ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘চীনফেরত মানেই করোনা আক্রান্ত নয়’

প্রকাশিত: ১০:০৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  ‘চীনফেরত মানেই করোনা আক্রান্ত নয়’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চীনফেরত মানেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নয়। কিংবা এটি এখনও বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠেনি। ঢাকায় সোমবার আইইডিসিআর নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে, ইতোমধ্যে আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারেন্টাইন থেকে ঘরে ফেরা ৩১২জনের সবাই সুস্থ আছেন। তাদের কারোর মাঝে কোন ধরনের অসুখবিসুখ দেখা না দিলেও আরও অন্তত দশদিন নজরদারিতে রাখা হবে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস সন্দেহে চীনফেরত এক শিক্ষার্থীর রক্তের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এদিকে চীনে আটকাপড়া ১৭১ বাংলাদেশীকে এখনই ফিরিয়ে না আনার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকার চীনা রাষ্ট্রদূত। সোমবার ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর রুটিন মাফিক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছে- দেড়মাস আগে চীনে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর তা বিশ্ববাসীর জন্যও আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। দেড় হাজারের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছে, আক্রান্তের সংখ্যাও ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। চীনের বাইরে দুই ডজনের বেশি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে, এর মধ্যে চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গাপুরে, সেখানে কয়েকজন বাংলাদেশীও ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাংলাদেশের অনেকের চীনে যাতায়াতের পাশাপাশি বাংলাদেশী অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন দেশটিতে। চীনের যে নগরীতে প্রথম ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে, সেখানে থাকা তিন শতাধিক বাংলাদেশীকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর দুই সপ্তাহ ঢাকায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এর মধ্যেই চীনের অন্যান্য প্রদেশ এবং সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা বাংলাদেশীদের নিয়ে তাদের এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয়। তাদের হাসপাতালে যেতে চাপ দেয়ার ঘটনাও ঘটছে। এ সময় আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা বাংলাদেশীদের নিয়ে মানুষের ভেতরে কিছু ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। আমরা একটা বিষয় দেখতে পাচ্ছি, ইদানীং সিঙ্গাপুর বা চীন থেকে এলেই তাকে আইসোলেশন করার একটা প্রেসার আসে মানুষ এবং সংশিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের কাছ থেকে। কিন্তু চায়না বা সিঙ্গাপুর থেকে এলেই তো তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। ঘরে ফেরা সেই ৩১২ জন থাকবে নজরদারিতে আশকোনা হজক্যাম্প থেকে ঘরে ফেরা ৩১২ বাংলাদেশীকে আরও ১০দিন সরকারী নজরদারিতে রাখা হবে। আরেকবার তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। এরপরই তারা স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরতে পারবেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন- ৩১২ জনের কারো শরীরেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার কোন লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায়নি। সে কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাদেরকে আমরা ‘কন্ডিশনাল রিলিজ’ দিয়েছি। কোয়ারেন্টাইনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪ দিন পর্যন্ত আলাদা রাখা। বরগুনায় একজনের নমুনা সংগ্রহ এদিকে বরগুনায় চীনফেরত এক শিক্ষার্থীর করোনাভাইরাস সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখান থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানানÑজেলা সদর হাসপাতালে করোনাভাইরাস সন্দেহে চিকিৎসাধীন চীনফেরত শিক্ষার্থী ইমরানের নমুনা (রক্ত, নাক ও গলা থেকে সোয়াপ) সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইসিডিআর)-এর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বরগুনার সিভিল সার্জন হুমায়ূন শাহিন খান।
×