ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জুতোর তলায় ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার সোনা

প্রকাশিত: ১১:০১, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জুতোর তলায় ১ কোটি ৮৫  লাখ টাকার সোনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় দুই কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ বিমানের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। এর নাম জনাথন মুক্তি বারিকদার (৩৪)। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা ২০ মিনিটে বিমানবন্দরের কনকোর্স হলে ওই পরিচ্ছন্নতা কর্মীর জুতোর তলায় লুকানো অবস্থায় ৩২ স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ জানায়, মাত্র দুইশ’ গজ সোনার চালান বের করে দিতে পারলে ওই ক্লিনারকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হতো। এই চুক্তিতে ক্লিনার জনাথন জুতোর ভেতর এই সোনার চালান পার করতে গিয়ে ধরা পড়ে। আটককৃত জনাথনের গ্রামের বাড়ি খুলনা জেলার খালিশপুর উপজেলার বড় বয়রা গ্রামে। তিনি ২০১৪ সাল থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে বিমানে যোগ দেন। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপন এ্যান্ড মিডিয়া) মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, জনাথন মুক্তি বারিকদার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তার কাছ থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যেও ৪ কেজি ওজনের ৩২ সোনার বার পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের গ্রেফতারকৃত জনানথ জানান, সে সোনার চালানের বাহক হিসেবে দাবি করেন। চালানটি উড়োজাহাজ থেকে বের করে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিলে তিনি ২০ হাজার টাকা পেতেন। এপিবিএন সূত্রে জানা যায়, দুবাই থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় আসে এমিরেটসের ফ্লাইট। ইকে ৫৮২ নম্বর এই ফ্লাইটে পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে যান জনাথন মুক্তি বারিকদার। বিমানবন্দরের ৭ নম্বর বোর্ড-ইন ব্রিজের এমিরেটসের এই উড়োজাহাজ থেকে যাত্রী নামানোর জন্য ডকিং করার পর জনাথন ভেতরে ঢোকেন। ঘণ্টাখানেক পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষে নেমে আসেন তিনি। এ সময় উড়োজাহাজটির নিরাপত্তায় থাকা এপিবিএনের সদস্যরা জনাথনকে তল্লাশি করতে চান। কিন্তু তিনি এপিবিএনের সদস্যদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা শুরু করেন। সেখানে তল্লাশি করতে না পেরে জনাথনকে বিমানবন্দর এপিবিএন কার্যালয়ে এনে তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিতে এক পর্যায়ে তার পরনে দুই জুতার শুকতলায় লুকানো ১৬টি করে মোট ৩২টি সোনার বার পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জনাথন জানায়, মামুন নামে তার এক সহকর্মীর এমিরেটসের উড়োজাহাজের ভেতরই সোনার এই চালান তার কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর জনাথন ওই উড়োজাহাজের টয়লেটে গিয়ে তার জুতোর শুকতলায় সুকৌশলে কালো স্কচটেপে মুড়িয়ে সোনার চালানটি সুকৌশলে লুকিয়ে রাখেন। পরে বোর্ড-ইন ব্রিজ থেকে বাইরে এসে এই চালান বিমানের ক্লিনিং ইনচার্জ আতিককে হস্তান্তর করার কথা ছিল তার। এতটুকু দূরত্বে সোনার চালানটি পৌঁছে দিলে তাকে দেয়া হতো ২০ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২০১৪ সাল থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এভাবে সোনা চোরাচালান করেছেন একাধিকবার। এ ব্যাপারে জনাথনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের চোরাচালানবিরোধী ধারায় মামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত বিমানের ক্লিনিং ইনচার্জ আতিকসহ অন্য ব্যক্তিদের ধরতে বিমানবন্দরে অভিযান চালানো হয়েছে। এটি টের পেয়ে তারা পালিয়ে গেছেন। আতিককে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
×