ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুশফিক-মার্শালের সেঞ্চুরি, নাঈম হাসানের ৮ উইকেট

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মুশফিক-মার্শালের সেঞ্চুরি, নাঈম হাসানের ৮ উইকেট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলের সঙ্গে পাকিস্তান সফরে যাননি মুশফিকুর রহীম। দলের ব্যাটিং স্তম্ভ নিরাপত্তা শঙ্কায় পারিবারিক অসম্মতিতে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন পাক সফর থেকে। তাকে ছাড়া পাক সফরে টি২০ সিরিজ ও রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ভুগেছে দল। সে কারণে মুশফিকের না খেলায় অনেকেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। এমনকি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজে খেলার জন্য মুশফিকের নিজেকে প্রমাণ করেই ফিরতে হবে এমনটাও শোনা গেছে। সেই প্রমাণটা ব্যাট হাতেই দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) তৃতীয় রাউন্ডে। ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের ডানহাতি অফস্পিনার নাঈম হাসান আতঙ্ক ছড়িয়েছেন, কিন্তু মুশফিক একাই লড়ে খেলেছেন ১৪০ রানের অনবদ্য ইনিংস। এরপরও কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনেই বিসিবি উত্তরাঞ্চল ২৭২ রানে গুটিয়ে গেছে প্রথম ইনিংসে। নাঈম ৮ উইকেট নেন। দিনশেষে পূর্বাঞ্চল ৩ রান তুলতেই হারিয়েছে ২ উইকেট। অপরদিকে একই স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল মার্শাল আইয়ুবের ১১৬ রানের পরও প্রথম ইনিংসে ২৩৫ রানে গুটিয়ে যায়। দিনশেষে ২ উইকেটে ২৯ রান তুলে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল পিছিয়ে আছে ২০৬ রানে। উত্তরাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল ম্যাচ (কক্সবাজার) টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্কভাবেই শুরু করে উত্তরাঞ্চল। ওপেনিং জুটি ৩৬ রানও তুলে ফেলে। কিন্তু ইনিংসের ১৬তম ওভারে পূর্বাঞ্চলের জাতীয় দলের তরুণ অফস্পিনার নাঈম তার ঘূর্ণি জাদুর সূত্রপাত করেন। নিজের করা পরপর দুই ওভারে তিনি সাজঘরে ফেরান জুনায়েদ সিদ্দিকী (৮) ও রনি তালুকদার (২৮)। এরপর আর কোন বোলারকেই তেমন সুযোগ দেননি তিনি, টানা উইকেট তুলে নিতে থাকেন নাঈম। মাঝে শুধু উদীয়মান পেসার হাসান মাহমুদ ফিরিয়ে দিয়েছেন আরিফুল হককে (৪)। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের বাকি ৬ উইকেটও নাঈমের ঝুলিতে ঢুকেছে। তার এমন ঘূর্ণি দাপটের মুখে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট চালিয়ে মুশফিক সেঞ্চুরি হাঁকান। ক্যারিয়ারের ১১তম প্রথম শ্রেণীর শতক হাঁকিয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত হাসান মাহমুদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন মাত্র ১৫৭ বলে ১৬ চার, ১ ছক্কায় ১৪০ রান করে। এরপর ২৭২ রানেই গুটিয়ে যায় উত্তরাঞ্চলের প্রথম ইনিংস। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ইনিংসে ৮ উইকেট শিকার করেন নাঈম। দিনশেষে উত্তরাঞ্চলের স্পিন আক্রমণে পূর্বাঞ্চলও দিশেহারা হয়ে মাত্র ৩ রানেই ২ উইকেট হারিয়েছে। মোহাম্মদ আশরাফুল শূন্য রানেই সাজঘরে ফিরেছেন। তারা এখনও পিছিয়ে ২৬৯ রানে। স্কোর ॥ উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস- ২৭২/১০; ৮২.৪ ওভার (মুশফিক ১৪০, নাঈম ইসলাম ৩১; নাঈম ৮/১০৭, হাসান ২/৫০)। পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস- ৩/২; ৪.১ ওভার (পিনাক ৩, আশরাফুল ০; সানজামুল ১/২, সঞ্জিত ১/০)। মধ্যাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচ (কক্সবাজার একাডেমি) মধ্যাঞ্চল আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপাকে পড়ে। দক্ষিণাঞ্চলের বোলারদের সম্মিলিত আক্রমণে দিশেহারা হয়ে একটানা উইকেট হারাতে থাকা দলকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছেন মার্শাল। তিনি একাই লড়েছেন। এরপরও ১৬৯ রানেই ৮ উইকেট হারিয়েছে মধ্যাঞ্চল। নবম উইকেটে মার্শালের সঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমান ৪৩ রানের জুটি গড়লে সেঞ্চুরি পান মার্শাল। তবে এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ১৮৬ বলে ১২ চার, ২ ছক্কায় ১১৬ রানে সাজঘরে ফিরেছেন। মুস্তাফিজ ক্যারিয়ারসেরা ব্যাটিং করে ২৬ বলে ১ চার, ৪ ছক্কায় ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। কিন্তু মধ্যাঞ্চলের প্রথম ইনিংস থেমে যায় মাত্র ২৩৫ রানে। মেহেদি হাসান ৩টি এবং আব্দুর রাজ্জাক, নাসুম আহমেদ ও শফিউল ইসলাম ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে বিপদে আছে দক্ষিণাঞ্চলও। ২৯ রান তুলতেই শাহরিয়ার নাফীস (১০) ও ইরফান শুক্কুরের (৩) উইকেট হারিয়ে এখনও ২০৬ রানে পিছিয়ে তারা। স্কোর ॥ মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস- ২৩৫/১০; ৮২.২ ওভার (মার্শাল ১১৬, মুস্তাফিজ ৩০*; মেহেদি ৩/৭৮, শফিউল ২/২৪, নাসুম ২/৫১, রাজ্জাক ২/৬২)। দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস- ২৯/২; ৯ ওভার (বিজয় ১৩*, নাফীস ১০; ইরফান ১/১৫)।
×