ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একজন কাঠ ঠোকরা দরকার গর্ভনর পদে

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

একজন কাঠ ঠোকরা দরকার গর্ভনর পদে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর পদে একজন ‘কাঠ ঠোকরা’কে নিয়োগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট-উত্তরণের’শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনরের দায়িত্ব পালনের সময় বেসরকারিখাতের ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) পুরো পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণের বিষয়টি উল্লেখ করেন।তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর পদে আরও শক্ত লোক (গর্ভনর) প্রয়োজন। জনব খালেদ বলেন, বেসরকারি খাতের ফারমার্স (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড) এবং রাষ্ট্রীয় বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে পদচ্যুত না করে পদত্যাগের সুযোগ দেওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাবেক এই ডেপুটি গভর্নর। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরের মানুষগুলো এখন আসলে...। তখন হয়েছে এখন কেন হচ্ছে না? ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। তাকে অপসারণ করা হলো না কেন? বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান একদিন আগে পদত্যাগ করেছেন, তাকে পদচ্যুত করা হলো না কেন? তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে নষ্ট করে লাভ নেই। ওখানে শক্ত লোক দেন। পৃথিবীর সব দেশে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে সব জায়গায় খুবই কাঠ ঠোকরা লোককে গর্ভনর করা হয়। ওরা তো কারো সঙ্গে চললে অসুবিধা। সেজন্যই আমি বলবো বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের টার্ম শেষ হয়ে আসছে, এরপর একটা কাঠ ঠোকরা লোক দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিল্ডিং কিছু করবে না।’ নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, আমি যখন বাংলাদেশ ব্যাংকে ছিলাম, তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান ছিলেন মামুন। তিনিসহ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের পুরো বোর্ডকে বরখাস্ত করেছিলাম। প্রশ্নের সম্মুখীন যে হইনি তা নয়, আমরা বোর্ডকে বুঝিয়েছি। আমরা তো আওয়ামী লীগ করার জন্য দায়িত্ব নিইনি। তিনি বলেন, আপনারা আমাদের বসিয়েছেন আইন করার জন্য। আমরা কোড চেঞ্জ করিনি, করেছি তো করেছি-ই। আবার ইলেক্টেড হয়ে এলে সমস্যা নেই। বলেছি ঘোর আপত্তি আছে। তাহলে আমরাও থাকবো না আপনারাও থাকবেন না।’ তিনি বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত যারা খেলাপি তারা মওকুফ পেয়ে গেছেন। এরা কারা? গরিব মানুষ তো ঋণই পায় না। এদের মাফ করে দেওয়ার অর্থ হলো সরকার ও রাষ্ট্র খেলাপিবান্ধব। দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিলের সার্কুলার জারি করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাধ্য হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হচ্ছিল, আমি তখন ছিলাম। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ, ঢাবি উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
×