ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আসন্ন বাফুফের নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়াই করার ঘোষণা দিলেন এই সাবেক তারকা ফুটবলার, চাপ সৃষ্টি করে রুহুল আমিনকে বসিয়ে দেয়ার অভিযোগ

সালাউদ্দিনকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবেন না বাদল রায়

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সালাউদ্দিনকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবেন না বাদল রায়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে যাচ্ছেন কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। টানা চতুর্থবারের মতো বসতে চাচ্ছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতির মসনদে। বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন বাফুফের আগামী নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়বেন না। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পরপরই গণমাধ্যমে কাজী সালাউদ্দিনকে নিয়ে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। রুহুল আমিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পরই ঘটা করে সংবাদ সম্মেলন করেন কাজী সালাউদ্দিন। সেখানে আসন্ন নির্বাচনে আবারও সভাপতি হওয়ার বাসনা প্রকাশ করেন। নির্বাচনে সালাউদ্দিনের সবচেয়ে বড় বাধা, পথের কাঁটা তরফদার রুহুল আমিন সরে পড়ায় ভাবা হচ্ছিল ফাঁকা মাঠেই গোল দিতে চলেছেন সালাউদ্দিন। কিন্তু আদতে তা হচ্ছে না। বাফুফের বর্তমান সহসভাপতি, সাবেক তারকা ফুটবলার বাদল রায় তা হতে দিচ্ছেন না। আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিত বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। গতকাল জনাকীর্ণ সংবাদ সন্মেলনে তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত সভাপতি পদে কেউ না দাঁড়ালে আমি আছি। সালাউদ্দিনকে ফাঁকা মাঠে গোল কিছুতেই দিতে দেব না। সালাউদ্দিনকে ভোট না দেয়ার জন্য কাউন্সিলরদের অনুরোধ করেছেন বাদল রায়। ফুটবল বাঁচাতে পরিবর্তনের যে আন্দোলন চলছে এর পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সালাউদ্দিনের প্যানেল থেকে গতবার সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন বাদল রায়। একই প্যানেল থেকে সহসভাপতি নির্বাচিত হন আরেক দক্ষ সংগঠক ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ মহিউদ্দিন মহিও। বাদল-মহি সালাউদ্দিনের কর্মকা- নিয়ে বরাবরই সোচ্চার। ফুটবল যে ধ্বংসের মুখে, ফুটবলের অধঃগতি এবং দুর্নীতির জন্য সালাউদ্দিনকে দায়ী করেন বাদল রায়। তিনি বললেন ১২ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন সালাউদ্দিন ভাই। দীর্ঘ এই সময়ে তার সঙ্গে সংসার করেছি। তিনি ফুটবলের ভাল চান না। দেশের ফুটবল ধ্বংস করেছেন, ক্লাব ফুটবল ধ্বংস করেছেন। আগামীতে তাকে সভাপতি করা হলে ফুটবল তো মরেছে, কেবল কবর দেয়া বাকি থাকবে। এদিকে হঠাৎ রুহুল আমিনের সরে যাওয়াকে মানতে পারছেন না বাদল রায়। রুহুল আমিন সরে যাননি। তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে সালাউদ্দিনের কারসাজিতে। রুহুল আমিনের সরে যাওয়ার পেছনে বড় ধরনের কলকাঠি নেড়েছেন সালাউদ্দিন এমন অভিযোগ বাদল রায়ের। তরফদার সরে গেছেন। কিন্তু আমি মরে যাইনি। যতদিন বেঁচে থাকব অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলে যাব।’ রুহুল আমিন সরে যাওয়াতে নির্বাচন নিয়ে একটা সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কাউন্সিলরদের অনেকে নাকি এমনটা বলেছেন মন্তব্য বাদল রায়ের। নির্বাচন নিয়ে যে একটা গুমোট পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেটা অস্বীকার করছেন না বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি। বাদল বলেন, তরফদার যখন ফুটবলের স্পন্সর ছিলেন তখন অনেক কাজ হয়েছে। চুক্তির মেয়াদ থাকতে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এমপি এ্যান্ড সিলভা নাকি বেশি টাকা দিয়েছে তাই তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করেছে তরফদার। অথচ পাইওনিয়ার লীগ এখন বন্ধ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের বন্ধু বলে নিজেকে বরাবরই পরিচয় দেন সালাউদ্দিন। অথচ বিগত ১২ বছরে শেখ কামালকে এতটুকু সম্মান দেখাননি সালাউদ্দিন, মন্তব্য বাদল রায়ের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, শেখ কামালকে যদি কেউ সম্মান জানিয়ে থাকেন তিনি তরফদার রুহুল আমিন। তরফদার তিনবার শেখ কামালের নামে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছেন। আর সালাউদ্দিন বঙ্গবন্ধুর নামে টুর্নামেন্ট করেছেন মানহীন দল নিয়ে নামকাওয়াস্তে। শেখ কামাল আধুনিক ফুটবলের প্রবক্তা। সালাউদ্দিনের কমিটিতে থাকলেও সবসময় ফুটবলের উন্নয়ন, উন্নতি নিয়ে ভেবেছেন।
×