ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শাহীন আলমকে কুড়িগ্রামে সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  শাহীন আলমকে কুড়িগ্রামে সংবর্ধনা

রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ অনুর্ধ-১৯ বিশ^কাপ জয়ী বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দলের সদস্য শাহীন আলমকে তার নিজ জেলা কুড়িগ্রামের ক্রীড়ামোদী মানুষ সংবর্ধনা দিয়েছে। শুক্রবার সকালে শাহীন আলম ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম শহরে এসে পৌঁছালে তাকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের হয়। মিছিলটি সারা শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে কলেজ মোড়স্থ বিজয় স্তম্ভে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শাহীন। এ সময় জেলা ক্রীড়া সংস্থাসহ জেলার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে মোটরসাইকেল শোভা যাত্রাসহ তার বাড়ি উলিপুর উপজেলার যমুনা পাইক পাড়া গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় গ্রামবাসীরা তাকে এক নজর দেখতে চলে আসে। জেলার উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা পাইকপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহাদত হোসেনের পুত্র শাহীন। তিন ভাইবোনের মধ্যে শাহীন ছোট। তার দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মা সাতিনা বেগম একজন গৃহিণী। মাত্র দুই শতাংশ জমির ওপর তাদের বাড়ি। এছাড়া আর কিছুই নেই। অভাবের কারণে গ্রামের বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে এসে প্র্যাকটিস করতেন শাহীন। আর এখন সেই ছেলেটি দেশের গৌরব বয়ে আনা দলটির সম্মানিত সদস্য। মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে শাহীন বলেন, ‘বিশ কাপ জয়ে দেশের সম্মান বয়ে আনায় আমি গর্বিত আগামী দুই বছর বিসিবি অনুর্ধ-২১ নতুন প্রকল্পের সঙ্গে চুক্তি করেছি। সেখানে আরও ভাল করার চেষ্টা করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আগামী ১৯ তারিখ গণভবনে যে সংবর্ধনা দেয়া হবে এটা কোনদিন ভাবিনি। এত কম বয়সে এত সম্মান পাব। তার কাছে সম্মান পাওয়া জীবনে একটি বড় অর্জন। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।’ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কুড়িগ্রাম জেলার সহকারী কোচ বিজন কুমার দাস জানান, শাহীন আলমের উঠে আসা ২০১৬ সালে। এসময় জেলা অনুর্ধ-১৬ দলের জন্য তাকে প্রথম নির্বাচন করা হয়। এর আগে সে গ্রামে-গঞ্জে টেপ টেনিস দিয়ে খেলাধুলা করত। স্থানীয় কুড়িগ্রাম ক্রিকেট একাডেমির কোচ মনোজ কুমার দাস ময়না ক্রিকেটে তাকে প্রথম হাতেখড়ি দেয়। এরপর ২০১৭ সালে বিকেএসপির হান্টিং দলের ক্রিকেট কোচ রুশো তাকে বিকেএসপিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয়। সেখান থেকেই তার উত্থান। দীর্ঘদেহী হওয়ার কারণে স্ট্রাইক বোলার হিসেবে সে শ্রীলঙ্কা ও নিউল্যান্ডে জাতীয় দলের বয়সভিত্তিক গ্রুপের হয়ে সফর করে। সর্বশেষ অনুর্ধ-১৯ যুব বিশ^কাপ দলে জায়গা করে নেয়। তবে বিশ্বকাপে দলের পারফর্মেন্স এতটাই ভাল ছিল যে শাহীনের কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। শাহীন আলমের দিনমজুর বাবা শাহাদত ও মা সাতিনা ছেলের এই সাফল্যে দারুণ খুশি। তারা জানান, সেদিনের খেলাটি তারা দেখেছেন। অভাবের কারণে ছেলেকে তেমন একটা সহযোগিতা করতে পারেননি বলে তারা দুঃখ প্রকাশ করেন।
×