ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রেজাউলের বিপরীতে আলোচনায় ধানের শীষের তিন প্রার্থী

প্রকাশিত: ১০:১৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রেজাউলের বিপরীতে আলোচনায় ধানের  শীষের তিন প্রার্থী

স্টাফ রিপের্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা চূড়ান্ত হলেও বিএনপিতে চলছে নানা সমীকরণ। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে অপ্রত্যাশিত চমক থাকায় বিএনপিও নতুনভাবে হিসাব কষছে। নৌকা প্রতীকের রেজাউল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থী কে, তা জানতে উদ্গ্রীব ভোটাররা। মহানগর বিএনপির সভাপতিই মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন- এমন আভাস থাকলেও মনোনয়ন পেতে আগ্রহী আরও কয়েক নেতা। সোমবার শুরু হয়েছে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ, যা চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পরদিনই জানা যেতে পারে কে হচ্ছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী। তবে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে কোন ধরনের সংশয় না থাকায় চসিক নির্বাচন বেশ জমজমাট ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, এমনই আশা করছে নগরবাসী। এদিকে, চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আগে প্রার্থী ঘোষণা করায় প্রচারে খানিকটা এগিয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দল। বিএনপির নমিনেশন জানতে এখন অপেক্ষায় দলটির তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়ার প্রধান দাবিদার। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইচ্ছুক। দলে তার সমান্তরাল নেতা এই সময়ে আর নেই। চট্টগ্রামের শীর্ষ বিএনপি নেতাদের মধ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আবদুল্লাহ আল নোমান কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতা, যাদের মেয়র পদে আসার কথা নয়। এর আগে মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, মনজুর আলমসহ যারা নির্বাচন করেছিলেন তারা আর মেয়র নির্বাচনে আসছেন না, যা এক প্রকার নিশ্চিত। বিএনপির মেয়র পদে প্রার্থিতায় এখন তিনটি নামই ঘুরপাক খাচ্ছে আলোচনায়। তারা হলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর এবং নগর বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, চসিকসহ সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং উপ-নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি, যা দলীয় সিদ্ধান্ত। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা নেই। এখন কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঢাকায় একইসঙ্গে চসিক মেয়র এবং উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদের দলীয় ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। আগামী ১৯ ও ২০ তারিখের মধ্যে চসিকে আগ্রহীরা ফরম সংগ্রহ করবেন। কাউন্সিলর পদে অংশগ্রহণকারীদের ফরম বিতরণ চট্টগ্রামেই হবে। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষিত হবে। বিএনপির চসিক মেয়র পদে আগ্রহী একাধিক প্রার্থী থাকলেও বিবেচনায় এগিয়ে আছেন ডাঃ শাহাদাত হোসেন। তিনি আগ্রহী হলে অন্য কেউ বিবেচনায় আসবেন না বলে আভাস দিচ্ছে দলীয় সূত্র। এর বাইরে আবুল হাশেম বক্কর এবং এরশাদ উল্লাহ মেয়র পদে ধানের শীষের টিকেট পেতে চান। এরমধ্যে সাধারণ সম্পাদক বক্কর এখনও পর্যন্ত দলের প্রার্থী হিসেবে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। তবে এরশাদ উল্লাহ ২০০৮ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও-বোয়ালখালী আসনে মহাজোট প্রার্থী মঈনউদ্দিন খান বাদলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ বলা হলেও বিএনপি বেশ প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামবে বলে ইঙ্গিত রয়েছে। মুখে ইভিএমের বিরোধিতা করলেও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ক’টি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় তাদের মধ্যে এক ধরনের আস্থাও সৃষ্টি হয়েছে। কেননা এ পদ্ধতিতে ভোটার কেন্দ্রে না এলে যে ভোট দেয়া যায় না, তা ঢাকা ও চট্টগ্রামের নির্বাচনে ভোট কম কাস্ট হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে। চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থিতা কেমন হতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি বলেন, স্বাভাবিকভাবে বিবেচনায় সভাপতির নামটিই আসবে আগে। সভাপতি আগ্রহী না হলে আসবে সাধারণ সম্পাদক এবং এরপর আসবে অন্য কাউকে নিয়ে বিবেচনা। তবে এটা কোন সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, নির্বাচনে বড় দলে অনেক আগ্রহী প্রার্থী থাকতে পারেন। এ নিয়ে সমস্যা হবে না। কেন্দ্র থেকে যাকে মনোনয়ন দেবে তিনিই প্রার্থী হবেন, তার পক্ষেই নামবেন সকল নেতা ও কর্মী। বিএনপির এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকে তিনি একইসঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম বলেও উল্লেখ করেন।
×