ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবাল নিউজিল্যান্ড

প্রকাশিত: ১২:০৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভারতকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবাল নিউজিল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আকাশে উড়তে থাকা ভারতকে মাটিতে নামিয়ে আনল নিউজিল্যান্ড। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বিরাট কোহলিদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করল কিউইরা। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে লজ্জা এড়ানোর শেষ ম্যাচে অঘোষিত মোড়লদের ৫ উইকেটে হারিয়েছে কেন উইলিয়ামসনের দল। ৭ উইকেটে ২৯৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছিল অতিথিরা, কিন্তু ব্ল্যাক-ক্যাপসদের পাওয়ার ব্যাটিংয়ের সামনে সেই চ্যালেঞ্জ আর চ্যালেঞ্জ থাকেনি। ২ ওভার ৫ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। ৮০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন ওপেনার হেনরি নিকোলস। ১৯৪.০০ গড়ে ১৯৪ রান করে সিরিজসেরা অভিজ্ঞ রস টেইলর। প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৪ উইকেট ও ২২ রানে হেরেছিল কোহলির দল। ১৯৮৮-১৯৮৯ মৌসুমের পর দীর্ঘ ৩১ বছরে এই প্রথম তিন বা তার বেশি ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত। ওয়েলিংটনে ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। নিউজিল্যান্ডে এবার ভারতের শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো। টি২০ ইতিহাসে পাঁচ ম্যাচের কোন সিরিজে প্রতিপক্ষকে ৫-০তে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়ে কোহলি-বাহিনী। যদিও দুটির ফয়সালা হয়েছিল সুপার ওভারে। ওয়ানডেতে সেই ধারা ধরে রাখতে পারেনি তারা। গত বছর বিশ্বকাপের সেমিফফাইনালে যে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল, পঞ্চাশ ওভারের দ্বৈরথে সেই তাদের কাছে হোয়াইটওয়াশ। ৩১ বছর পর কোন ওয়ানডে সিরিজে সব ম্যাচ হারল ভারত। ১৯৮৮-১৯৮৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ৫-০ ব্যবধানে হেরেছিল তারা। ২০০৬-২০০৭-এ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অবশ্য ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল তারা, সেবার একটি ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে। সেই ম্যাচে অবশ্য টসও সম্ভব হয়নি। এছাড়া ২০১৪ সালে এই নিউজিল্যান্ডে ৫ ম্যাচের সিরিজ হেরেছিল ৪-০ ব্যবধানে, অন্যটি হয়েছিল টাই। প্রায় তিন শ’ রান তাড়া করতে নেমে এদিন নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ১০৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে ১৭তম ওভারে। যুবেন্দ্র চাহালের স্পিনে বোল্ড হন ৪৬ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৬ রান করা মার্টিন গাপটিল। দলে ফেরা নিয়মিত অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে নিয়ে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার হেনরি নিকোলস। ৩০ রানের মধ্যে উইলিয়ামসন, রস টেইলর ও নিকোলসকে হারিয়ে চাপে পাড়ে যায় কিউরা। ১০৩ বলে ৯ চারে ৮০ রান করেন নিকোলস। উইলিয়ামসন-টেইলর পারেননি ইনিংস বড় করতে। একটি করে ছক্কা ও চারে ১৯ করে থামেন জিমি নিশাম। ২২০ রানে ৫ উইকেট হারানো কিউইরা আর কোন ক্ষতি ছাড়াই লক্ষ্যে পৌঁছায় টম লাথাম ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের দৃঢ়তায়। ডি গ্র্যান্ডহোম ২১ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। লাথামকে নিয়ে ৪৮ বলে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৮০ রানের জুটি। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়া অলরাউন্ডার ডি গ্র্যান্ডহোম ২৮ বলে ছয় চার ও তিন ছক্কায় করেন ৫৮ রান। ৩৪ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন লাথাম। ৪৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার লেগস্পিনার চাহাল। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ভারত। অভিষেক ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচেই ব্যর্থ মায়াঙ্ক আগারওয়াল। থিতু হওয়ার আগেই সবচেয়ে বড় হুমকি বিরাট কোহলিকে থামান হামিশ বেনেট। ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন জাগিয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন পৃথ্বী শ। এরপর টানা দুটি সেঞ্চুরি জুটিতে দলকে টানেন লোকেশ রাহুল। তার সঙ্গে ১০০ রানের জুটি গড়া শ্রেয়াস আইয়ার ৯ চারে করেন ৬২ বলে ৬৩ রান। কেদার যাদবের পরিবর্তে দলে ফেরা মানীষ পা-ে রাহুলের সঙ্গে উপহার দেন ১০৭ রানের জুটি। শেষদিকে বেনেটের দারুণ বোলিংয়ে তিন শ’ পেরোতে পারেনি ভারত। টানা দুই বলে রাহুল ও মানীষকে ফেরান বেনেট। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৮৮ রান করা রাহুল এবার তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। লংঅফে ক্যাচ দেয়া রাহুল ১১৩ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় করেন ১১২ রান। মানীষ ৪৮ বলে ৪২। ৬৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বেনেটই নিউজিল্যান্ডের সেরা বোলার। স্কোর ॥ ভারত- ২৯৬/৭ (৫০ ওভার; পৃথ্বী ৪০, মায়াঙ্ক ১, কোহলি ৯, শ্রেয়াস ৬২, রাহুল ১১২, মানীষ ৪২, জাদেজা ৮*, শার্দুল ৭, সাইনি ৮*; জেমিসন ১/৫৩, বেনেট ৪/৬৪)। নিউজিল্যান্ড- ৩০০/৫ (৪৭.১ ওভার; গাপটিল ৬৬, নিকোলস ৮০, উইলিয়ামসন ২২, টেইলর ১২, লাথাম ৩২*, নিশাম ১৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ৫৮*; চাহাল ৩/৪৭)। ফল ॥ নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ হেনরি নিকোলস (নিউজিল্যান্ড) সিরিজ ॥ তিন ম্যাচের ওয়ানডে নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী। সিরিজসেরা ॥ রস টেইলর (নিউজিল্যান্ড)।
×