ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভালবাসা দিবসে সাইফ-মোহামেডানের শুভসূচনা

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  ভালবাসা দিবসে সাইফ-মোহামেডানের শুভসূচনা

জাহিদুল আলম জয় ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের (বিপিএল) নতুন মৌসুমের পর্দা উঠেছে বৃহস্পতিবার। আর দ্বিতীয় দিনে শুভসূচনা করেছে দুই শিরোপা প্রত্যাশী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড ও সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। শুক্রবার রাতে ভালবাসা দিবসে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আরমবাগ ক্রীড়া সংঘের মুখোমুখি হয়েছিল মোহামেডান। দারুণ খেলে বিখ্যাত সাদাকালো জার্সিধারীরা জয় পেয়েছে ১-০ গোলে। মোহামেডানের হয়ে ম্যাচের ৩০ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন বিদেশী ফুটবলার উগুচুকোয়ু অভি মোনেকে। একই দিন বিকেলে ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আরেক ম্যাচে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকেও ১-০ গোলে হারিয়েছে সাইফ স্পোর্টিং। জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন রুয়ান্ডার ডিফেন্ডার এমেরি। গত ডিসেম্বরে মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট ফেডারেশনের কাপের ফাইনালে খেলেছিল রহমতগঞ্জ। যা ক্লাবটির ৭৭ বছরের ইতিহাসে সেরা সাফল্য। ফাইনালে বসুন্ধরা কিংসের কাছে হারলেও নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছিল পুরান ঢাকার ক্লাবটি। তবে প্রিমিয়ার লীগের শুরুতে সেই চমক ধরে রাখতে পারেনি দলটি। অবশ্য জয় পেতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে সাইফকে। নিজেদের হোম ভেন্যুতে জয়সূচক গোলটির জন্য ৬৩ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে জামালদের। ডি বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রিকিকে চোখ ধাঁধানো গোল করেন এমেরি। ফেডারেশন কাপের দুর্দান্ত পারফরমেন্স ম্যাচটিতে দেখাতে পারেনি রহমতগঞ্জ। শুরু থেকেই দলটির মধ্যে ম্যাচ ড্র করার মানসিকতা লক্ষ্য করা যায়! যে কারণে রক্ষণদুর্গ আগলে রেখে পাল্টা আক্রমণের কৌশলে খেলে তারা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানীর দলের। ফলে হার দিয়ে যাত্রা শুরু হলো রহমতগঞ্জের। আর শুভসূচনা হয়েছে শিরোপাপ্রত্যাশী সাইফের। একটা সময় দেশের ফুটবলে সাফল্যের প্রায় সবটুকুই ছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডান স্পোর্টিং কেন্দ্রিক। সময়ের পরিক্রমায় আবাহনী দাপট ধরে রাখলেও অনেকটাই মিয়ম্রাণ হয়ে গেছে মোহামেডান! গত কয়েক বছর ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাবটি কোনরকমে টিকে আছে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর পেশাদার লীগে। কোটি কোটি সমর্থকপুষ্ট এ দলটিকে এখন লড়াই করতে হয় রেলিগেশন এড়াতে। গত মৌসুমেও এই ধারা অব্যাহত ছিল। তবে লীগের দ্বিতীয় পর্বে অস্ট্রেলিয়ান কোচ সিন ব্রান্ডেন লেনের হাত ধরে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়া বিখ্যাত সাদা-কালো জার্সিধারীরা। বিশেষ করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনীকে ৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চমক দেখায় মোহামেডান। সাদা-কালোদের এই পরিবর্তন আচমকা আসেনি। নতুন কোচের নয়া মন্ত্র, খেলোয়াড়ের নিষ্ঠা ও ক্লাব অফিসিয়ালদের প্রচেষ্টাতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটি। সাফল্যের এ ধারা ধরে রেখে নতুন মৌসুমে শিরোপা লড়াইয়ে শামিল হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন মোহামেডানের কোচ, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সমর্থকরা। এ লক্ষ্যে শুরুটা প্রত্যাশিতই হয়েছে সাদা-কালোদের। আরামবাগের বিরুদ্ধে ফেবারিটের মতো খেলেই জয় দিয়ে মিশন শুরু করেছে সিন ব্রান্ডেন লেনের দল। ৫৫ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান এই জাদুকর গত বছরের জুলাইয়ে আবাহনীকে হারানোর পর যে ভালবাসা পেয়েছেন তাতে তিনি আপ্লুত। তাইতো তিনি চলমান মৌসুমে মোহামেডানকে ভাল কিছু উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। ওই সময় সিন ব্রান্ডেন বলেছিলেন, আবাহনীকে হারানোর পর অনেকের কাছ থেকে যেভাবে অভিনন্দন পেয়েছি সেটা অভূতপূর্ব। বিশেষ করে সমর্থকরা যা করছে সেটা এককথায় দারুণ। কতটা আবেগ আর ভালবাসা থাকলে এমন করা যায় সেটা সহজেই অনুমেয়। এই দল আগামী মৌসুমে (বর্তমান মৌসুম) ধরে রাখতে পারলে আমি সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদী। আশা করি চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইট দেয়া যাবে। এ লক্ষ্যে শুরুটা প্রত্যাশিতই হয়েছে মোহামেডানের।
×