ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টাকা ছাড়া মেলে না সেবা

আনোয়ারা নির্বাচন অফিসে হয়রানি

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আনোয়ারা নির্বাচন অফিসে হয়রানি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন, এলাকা পরিবর্তন ও অন্যান্য কাজে সেবা প্রত্যাশীদের নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, দিনের পর দিন সার্ভার ডিস্টার্ব ও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে। টাকা না দিলে মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা। চাপাতলী গ্রামের ভুক্তভোগী হায়দার জানান, নির্বাচন অফিসে এনআইডি কার্ড সংশোধনের জন্য এক সপ্তাহ ধরে আসলেও সার্ভার কাজ করে না বলে পরবর্তীতে আর কিছুু জানায় না। অফিস সহকারীরা আমাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহারও করেন না। গহিরা গ্রামের আব্দুল করিম জানান, ‘নির্বাচন অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয়না। কিসের সার্ভার টার্বার? টাকা দিলে সবই সমাধান। আজকে আমার ফ্লাইট। আমি টাকা দেয়ার পর সব কিছুু দ্রুত করে দিয়েছে।’ বৈরাগ গ্রামের নিজাম উদ্দীন জানান, গত জানুয়ারি মাসে নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ ও সোনালী ব্যাংকে চালান জমা দিয়ে উপজেলা সদর নির্বাচন অফিসে আবেদন ফরম জমা দিতে গেলে সার্ভার ডিস্টার্ব বলে জমা নেয়নি। এটা জমা দিতে শহর থেকে তিন বার আসতে হয়েছে। নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রিদাতা জাহেদ মোবাইল নাম্বার ও সহজে দিচ্ছে না। পরবর্তীতে জমা নিলেও সংশোধন কখন হবে জানতে চাইলে ঢাকা অফিস থেকে যখন মেসেজ আসবে তখন জানানো যাবে বলে জানায় তারা। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মেসেজ আসে নাই। নাছির নামে এক প্রবাসী জানান, গত বছর টাকা জমা দিয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু এক বছর পরে কার্ড নিতে আসলে আবারও নতুনভাবে টাকা জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে বলে হয়রানি করে যাচ্ছে। অন্যদিকে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে আসা তছলিম আহম্মেদ অভিযোগ করে বলেন, আমি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলাম। এ কারণে সময়মতো জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে পরিনি। দেশে ফিরে পরিচয়পত্র নিতে আবেদন করি। গত বছরের অক্টোবর মাসে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে আমার ছবি তোলা হয়। নির্বাচন অফিসে চার মাস ঘুরেছি এখন পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পাইনি। এভাবে ওই অফিস থেকে পদে পদে হয়রানি করা হচ্ছে। সদর উপজেলার নির্বাচন অফিসে এলাকা পরিবর্তনের কাজে আসা একাধিক ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন, এখানে আবেদনপত্র জমা দিতে এলে হয়রানির শেষ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে দেয়া নির্দেশনার বাইরেও কাগজপত্র দিতে হচ্ছে। তারপরও আবেদন গ্রহণ করা হয় না। আমরা এক কাজের জন্য অফিসে ৮-১০ বার এসেছি। যারা টাকা দেয় তাদের কাজ দ্রুত হয়ে যায়। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন কাজে আসা ওমর ফারুক জানান, উপজেলা নির্বাচন অফিসের মতো হয়রানি আর কোথাও হয় না। ইন্টারনেট কানেকশন নেই। এ অজুহাতে আইডি কার্ড সংশোধনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে অফিস থেকে জানানো হয়েছে। নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভার থেকে যাচাই করে সত্যায়িত করার কাজে আসলে ইন্টারনেট কানেকশন নেই অজুহাতে উপজেলা নির্বাচন অফিস সহকারী ফিরিয়ে দেন। অনেক সময় অফিসে এসে তাকে পাওয়া যায় না। এ সামান্য কাজ করতে তার কাছে বারবার ধর্ণা দিতে হচ্ছে। অফিস সহকারীদের ব্যবহার শুনলে যে কোন মানুষের রাগ উঠে যাবে। ওদের ব্যবহার শুনে মনে হয় আনোয়ারা নির্বাচন অফিস যেন সচিবালয়ের কার্যালয়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মোবাইলে একাধিক বার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
×