ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় পোড়াদহ মেলা

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বগুড়ায় পোড়াদহ মেলা

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ মধুবসন্তের আগের দিন ফাল্গুনের উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে এবার বগুড়ায় চারশ’ বছরের ঐতিহ্যের পোড়াদহের মেলা বসেছিল বুধবার। শীত তেমন ছিল না। বড় সাইজের অনেক বড় মাছের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বড় বড় মিষ্টি আসে মেলায়। ৭২ কেজি ওজনের একটি বাঘাআইড়ের দাম হাঁকা হয় এক লাখ টাকা। শেষ পর্যন্ত মাঝি বাঘাআইড় কেটে প্রতি কেজি ১৮শ’ টাকা দরে বিক্রি করে। দশ কেজি ওজনের এক মিষ্টির দাম হাঁকা হয় তিন হাজার টাকা। তবে এই মিষ্টি কেটে বিক্রি হয়নি। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় মাঘের শেষ বুধবার এই মেলা বসেছিল বগুড়া নগরী থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার পূর্বে পোড়াদহের গাড়িদহ নদীর পাড় ঘেঁষে অন্তত একশ’ বিঘার পাথারের মধ্যে। বসন্ত বরণের প্রাক্কালে তরুণ-তরুণী ও গ্রামের অনেক জুটি সাজুগুজু করে এসেছিল। মেলাকে ঘিরে পুরো এলাকা ছিল সাজ সাজ রবে। নিমন্ত্রিত নতুন ও পুরাতন জামাইদের কদর ছিল বেশি। মেলা একদিনের তবে আবহ থাকে কয়েকদিন। মেলার প্রাচীন পরিচিতি সন্ন্যাসের নামে। গাড়িদহ নদীর তীরে ছিল জোড়া বটবৃক্ষ। সেখানে দূর থেকে এসেছিলেন সন্ন্যাসীরা। তাদের অলৌকিকত্ব ছড়িয়ে পড়ে। সন্ন্যাসীরা জপে বসতেন মাঘের শেষ ভাগে। শেষ বুধবার মেলা বসত। বটতলায় সন্ন্যাসীদের আশ্রমের কারণে পরিচিতি পায় সন্ন্যাসের মেলা। অনেক পরে এলাকার নাম অনুসারে হয় পোড়াদহের মেলা। নদী তীরের এই মেলায় উঠত বেশি ওজনের বড় মাছ ও মিষ্টি। সেই ঐতিহ্য আজও বহমান। এবারও এসেছিল বড় বাঘাআইড়, রুই, কাতলা, শোল, বোয়াল, চিতল, গুজি, পাঙ্গাসসহ নানা জাতের মাছ। মাছ ধরা হয় যমুনা নদী থেকে। বড় মাছের আগমনে মেলাটি মাছের উৎসবেও পরিণত হয়। অনেক ময়রা মাছ আকৃতির মিষ্টি বানিয়ে মেলায় আনে। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসে কাঠের আসবাবপত্র। খাট, ড্রেসিং টেবিল, আলমারি, চেয়ার, সাধারণ টেবিল, চৌকি, জলচৌকি, টুল। মেলায় মসলার আলাদা পসরা বসে। অনেকে সস্তায় মসলা কিনে রাখে। মেলার আলোচিত বিযয় মেয়ে জামাইয়ের নাইওর আসা।
×