ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের লীলাভূমি ইনানী

প্রকাশিত: ০৯:২১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের লীলাভূমি   ইনানী

পশ্চিমে উথালপাথাল ঢেউ, পূর্বে উঁচু পাহাড় তার মাঝখানেই ইনানী সী-বীচ। ইনানী বিচে বিস্তৃীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রকৃতি নিজ খেয়ালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে অসংখ্য কোরাল। এসব কোরালের রহস্যময়ী অবস্থান অবলোকন করতে এই বীচে কিছুটা সময় কাটাতে দেশ-বিদেশ থেকে আসে হাজারো পর্যটক। ভালবাসা দিবস উপলক্ষে ইনানীর সী-বীচে ভ্রমণপিপাসু দেশী-বিদেশী পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমূদ্র সৈকতের লীলা ভূমি ইনানী সী-বীচ যেন সবাইকে অভিন্ন আনন্দ এনে দিয়েছে। ইনানী বিচের অদূরেই রয়েছে আরও মন মাতানো প্রশান্তির পাটুয়ারটেক সী-বীচ। একটু দূরে পাহাড়ের নিচে রহস্যময়ী কানা রাজার গুহা। গুহার অদূরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ফেলুরাম রোয়াজা ওরফে ফইল্লা চাকমার ম্যাচাং ঘর দেখতে আনন্দ লাগে। এক সময় ইনানী সী-বীচের জলরাশি ও ঢেউয়ের নৃত্য, প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করে সময় কাটাতেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শুক্রবার সকাল থেকে পৃথিবীর দীর্ঘতম বেলাভূমি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ বীচের উখিয়ার ইনানী সী-বীচ দেখা ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাধারণ দর্শনার্থীদের চেয়ে রাজধানীসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভিআইপি ট্যুরিস্টদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এই বীচের গুরুত্ব এবং আকর্ষণ বেড়েই চলছে। সাধারণ পর্যটকরা কক্সবাজার শহর সংলগ্ন বীচ ভ্রমণ করে তাদের নিজ আবাসস্থলে ফিরে নিজেকে গর্বিত মনে করে বলে একাধিক পর্যটকরা উৎফুল্ল মনে জানিয়েছেন। দেশী-বিদেশী পর্যটকরা ইনানী বিচে অবকাশ যাপন ও দর্শনে অধিকতর সময় ব্যয় করতে চাইলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা ও আবাসিক হোটেল-মোটেল না থাকায় তাদেরকে কক্সবাজারে ফিরে যেতে হয় বলে জানালেন সিলেট থেকে আসা পর্যটক দম্পতি সাদেকুর রহমান ও নিলুফা রহমান। তারা বলেন, ইনানী বীচে স্বচ্ছ নীলাব পানি, অসংখ্য কোরালের ছড়াছড়ি, সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য ও সমুদ্র ঘেষা পাহাড়। যার কারণে পর্যটকরা বেশি আনন্দ উপভোগ করতে পারে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক সঞ্জয় দাশ, ফেনী থেকে আসা পর্যটক মোর্শেদুল হক, রাজশাহীর দম্পতি শাহ মোয়াজ্জেম ও শাকিলা ইয়াছমিনসহ আরও একাধিক পর্যটক ইনানী সী-বীচ ঘুরে খুশি মনে বলেন, ভালবাসা দিবস উপলক্ষে আনন্দ ভাগাভাগি করতে আমরা এখানে বেড়াতে এসেছি। ইনানী সী-বীচ তথা কক্সবাজারের মনোরম পরিবেশ দেখে খুব ভালই লেগেছে। আমরা আগে শুনেছিলাম ইনানী সী-বীচে সূর্যাস্তের কথা, কিন্তু বাস্তবে দেখে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। সমুদ্রের পানিতে নেমে গোসল, প্রবাল পাথরে বসে মনের আনন্দে ছবি করেছি। ইনানী বিচের পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখতে পর্যটকদের কিছু সময় হাতে নিয়ে আসতে হলেও ভাটার সময় এই বিচের পানি যেমন নীলাব দেখায়, তেমনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কোরাল পাথুরের উপর ছোটাছুটি স্মৃতির মানসপটে ফটোসেশন করা, সূর্যাস্ত দর্শন আরও কত কিচ্ছু মনকে আন্দোলিত করে তোলে। আবার জোয়ারের সময় থেকে কিছুক্ষণ অবস্থান কালে জোয়ারের স্বচ্ছ পানিতে ঢেউয়ের আঁছড়ে ক্রমেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য কোরালের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, ইনানীর বড় ও ছোট খালে জোয়ারের পানিতে টইটম্বর হওয়া, খালে মাছ ধরার নৌকা ও ফিশিং বোটের নড়াচড়া, ইনানীর পাশেই সবুজ-শ্যামল গ্রামের চিরাচরিত চিত্র, পাহাড়ের সবুজ গাছ-গাছালি, বীচের লাল কাঁকড়াগুলোর হুড়োহুড়ি, সাগরে জেলেদের মাছ শিকারের দৃশ্য দেখতে ভাল লাগে। ইনানীতে তারকা মানের আবাসিক হোটেল, বন বিভাগের রেস্ট হাউস, ব্যক্তিমালিকানাধীন কয়েকটি কটেজ আছে। তবে তা পূর্ব থেকে বুকিং করে না আসলে হয়ত ইনানীতে রাত যাপনের ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যায়। -এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার থেকে
×