসের উৎপত্তি সম্পর্কে জানতে কাজ চলছে। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে গোয়ান্দা সংস্থাগুলোও। আর কভিড-১৯ এর লক্ষণ এবং কিভাবে তা ছড়াচ্ছে বিষয়টি স্পষ্ট। সুতরাং কোথা থেকে এটার উৎপত্তি তা গোপন করা এক প্রকার অসম্ভব। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, লস এ্যাঞ্জেলস, সান ফ্রান্সিসকো, সিয়াটল, শিকাগো এবং নিউইয়র্কের জনস্বাস্থ্য গবেষণাগারে ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় রোগে আক্রান্তদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করবে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গ্লোবাল টাইমস জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে গত বছরের শেষ দিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৭৭ হাজার ৯৩২ জন। আর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩৬৩ জনের। প্রায় ২৮টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে গেছে এ ভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মৃত্যুর বিষয়টি হয়ে উঠেছে নিয়মিত ঘটনা। তবে আশার কথা হচ্ছে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ২০ হাজার ৮৬৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
×