ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হতাশার হার চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল ও পিএসজির

প্রকাশিত: ১১:৫০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 হতাশার হার চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল ও পিএসজির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চলতি মৌসুমে অপ্রতিরোধ্য ছন্দে থাকা লিভারপুল অবশেষে হারের স্বাদ পেয়েছে। তাদের আকাশ থেকে নামিয়েছে সবসময়ের লড়াকু ও সমীহ জাগানিয়া হিসেবে পরিচিত স্প্যানিশ ক্লাব এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে কোচ দিয়াগো সিমিওনের দল। মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে ম্যাচের শুরুর দিকেই এ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে দেন স্পেনের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার সাউল নিগুয়েজ। গোলটি ধরে রেখে শেষ পর্যন্ত বীরের বেশেই মাঠ ছেড়েছেন সিমিওনের শিষ্যরা। এই জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার দৌড়ে এ্যাটলেটিকো এগিয়ে থাকলেও সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি লিভারপুলের। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদেরও সমান সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে আগামী ১১ মার্চ নিজেদের মাঠ এ্যানফিল্ডে জয় পেতে হবে ফিরমিনো, মানে, সালাহদের। ওই ম্যাচে কমপক্ষে দুই গোলের ব্যবধানে জিতলেই শেষ আটে পৌঁছে যাবে কোচ জার্গেন ক্লপের দল। এ কারণে প্রিমিয়ার লীগে শিরোপার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া লিভারপুল এখন থেকেই দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। আরেক ম্যাচে চমক দেখিয়ে নেইমারকে সঙ্গী করে মাঠে নেমেও হারের হতাশায় ডুবতে হয়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনকে (পিএসজি)। জার্মান সফরে স্বাগতিক ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে প্যারিসের পরাশক্তিরা। মূলত ১৯ বছর বয়সী নরওয়ের তরুণ ফুটবলার আরলিং হালান্ডের কাছে হেরেছেন নেইমার-এমবাপেরা। ডর্টমুন্ডের হয়ে তিনি একাই করেন দুই গোল। যে কারণে চোট কাটিয়ে দলে ফিরে নেইমার এক গোল করলেও পিএসজির হার এড়াতে পারেননি। এই হারে পিএসজির কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা অনেকটাই কঠিন হয়ে গেছে। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠে বড় ব্যবধান জিততে হবে কোচ টমাস টাচেলের দলকে। চোট কাটিয়ে লিভারপুলের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এ্যাটলেটিকোর হয়ে খেলেছেন আলভারো মোরাটা ও দিয়াগো কোস্টা। এছাড়া প্রথমবারের মতো সিমিওনে ফরাসী মিডফিল্ডার থমাস লেমারকে মূল একাদশে খেলান। অন্যদিকে লিভারপুল প্রত্যাশিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামে। কিন্তু স্বাগতিকদের দুর্ভেগ্য রক্ষণভাগকে তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি সালাহ, মানেরা। একটি শটও তাদের ঠিকমতো নিতে দেননি সিমে ভ্রাসালিকো, স্টিফেন সাভিচ, লুইপ ফিলিপরা। শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকা এ্যাটলেটিকো চতুর্থ মিনিটে প্রথম সুযোগেই বাজিমাত করে। এ সময় কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন লিভারপুলের ডিফেন্ডাররা। সেই সুযোগে খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভেদ করেন সাউল (১-০)। কিছুই করার ছিল না এ্যালিসনের পরিবর্তে খেলা লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে এ্যাটলেটিকো। তবে প্রথমার্ধে ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল অতিথিরা। সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন মোহাম্মদ সালাহ। ম্যাচ শেষে এ্যাটলেটিকো কোচ দিয়াগো সিমিওনে বলেন, এই রাতটা সেই রাতগুলোর মধ্যে একটা যাকে ভোলা যায় না। আমরা হয়তো বড় ব্যবধানে জিততে পারিনি। কিন্তু আমরা বিশ্বের সেরা দলকে হারিয়েছি। চলমান মৌসুমটা খুব একটা ভাল যাচ্ছে না এ্যাটলেটিকোর। ইতোমধ্যেই ছয়টি ম্যাচে হেরে লা লিগায় শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের থেকে ১৩ পয়েন্ট পিছিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে তারা। তবে এসব নিয়ে ভাবছে না দলটি। তাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র লড়াকু মানসিকতা। যেটা মনে করিয়ে দিয়ে আর্জেন্টাইন কোচ সিমিওনে বলেন, আমাদের টিম বাসটি যখন স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে এবং সেই মুহূর্তে যখন আমি সমর্থকদের দেখতে পাই তখনই ম্যাচ জয়ের গন্ধ পাচ্ছিলাম। তবে আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। পরের ম্যাচটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ বলেন, আমরা তো ৫-০ গোলে হারিনি। ম্যাচটিকে আমরা মোটেই সহজভাবে নেইনি। কিন্তু যখনই ১১ জন খেলোয়াড় লিভারপুলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছে তখন থেকে তাদের সবকিছু দেয়া উচিত ছিল। এই হারে যে ক্লপ মোটেও হতাশ নন সেটা তার পরের কথাতেই স্পষ্ট। ক্লাব বলেন, লিভারপুলের সমর্থকদের উদ্দেশে বলছি, যারা আগামী ম্যাচের টিকেট পেয়েছেন তাদের সবাইকে এ্যানফিল্ডে স্বাগতম। বোঝাই যাচ্ছে, হারের বদলা নিতে তেতে আছে লিভারপুল।
×