ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে স্যান্ডার্স

পুতিন কর্তৃত্ববাদী ঠগ

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পুতিন কর্তৃত্ববাদী ঠগ

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে সরব হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের বেকারস ফিল্ড শহরে এক নির্বাচনী প্রচারে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ক্রেমলিনকে তুলোধুনা করেন। ভারমন্টের এই সিনিয়র সিনেটর রাশিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা (রাশিয়া) মার্কিন নির্বাচন থেকে দূরে থাকুন। উল্লেখ্য, গত মাসে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বার্নি স্যান্ডার্সকে- এক ইঙ্গিতে জানিয়েছিল রুশ কর্তৃপক্ষ আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বার্নি স্যান্ডার্স শিবিরে হস্তক্ষেপ করতে চায়। ট্রাম্পকে ফের জেতাতেই ক্রেমলিন কর্তৃপক্ষ এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। খবর আলজাজিরা, বিবিসি ও সিএনএন অনলাইনের। শুক্রবারের নির্বাচনী প্রচার অনুষ্ঠানে ৭৮ বছর বয়সী বার্নি স্যান্ডার্স আরও বলেন, আমি রাশিয়ার এই ধরনের হস্তক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করছি। তবে রাশিয়া এই নির্বাচনে ঠিক কিভাবে হস্তক্ষেপ করতে চায়- এ বিষয়টি স্পষ্ট করেননি বার্নি স্যান্ডার্স। এ সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে একজন ‘কর্তৃত্ববাদী ঠগ’ হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, কর্তৃত্ববাদী ঠগ ভøাদিমির পুতিন ও তার সরকার ইন্টারনেটের সাহায্যে প্রোপাগা-া ছড়িয়ে মার্কিন সমাজে বিভেদ তৈরি করতে চাইছেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে যে, রুশ নাগরিকরা মার্কিনীদের মধ্যে বিভেদ তৈরির মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্রকে অবজ্ঞা করছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করে কোরে স্যান্ডার্স বলেন, আমি ট্রাম্পের মতো নই। আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। তিনি বলেন, যারাই মার্কিন নির্বাচন নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইবে- আমি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবই। যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সমাজবাদী নেতা বার্নি স্যান্ডার্স এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনয়ন লড়াইয়ে প্রথম সারিতে রয়েছেন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সরকারের কিছু শীর্ষ নেতা জানতে পেরেছেন যে, এই নির্বাচনে রাশিয়া বার্নি স্যান্ডার্সের বিপক্ষে কাজ করতে চায়। কার্যত ট্রাম্পকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ের পথ সুগম করতেই রাশিয়া এ পদক্ষেপ নিতে চাইছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা বিষয়ক এক কমিটি আরও জানতে পেরেছে যে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকেই মূলত ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে রুশ কর্তৃপক্ষ। অবশ্য শুক্রবার নেভাদায় এক নির্বাচনী প্রচারে-ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বছরের নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টি ¯্রফে গুজব বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ডেমোক্র্যাটরা এই ধরনের আজগুবি গল্প ফাঁদছে। ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা এই ধরনের ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা বিষয়ক কমিটির ওই প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন আমার জয়ের পেছনে কাজ করছেন। এ সময় সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, তাহলে আপনারাই বলুনÑ আজ আমি এখানে নির্বাচনী প্রচারে কেন এসেছি? ২০১৬ সালের নির্বাচনেও রাশিয়া এ ধরনের হস্তক্ষেপ করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ পেয়েছে। অবশ্য ওই নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের ওপর গোয়েন্দা প্রতিবেদন বরাবর বাতিল করেন ট্রাম্প। তিনি এ ঘটনাকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে আসছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রুশরা ২০২০ সালের নির্বাচনের হস্তক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং পরীক্ষা চালাচ্ছেন। এ জন্য তারা ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এসব মাধ্যমে তারা চমকপ্রদ কন্টেন্ট ছাড়তে চাইছে। যেসব কন্টেন্ট কার্যত ট্রাম্পের পক্ষে যাবে। এদিকে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের খবর উড়িয়ে দিয়েছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, এসব অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই। এসব মানসিক বিকারগ্রস্ত অভিযোগ। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে হিলারি ক্লিনটনের কাছে হেরে যাওয়া স্যান্ডার্সকে এখন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বছর আইওয়া ও নিউ হ্যাম্পশায়ার ককাসে তিনি ভাল সাড়া পেয়েছেন। নেভাদায় শনিবারের ককাসের আগে তার প্রচার শিবিরে রুশ হস্তক্ষেপ চেষ্টার খবর এবং তা নিয়ে স্যান্ডার্সের তীব্র নিন্দা এলো।
×