ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ও ভারতের ৫ ক্রিকেটারের শাস্তি

প্রকাশিত: ১২:০৯, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বাংলাদেশ ও ভারতের ৫ ক্রিকেটারের শাস্তি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে ৩ উইকেট হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতে ওঠেন বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ দলের ক্রিকেটাররা। উদযাপনে মত্ত হন তারা। এর এক পর্যায়ে ছিল দলগতভাবে মাঠ প্রদক্ষিণ করা। তখন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা দেখতে পান মাঠের সীমানা দড়ির ভেতরে অনেক বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। যেগুলো গ্যালারি থেকে ছুড়েছেন দর্শকরা। ভিক্টোরি ল্যাপ দেয়ার সময় এ পড়ে থাকা বোতলগুলো কুড়িয়ে সীমানার ওপারে ফেলে দেন যুবা টাইগাররা। কিন্তু এই সদাচরণ চোখে পড়েনি কারও। উল্টো ফাইনাল শেষে ভারতীয় যুব দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিতর্ক ও ধাক্কাধাক্কি করার কারণে আইসিসি বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দলের ৩ জন এবং রানার্সআপ ভারতীয় যুবাদের দুইজন ক্রিকেটারকে শাস্তি দিয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে বাংলাদেশের তৌহিদ হৃদয়কে ১০ ম্যাচ, শামীম হোসেনকে ৮ ম্যাচ, রকিবুল হাসানকে ৪ ম্যাচ এবং ভারতের আকাশ সিংকে ৬ ম্যাচ ও রবি বিষ্ণয়কে ৫ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধরা অনুর্ধ-১৯ দল কিংবা ‘এ’ দলের হয়ে ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রে শাস্তি ভোগ করবেন। বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দটাই অন্যরকম। আর প্রথমবার দেশের জন্য কোন বৈশ্বিক শিরোপা এনে দেয়ার গৌরবময় ইতিহাস গড়ার পর উচ্ছ্বাসের কোন সীমা-পরিসীমা থাকে না। আর সে জন্যই উৎসবে ফেটে পড়া বাংলাদেশী যুবাদের দেখে সহ্য হয়নি ফাইনালে হেরে যাওয়া ভারতীয় যুব ক্রিকেটারদের। তারা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে। ম্যাচটি চলার সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে উভয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে কড়া বাক্য বিনিময় হয়েছে। মূলত সেটি ঘটেছে ব্যাটসম্যান ও বোলারদের মধ্যেই। উত্তেজনাটা তখন থেকেই। ম্যাচশেষে তা নতুন করে উস্কে উঠেছিল। ম্যাচ শেষ হতেই পতাকা নিয়ে ড্রেসিং রুম থেকে আসা বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের হাত থেকে পতাকা ছিনিয়ে নেয়ার মতো গর্হিত ঘটনাও ঘটিয়েছেন ভারতের যুবারা। সেই বিষয়টি আইসিসি কোথাও নির্দিষ্ট করে বলেনি। আইসিসি ঘটনার তদন্ত করে জানিয়েছে, ফাইনাল ম্যাচ শেষে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক এবং ধাক্কাধাক্কি করে এসব খেলোয়াড়রা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। ফাইনালের ম্যাচ রেফারি গ্রায়েম ল্যাবরয় জানান, বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার ও ভারতের দুই খেলোয়াড় আইসিসির বিধিবিধানের ২.২১ ধারা ভঙ্গ করেছেন। তৌহিদ হৃদয়ের ডিমেরিট পয়েন্ট ৬। শামিমও ৬ ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছেন। কিন্তু হৃদয়কে ১০ ম্যাচ ও শামীমকে ৮ ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। রকিবুল হাসান নামের পাশে যোগ হয়েছে ৫ ডিমেরিট পয়েন্ট, ৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ তিনি। ভারতের আকাশের ডিমেরিট পয়েন্ট ৬ ও বিষ্ণয়ের ডিমেরিট পয়েন্ট ৭। কিন্তু তারা যথাক্রমে ৬ ও ৫ ম্যাচ করে নিষিদ্ধ হয়েছেন। এই ক্রিকেটাররা তাদের শাস্তি ভোগ করবেন অনুর্ধ-১৯ দল কিংবা ‘এ’ দলের হয়ে ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রে। এই শাস্তির বিষয়ে বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দলের নির্বাচক কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ দলের সাবেক ফাস্ট বোলার হাসিবুল হোসেন শান্ত বলেছেন, ‘পুরো ঘটনায় দায় ছিল ভারতের খেলোয়াড়দেরই। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেছে ভারতের ক্রিকেটাররা। ওরা পুরো ম্যাচজুড়েই প্রচুর স্লেজিং করেছে। আমরা জেতার পর তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। আমাদের ক্রিকেটাররা যখন উৎসব করতে শুরু করল, তখনই ওরা এসে মা-বাপ তুলে গালিগালাজ শুরু করে। কত আর সহ্য করা যায়। ছেলেরা সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করে।’
×