ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শামীমার মতো কোন জঙ্গীকে দেশে ঢুকতে দেয়া হবে না

প্রকাশিত: ১০:০৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 শামীমার মতো কোন  জঙ্গীকে দেশে ঢুকতে  দেয়া হবে না

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, শামীমার মতো কোন জঙ্গীকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। তার জন্ম হয়েছে ইংল্যান্ডে। তার বাবা, মা, নানা, নানি, স্বামী সবাই ব্রিটিশ নাগরিক। আর এসব কারণে ‘আইএস বধূ’ শামীমাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। এই ধরনের জঙ্গী বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নয়। শনিবার বিকেলে সিলেট নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে মোয়াজ্জেম-ফাতেমা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনে থাকা কোন বাংলাদেশী এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। এটা একটা সুখবর। চীনফেরত ১৭১ জনের জায়গা হয়েছে আমাদের হজ ক্যাম্পে। আমরা আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। চীনে অবস্থানরত অবশিষ্ট বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমে দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে।’ শনিবার বাদ জোহর সিলেট নগরীর হাফিজ কমপ্লেক্সে ভাষাসৈনিক, সিলেট ল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা-অধ্যক্ষ আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ও তার সহধর্মিণী মহিয়সী নারী সৈয়দা শাহার বানু স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে মরহুমদ্বয়ের পুত্র- সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাবেক সচিব এনটিসির সাবেক চেয়ারম্যান এ কে আবদুল মুবিন পিতা-মাতার কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের মাগফেরাতের জন্য সিলেটসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন। এ সময় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কনিষ্ঠপুত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আবদুল মোমেন, কন্যা জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ শাহলা খাতুন, পুত্র ডেল্টা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও আলফা মার্চেন্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ এস এ মুইজ (সুজন), ব্র্যাকের সাবেক পরিচালক শিপা হাফিজ, ড. মোমেনের সহধর্মিণী সেলিনা মোমেন, আবদুল মুহিতের ছেলে শাহেদ মুহিতসহ দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ১৯০০ সালের ২ জুন সিলেট শহরের রায়নগর এলাকায় সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ শাসনামলে রাজনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। পেশায় একজন আইনজীবী ছিলেন। ১৯৩৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর হিসেবে মনোনীত হন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোর্টের সভ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরিষদের সদস্য ও পরীক্ষক ছিলেন তিনি। এমসি কলেজ, মদনমোহন কলেজ, সিলেট সরকারী মহিলা কলেজ, সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা, সিলেট ল কলেজসহ সিলেট শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠায় তিনি জড়িত ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া ভাষা আন্দোলনে সিলেট অঞ্চলে তিনি একজন সংগঠক হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ৮ মার্চ গোবিন্দ পার্কে (বর্তমান হাসান মার্কেট) জনসভা আয়োজন এবং একই জায়গায় ১৯৫২ সালের বিশাল জনসভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন। তিনি ১৯৮১ সাল পর্যন্ত সিলেট ল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এই কর্মবীর ইন্তেকাল করেন। তার সহধর্মিণী, রতœগর্ভা নারী সৈয়দা শাহার বানুও ছিলেন একজন সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী। ১৯৪৭ সালের গণভোট ও ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সিলেট শহরের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠায় তিনিও অগ্রণী ছিলেন। সিলেট সরকারী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা ও কলেজটি টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি সিলেট চালিবন্দর বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সিলেট মহিলা সমিতির সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৩ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
×