ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এএইচএম নোমান

স্কাউটিংয়ের অপর নাম দেশপ্রেম

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 স্কাউটিংয়ের অপর নাম দেশপ্রেম

স্কাউট বলতেই দেশপ্রেম, মানবসেবা, শৃঙ্খলা, স্বেচ্ছাশ্রম, নিবেদিত মন, পরোপকার, সময়ানুবর্তিতা, নিয়মানুবর্তিতা, বিনয়, সাশ্রয় চর্চা ও অনুশীলনকারী, মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের ইউনিফর্ম পরা এক আকর্ষিত যুবশক্তি। যতটুকু জানি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক এর প্রসার ও কর্মতৎপরতা। স্কাউট গুণাবলী যখন জনমনে তথা জাতীয় ভিত্তিতে নেতৃত্বের উদ্যোগ ও ব্যবহারিক কার্যক্রমে বিলিয়ে দিয়ে সঞ্চারিত করে শক্তি দেয় তারই নাম পরিবর্তন, বিবর্তন, উন্নয়ন। যা গ্রাম, সমাজ ও দেশ সেবায় শুধু চেতনাই সৃষ্টি করে না বরং বাস্তবতার নিরিখে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাস্তবায়ন কাজে এগিয়ে নিয়ে যায়। রবার্ট ব্যাডেন পাওয়েল ১৯০৮ সালে স্কাউটিং প্রবর্তন করেন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধকাল (১৯৩৯-৪৫) থেকে স্কাউট সক্রিয় ও বর্তমান রূপ লাভ করে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম স্কাউটের এ সকল আদর্শ, উদ্দেশ্য ও কার্যকারিতা ধরে রাখাই হলো স্কাউট আন্দোলনের আদর্শ। নতুবা কাগুজে বা আনুষ্ঠানিকতায় আটকা পড়ে থাকে, মৌলিক ধারাবাহিকতা থাকে না। স্কাউট আন্দোলনের বহমানতা ধরে রাখা ও এগিয়ে নেয়ার আমরাই ধারক ও বাহক। স্কাউটিংয়ের এক প্রধান আদর্শ দেশপ্রেম। যা এখন আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য বড় প্রয়োজন। তারা দেশ পরিচালনা ও দেশ গড়ার গুরুদায়িত্ব পালন করবে। এ দেশপ্রেমের চেতনা নিজের ভেতর ধারণ ও প্রস্ফুটিত করতে হয়। একে অঙ্কুরিত করতে হয়। যতœ করে লালন-বড় করতে হয়। দেশপ্রেমের এ চেতনায় নিজকে উদ্দীপ্ত করতে প্রয়োজন হয় দেশের ইতিহাস চর্চা ও এর ঐতিহ্য নিজেতে সঞ্চারিত করা। এ ধরনের একটি ঘটনা রামগতি তথা সমগ্র দেশের স্কাউটদের বড় উপজীব্য। সেটা জাতির পিতার রামগতিতে আসা, দেশ গড়ার ডাক দেয়া এবং স্বাধীনতার লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরণ কাজ করে যাওয়া। বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশটাকে স্বাধীন করেছেন, এগিয়ে নিয়েছেন, ভাঙ্গা-গড়া ভুলুয়া নদীপাড় চর গ্রাম পোড়াগাছায় উন্নয়নের কাজের ডাক দিতে আগমন করেছেন, পথ দেখিয়েছেন, অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, তাতে বৃহত্তর রামগতিবাসী আজ ধন্য। দেশব্যাপী তা ইতিহাসের অংশ। কৃষক শ্রমিক জেলেদের শেখের কিল্লা-বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লার স্বপ্ন আজ জাগরূক, পথপ্রদর্শক, বাতিঘর। প্রতিটি কিশোর-কিশোরী জনতা স্কাউট সদস্য-সদস্যা আজ সংগ্রামী-জাগ্রত জনতা। ২২ ফেব্রুয়ারি স্কাউট দিবস। স্কাউট আন্দোলনের ইতিহাস পুরনো ও আন্দোলনকারীদের গর্ব। ৫০ এর দশকে আলেকজান্ডার প্রাইমারী-হাইস্কুলে ছাত্র থাকা অবস্থায় স্কাউটদের কথা জানি নাই-শুনি নাই। তখন ছিল বাৎসরিক নাটক, গজল, কোরান তেলাওয়াত, কবিতা, রচনা, ফুটবল, সাঁতারসহ বিবিধ ধরনের খেলাধুলা। সাহিত্য, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎকর্ষতা। আমার লেখা কবিতাংশে বঙ্গবন্ধুর দেশগড়ার ডাক ও দেশপ্রেমের যে বীজ রামগতিতে রোপিত হয়েছিল তা আজ অঙ্কুরিত হয়ে শুধু শেখের কিল্লার পাদদেশেই ব্যবহারিক থাকে নাই, সারাদেশ ও দুনিয়ায় দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী অনুকরণীয়। মুক্ত স্বাধীন গ্রাম-বাংলায় বঙ্গবন্ধুর স্বেচ্ছাশ্রম গ্রামোন্নয়ন ও উৎপাদনের প্রথম ডাক এক বিশাল মাইলস্টোন। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে যখন উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় উদ্যোগে স্কাউট জাতীয় আন্দোলন শেখের কিল্লা ঘিরে লিখতে বলা হলো তখন ৭০ দশকের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রামোন্নয়ন সর্বপ্রথম ডাকের কথা হাজারো সমবায়ীসহ একজন সমবায়ী অ আ-ক খ লিখে বুকে ধারণ করে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী হিসেবে দিব্যি স্মরণে আসে। যা আজ মহাউৎপাদন, উন্নয়ন, ক্ষেত-খামার, জেলে নৌকা চোখে ভেসে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর শেখের কিল্লার স্বপ্ন ডাকে স্কাউট আন্দোলনের সব গুণাবলীর সমাহার দেখতে পাই। আমরা সবাই যাতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কীর্তিকে ব্যবহারিকতায় আনতে পারি, তাই আজকের এই দিনের কামনা। রামগতিতে বঙ্গবন্ধুর আগমন- ১৯৭২ সালের ভাষার মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রেরণা। বঙ্গবন্ধুর উৎপাদন উন্নয়ন ডাকের আজ ৪৮ বছর পূর্তি। আমাদের অগ্রগতি ও বিচ্যুতির হিসাব-নিকাশ মূল্যায়নের পালা। সেবা ও ত্যাগের প্রকৃত ইতিহাস ধারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তা-উচ্চতায় এগিয়ে যাওয়াই আজ আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। রামগতি- ‘সয়াবিন জেলা লক্ষ্মীপুর’-নোয়াখালী তথা উন্নয়নকামী জনতার পক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লা পাদদেশে আগমন করার সাদর আমন্ত্রণ জানাই। লেখক : প্রতিষ্ঠাতা, র্ডপ ও গুসি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার বিজয়ী
×